মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র গাজা দখল করবে এবং ফিলিস্তিনিদের অন্যত্র পুনর্বাসন করে এই এলাকা পুনর্গঠনের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। তার দাবি, এই প্রকল্প গাজাকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরায়’ পরিণত করতে পারে।
রয়টার্সের খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (৫ ফেব্রুয়ারি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি এসব কথা বলেন।
এ সময় এক ঘোষণায় ট্রাম্প বলেন, তার প্রশাসন গাজার অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করবে। সেখানে অগণিত চাকরি ও আবাসন সুবিধা তৈরি করা হবে।
তিনি বলেন, ‘আমরা গাজা দখল করব এবং এর উন্নয়নে কাজ করব। এটি আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকবে।’ ধ্বংসপ্রাপ্ত ভবন পরিষ্কার করা এবং বিপজ্জনক অবিস্ফোরিত বোমা ও অন্যান্য অস্ত্র অপসারণের দায়িত্ব তার প্রশাসন নেবে।
এ ঘোষণার কয়েকদিন আগে ট্রাম্প গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের অন্য দেশে উচ্ছেদের কথা বলেছিলেন। তিনি বলেছেন, উপত্যকাটি থেকে ফিলিস্তিনিদের স্থায়ীভাবে প্রতেবেশি দেশগুলোতে পুনর্বাসন করা উচিত। সে সময় গাজাকে একটি ‘বিধ্বস্ত এলাকা’ বলে আখ্যায়িত করেন তিনি।
তবে গাজা শাসনকারী ফিলিস্তিনি সংগঠন হামাস এই পরিকল্পনার তীব্র নিন্দা জানিয়ে একে মধ্যপ্রাচ্যে বিশৃঙ্খলা ও উত্তেজনা সৃষ্টির রেসিপি বলে অভিহিত করেছে। এক বিবৃতিতে হামাস জানায়, গাজার জনগণ এই পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত হতে দেবে না।
হামাস বলছে, যা প্রয়োজন তা হলো আমাদের জনগণের বিরুদ্ধে দখল ও আগ্রাসন বন্ধ করা, তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ নয়। আমাদের জনগণ ১৫ মাসের বেশি সময় ধরে বোমাবর্ষণের মধ্যেও বাস্তুচ্যুতির পরিকল্পনা প্রতিহত করেছে।
এদিকে ট্রাম্পের গাজা দখলের ঘোষণার নিন্দা জানিয়েছে জাতিসংঘসহ আরব দেশগুলো। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক ও বর্তমান কর্মকর্তারাও এ নিয়ে জানিয়েছেন নিন্দা।
আল-জাজিরার খবরে বলা হয়েছে, ট্রাম্পের ঘোষণাকে ‘অসুস্থ রসিকতা’ আখ্যা দিয়ে ডেমোক্র্যাটিক সিনেটর ক্রিস মারফি বলেছেন, “আমরা গাজা দখল করছি না।”
মার্কিন কংগ্রেসওম্যান রাশিদা তালাইব তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেছেন, ‘এই রাষ্ট্রপতি প্রকাশ্যে একটি গণহত্যাকারী যুদ্ধাপরাধীর পাশে বসে জাতিগত নির্মূলের আহ্বান জানাচ্ছেন।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, গাজার জনসংখ্যা স্থানান্তর এবং ফিলিস্তিনি ছিটমহল গড়ে তোলার ট্রাম্পের পরিকল্পনা ‘জাতিগত নির্মূল’ এর নামান্তর।
তিনি বলেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনা চিরকালের জন্য একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রকে অসম্ভব করে তুলবে।