স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন অ্যান্ড প্ল্যাস্টিক সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসকরা দিচ্ছেন মুক্তামনির বাড়ি ফেরার খরচ। তাদের দেওয়া অর্থে এরই মধ্যে মুক্তামনির ঘরে ফেরার জন্য একটি অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করা হয়েছে। এছাড়াও মুক্তামনির পরিবারের হাতে থাকবে পথ খরচের টাকা। সব মিলিয়ে ১০ হাজার টাকা দিয়েছেন তারা।
২২ ডিসেম্বর শুক্রবার সকালে বাড়ি যাবে মুক্তামনি। ঢামেক বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসকরা তাকে বাড়ি ফেরার ছাড়পত্র দিয়েছেন। তার হাতে তুলে দিয়েছে হলুদ রঙের ছাড়পত্রের কার্ড আর তাতেই হাসি ছড়িয়ে পড়েছে মুক্তামনির মুখে।
বাড়ি যাবার খবর শুনে সবসময়ে মতো তাইতো আজও মুক্তামনি বলে ওঠে, ‘বাড়ির জন্য মন পুড়ে’।
১৬৪ দিন হাসপাতালে কাটানোর পর বাড়ি যাচ্ছে এই মিষ্টি মেয়েটি।
চলতি বছরে ১১ জুলাই হাসপাতালে আনা হয় মুক্তামনিকে। ২২ ডিসেম্বর ভোরবেলায় বাড়ির উদ্দেশে রওনা হবে মুক্তামনি। বাবা ইব্রাহিম হোসেন, মা আসমা খাতুন ও দেড় বছর বয়সী ছোট ভাই আলআমিনও থাকবে তার সাথে।
আর মুক্তামনির বাড়ি যাওয়া যেন নির্বিঘ্নে হয় সেজন্য আবার এগিয়ে এসেছেন বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইউনিটের চিকিৎসকরা।
এতো সকালে কীভাবে যাবেন জানতে চাইলে ইব্রাহিম হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকরা সবাই টাকা দিয়েছে আমাদের যাবার জন্য অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করে দিয়েছে।
আমাদের কাছে বাড়ি যাবার টাকা নেই চিকিৎসকেররা সবাই মিলে টাকা দিয়ে বলেছে, অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে। তাতে মুক্তামনির পথে কোনও অসুবিধা হবে না, বলেছেন মুক্তামনির বাবা ইব্রাহিম।
বিকেলে বার্ন ইউনিটের বর্তমান পরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালামের কক্ষে ইউনিটের সমন্বয়ক ডা. সামন্ত লাল সেন মুক্তামনির বাবার হাতে ১০ হাজার টাকা তুলে দেন বলে জানান ইব্রাহিম হোসেন।
ইব্রাহিম হোসেন বলেন, বাড়ি যাবার খবর শুনে মনে আনন্দ হলেও চিন্তা ছিল এ মেয়েকে নিয়ে কী করে এতো দূরের পথ পাড়ি দেব। একেতো এ মেয়েকে নিয়ে বাসে যাওয়া যাবে না, তারওপর টাকার একটা বিষয়তো আছেই। কিন্তু মনের কথা মনেই ছিল-কাউকে বলতে পারছিলাম না। ভেবেছিলাম, কিছু সময় পর বাড়িতে ফোন দেব। কিন্তু এর মধ্যেই কালাম স্যারের রুমে সেন স্যার আমার হাতে টাকা তুলে দেন। বলেন, অ্যাম্বুলেন্স ভাড়া করতে।
এই চিকিৎসকরা আমাদের জন্য কীযে করেছেন সেটা নিজের চোখে দেখেছি, আমার মেয়ের জন্য তারা এতোদিন সংগ্রাম করেছেন। আজ বাড়ি যাবার সময়েও তারাই এগিয়ে এলেন। আমার আম্মুজানের (মুক্তামনি) সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া না হওয়া আল্লাহর হাতে। কিন্তু এই চিকিৎসকরা আমার মেয়ের জন্য যা করলেন তাতে আমি তাঁদের কাছে চির কৃতজ্ঞ হয়ে রইলাম, ধরা গলায় বলেন ইব্রাহিম হোসেন।
সারাবাংলা/জেএ/এমএম