পর্দানশীন নারীদের সমাবেশ: ধর্মীয় স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করার অভিযোগ
৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:১২
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চেহারা ও ছবির বদলে আঙুলের ছাপ দিয়ে পরিচয় যাচাইয়ের দাবিতে চট্টগ্রামে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন পর্দানশীন নারীরা। তারা বলেছেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমের দেশ বাংলাদেশে একজন মুসলিম হওয়ার পরও তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে ‘চট্টগ্রাম পর্দানশীন নারী অধিকার পরিষদ’ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে এ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।
সমাবেশ থেকে তিন দফা দাবি তুলে ধরা হয়। এগুলো হচ্ছে- গত ১৬ বছর ধরে নির্বাচন কমিশনের যেসব কর্মকর্তা ছবি না তোলায় পর্দানশীন নারীদের নাগরিকত্ব আটকে রেখে মানবাধিকার বঞ্চিত করেছেন, তাদের বিচারের আওতায় আনা, পর্দানশীন নারীদের ধর্মীয় ও প্রাইভেসির অধিকার অক্ষুন্ন রেখে অবিলম্বে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও শিক্ষার অধিকার দেওয়া ও সকল ক্ষেত্রে পরিচয় শনাক্তে চেহারা-ছবি মেলানোর ‘সেকেলে’ পদ্ধতি বাতিল করে আধুনিক ফিঙ্গারপ্রিন্ট যাচাই পদ্ধতি বাধ্যতামূলক করা এবং পর্দানশীন নারীদের ফিঙ্গারপ্রিন্ট নেওয়ার সময় পুরুষের পরিবর্তে নারী সহকারী রাখা বাধ্যতামূলক করা।
‘চট্টগ্রাম পর্দানশীন নারী অধিকার পরিষদ’র সংগঠক আহমদ ইউশা জাহান সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা সরকার প্রধানের কাছে দাবি জানাচ্ছি, তিনি যেন আমাদের দাবিগুলোর প্রতি সুদৃষ্টি দেন। কারণ, তিনি একজন মুসলিম, আমরাও মুসলিম। আমাদের সংবিধানে আছে, সকল ধর্মের মানুষ তার নিজ নিজ ধর্মীয় স্বাধীনতা ভোগ করবেন। তাহলে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমের দেশে একজন মুসলমান হয়েও আমরা কেন আমাদের ধর্মীয় অধিকার ভোগ করতে পারছি না ? ফিঙ্গারপ্রিন্টের যে দাবি আমরা দিয়েছি, আশা করি সরকার প্রধান অচিরেই আমাদের এ সুযোগ সৃষ্টি করে দেবেন।’
সমাবেশে পর্দানশীন নারীরা বলেন, ‘একজন নারী ছবি তুললে দুটি গুণাহ হয়- একটি ছবি তোলার গুণাহ, অন্যটি বেপর্দা হওয়ার গুণাহ। আবার ওই ছবিটি পরবর্তীতে যতজন বেগানা পুরুষ দেখবে, বেপর্দা হওয়ার গুণাহ ততই বাড়তেই থাকবে। এমনকি মৃত্যুর পরও ওই ছবির কারণে বেপর্দার গুণাহ জারি থাকবে। পর্দানশীন নারীরা সেই গুণাহ থেকে বাঁচতে চান।’
‘কিন্তু বর্তমানে রাষ্ট্রে পর্দানশীন নারীদের গুণাহ করতে বাধ্য করছে, যা তার ধর্মীয় বা দ্বীনি অধিকারের লঙ্ঘন। আবার একজন পর্দানশীন নারী যদি তার চেহারা কাউকে দেখাতে না চান, সেটা তার গোপনীয়তা বা প্রাইভেসির রক্ষার অধিকার। ফলে জোর করে চেহারা দেখাতে বাধ্য করা তার গোপনীয়তা বা প্রাইভেসির অধিকার লঙ্ঘন। পর্দানশীন নারীদের এ দাবী মানবাধিকার ও সাংবিধানিক অধিকারের অন্তর্ভূক্ত।’
তারা আরও বলেন, ‘শুধুমাত্র পরিপূর্ণ পর্দা করার কারণে পর্দানশীন নারীরা বৈষম্যের শিকার। গত ১৬ বছর যাবত অসংখ্য পর্দানশীন নারীর নাগরিকত্ব আটকে রাখা হয়েছে। শিক্ষাক্ষেত্রেও করা হচ্ছে বঞ্চিত। পরিচয় যাচাইয়ে জোর করে বেগানা পুরুষের সামনে চেহারা খুলতে বাধ্য করা হচ্ছে। পর্দনাশীন নারীরা এসব হেনস্থার অবসান চান।’
সারাবাংলা/আরডি/এসআর