দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নীতি সম্পূর্ণ ভুল পথে অগ্রসর হয়েছে: সেমিনারে বিশেষজ্ঞরা
৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:০৭ | আপডেট: ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:০৭
ঢাকা: দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি নীতি সম্পূর্ণ ভুল পথে অগ্রসর হয়েছে।এর ফলে দেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং দেশের সার্বভৌমত্ব ক্ষুণ্ন হয়েছে- বলে মন্তব্য করেছেন জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা।
বুধবার (০৫ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ে আয়োজিত ‘কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র: অভিজ্ঞতা কি বলে’- শীর্ষক এক সেমিনারে তারা এমন মন্তব্য করেন।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপা’র সহ-সভাপতি, জাতিসংঘের উন্নয়ন ও গবেষণা বিভাগের সাবেক প্রধান ড. নজরুল ইসলাম। মূল প্রবন্ধের ওপর আলোচনায় অংশ নেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আনু মুহাম্মদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. বদরুল ইমাম, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. এমএম আকাশ, সিইজিআইএস এর পরিচালক মোহাম্মদ মোক্তারুজ্জামান প্রমুখ।
মূল প্রবন্ধে বলা হয়, দেশের জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সমস্যার স্থায়িত্বশীল সমাধান অর্জিত হয় নাই। দেশের পরিবেশ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে এবং আরও হবে। স্থানীয় জনগণ উচ্ছেদের সম্মুখীন হয়েছেন এবং সন্তোষজনক বিকল্প জীবন-জীবিকার উপায় পান নাই। এসব অভিজ্ঞতার আলোকে আগামীতে বাংলাদেশের জ্বালানী নীতিকে ঢেলে সাজাতে হবে। কয়লা থকে সরে আসতে হবে; নবায়নযোগ্য জ্বালানীর উপর গুরুত্ব দিতে হবে; দেশের ভেতর জাতীয় সক্ষমতার অধীনে তেল-গ্যাস অনুসন্ধান বাড়াতে হবে; সারা দেশজুড়ে বিস্তৃত মাঝারি আকারের সরকারি ও বেসরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দক্ষ সমাহারের মাধ্যমে স্থায়িত্বশীল জ্বালানী ও বিদুতের নিশ্চয়তা বিধান করতে হবে।
বিকল্প জ্বালানি-বিদ্যুৎ নীতির প্রস্তাবের বিষয়ে মূল প্রবন্ধে বলা হয়, অভ্যন্তরীণ তেল-গ্যাস অনুসন্ধান, উত্তোলন, ও ব্যবহারের উপর গুরুত্বারোপ এবং সে লক্ষ্যে জাতীয় সক্ষমতার পুনরুদ্ধার ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া; সকল ভবন ও স্থাপনার ছাদে সৌর প্যানেল স্থাপন বাধ্যতামূলক করা; দেশে সৌর প্যানেল নির্মাণের প্রতি উৎসাহ প্রদান; অতিরিক্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডের জন্য ন্যায্য মূল্যে ক্রয় দেশীয় এবং আমদানিকৃত গ্যাসের দামের সমন্বয় সাধন; সারাদেশে বিস্তৃত মাঝারি আকারের গ্যাস ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপন; ব্যক্তি খাতের কোম্পানিসমূহকে নিজস্ব প্রয়োজনে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি প্রদান; অতিরিক্ত বিদ্যুৎ জাতীয় গ্রিডের জন্য ন্যায্য বাজারমূল্যে ক্রয়; আমদানিকৃত বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীলতা হ্রাস; ব্যয়বহুল কুইক রেন্টালসমূহকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বহাল রাখা; অতিরিক্ত ক্যাপাসিটির সমস্যা জ্বালানি আমদানির ব্যায়ভারের ক্রমাগত বৃদ্ধি আমদানির অভাবে বিদ্যুৎ কেন্দ্রসমূহের ক্যাপাসিটি ব্যবহৃত না হওয়া অলস ক্যাপাসিটির দায়ভার বহন অতিরিক্ত ক্যাপাসিটি এবং ক্রমবর্ধমান আমদানির সহাবস্থান ইত্যাদি।
পরিবেশের দূষণ সর্ম্পকে মূল প্রবন্ধে বলা হয়েছে, স্পর্শকাতর পরিবেশসম্পন্ন এলাকাসমূহ ধ্বংসের মুখে। উচ্ছেদকৃত জনগণের প্রতি অবিচার সুন্দরবন ও আশপাশের পরিবেশের উপর রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্রেহ যেতিবাচক অভিঘাত সম্পর্কে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হারুন আগেই সতর্ক করেছিলেন।
সারাবাংলা/এএইচএইচ/আরএস
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) বিদ্যুৎ ও জ্বালানি