ঢাকা: চীনা অর্থায়নে মোংলা বন্দর সম্প্রসারণের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য ‘মোংলা বন্দরের সুবিধাদি সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন’ শীর্ষক একটি প্রকল্পটি হাতে নিতে যাচ্ছে নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়। এটি বাস্তবায়নে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৪ হাজার ৬৮ কোটি ২২ লাখ ৭২ হাজার টাকা। এরমধ্যে সরকারি তহবিল থেকে ৪৭৫ কোটি ৩২ লাখ ৯৭ হাজার টাকা এবং চীনের ঋণ সহায়তা থেকে ৩ হাজার ৫৯২ কোটি ৮৯ লাখ ৭৫ হাজার টাকা ব্যয় করা হবে। চলতি বছর থেকে শুরু করে ২০২৮ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন
করবে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ।
সম্প্রতি অনুষ্ঠিত জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রকল্পটির বিষয়ে একনেক সভা শেষে পরিকল্পনা উপদেষ্টা ড.ওয়াহিদ উদ্দিন মাহমুদ বলেন, “মোংলা বন্দরটি অবস্থানগত কারণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি সম্প্রসারণ করা হলে শুধু বাংলাদেশই নয়, প্রতিবেশী দেশ ভারতের অনেক অঙ্গরাজ্য এবং নেপাল ও ভুটানও ব্যবহার করতে পারবে। চীনের ঋণে এটি বাস্তবায়ন করা হবে। খুব বেশি পরিমাণে ঋণ না হলেও প্রকল্পটি বাস্তবায়নে এই ঋণ ব্যাপক সহায়তা করবে।”
প্রকল্প প্রস্তাবে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ও প্রতিবেশী দেশগুলো যেমন-ভারত, ভুটান, নেপাল ও চীনের সঙ্গে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্প্রসারণে মোংলা বন্দর একটি কৌশলগত অবস্থানে রয়েছে। এটি জল ও স্থলভাগের সাথে পণ্য পরিবহনের মাধ্যমে বিশ্ববাণিজ্য ও অর্থনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
প্রস্তাবে বলা হয়, বর্তমানে মোংলা বন্দরে ৪৭টি জাহাজ একসঙ্গে নোঙ্গর করতে পারে। কিন্তু কোন কন্টেইনার জেটি নাই। মোংলা বন্দরে বর্তমানে বার্ষিক ১ কোটি ৫০ লক্ষ মেট্রিক টন কার্গো এবং ১ লাখ টিইইউজ কন্টেইনার হ্যান্ডলিংয়ের সক্ষমতা রয়েছে। নিরাপদ এবং দ্রুত পণ্য পরিবহণ বিবেচনায় এবং অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যবসা-বাণিজ্যে উৎপাদনকারী হতে ভোক্তা পর্যন্ত বিভিন্ন পণ্য পরিবহণের মাধ্যম হিসেবে কন্টেইনারাইজেশন ব্যাপকভাবে সমাদৃত হচ্ছে। কন্টেইনার জাহাজের জন্য ডেডিকেটেড কন্টেইনার বার্থ, স্টাফিং-আনস্টাফিং এবং যথাযথভাবে সংরক্ষণ করার জন্য কন্টেইনার ইয়ার্ড, আধুনিক কন্টেইনার হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। এসব বিবেচনায় মোংলা সমুদ্রবন্দর আধুনিকায়নের বিশেষ প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। মোংলা বন্দর বাংলাদেশের উত্তর ও দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের পাশাপাশি ভারত, নেপাল, ভুটান ও চীনের সীমান্ত এলাকাগুলির কার্গো হ্যান্ডলিং এর জন্য সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে। মোংলা বন্দর দিয়ে এসব দেশে ট্রানজিট কার্গো হ্যান্ডল করার সম্ভাবনা বিদ্যমান রয়েছে।
এছাড়া খুলনা-মোংলা রেলপথ স্থাপনের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। রেললাইনং স্থাপনের কাজ শেষ হলে মোংলা বন্দরের মাধ্যমে কার্গো হ্যান্ডলিং অনেকাংশে বাড়বে। এ জন্য প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়েছে।