কঙ্গোতে ১৬৭ নারীবন্দিকে ধর্ষণের পর পুড়িয়ে হত্যা
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:৪৮
মধ্য আফ্রিকার দেশ কঙ্গোর উত্তর কিভু প্রদেশের রাজধানী গোমার একটি কারাগারে ১৬৫ থেকে ১৬৭ জন নারী কারাবন্দিকে ধর্ষণের পর তাদের গায়ে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে পুরুষ কয়েদিরা। দগ্ধ নারী কারাবন্দিদের অধিকাংশই ইতোমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন।
গত ৩ ফেব্রুয়ারি শহরের মুনজেনজে কারাগারে এ ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। জাতিসংঘের এক অভ্যন্তরীণ প্রতিবেদনে উঠে এসেছে এসব তথ্য।
ঘটনার দিনই গোমা দখল করে সরকারবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠী এম ২৩। গোমার পতন হওয়ার পর মুনজেনজে কারাগার ভেঙে পালানো শুরু করেন কয়েদিরা। তবে এই কয়েদিদের একাংশ কারাগারের নারী সেলের দিকে গিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে নারী কারাবন্দিদের ওপর।
গোমা শহর দখলের পর কঙ্গোর সেনাবাহিনীর সঙ্গে বিদ্রোহীদের ব্যাপক সংঘর্ষে বিগত কয়েক দিনের দেশটির প্রায় ৩ হাজার মানুষ নিহত হয়েছেন।
এদিকে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া বিভিন্ন ফুটেজে দেখা গেছে, গোমার বিভিন্ন সড়কে লাশ পড়ে রয়েছে। সেই সঙ্গে ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ এবং বিভিন্ন বাড়িঘরে আগুন জ্বলতেও দেখা গেছে।
উল্লেখ্য, গোমা কঙ্গোর অন্যতম বৃহৎ ও গুরুত্বপূর্ণ শহর। এক ঝটিকা অভিযানে গত ৩ ফেব্রুয়ারি ১০ লাখেরও বেশি মানুষ অধ্যুষিত এই শহরটি দখল করে এম ২৩ বিদ্রোহী গোষ্ঠীর যোদ্ধারা। তারপর থেকেই চরম বিশৃঙ্খলা শুরু হয়েছে গোমায়। সেনাবাহিনী এবং বিদ্রোহী যোদ্ধাদের মধ্যে প্রায় বিরতিহীনভাবে গোলাগুলি চলছে এবং তার শিকার মূলত হচ্ছেন সাধারণ বেসামরিক মানুষ।
এদিকে, বহু লাশ উদ্ধারের পর সশস্ত্র বিদ্রোহী জোট অ্যালায়েন্স ফ্লুভ কঙ্গোর (এএফসি) শাখা ‘এম২৩’ মঙ্গলবার থেকে যুদ্ধবিরতির ঘোষণা করেছে। তবে জাতিসংঘ বুধবার জানিয়েছে, সরকার এই যুদ্ধবিরতিকে ‘বিভ্রান্ত তথ্য’ হিসাবে বর্ণনা করেছে। এখনো দক্ষিণ কিভু প্রদেশে সংঘর্ষ চলছে। বিশেষ করে ভূমি ও খনিজ সম্পদের মালিকানা নিয়ে দেশটিতে কয়েক দশক ধরে জাতিগত উত্তেজনা বিরাজ করছে। সেই সহিংসতায় প্রাণও হারিয়েছেন হাজার হাজার নিরীহ মানুষ। এটিকে বিশ্বের বৃহত্তম মানবিক সংকটগুলোর মধ্যে একটি বলে মনে করা হয়।
অপরদিকে, সংঘাত পরবর্তী সময়ে বিদ্রোহীরা গোমা শহরে একটি নতুন প্রশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করছে বলে জানা গেছে। তারা দক্ষিণ কিভু ও কিনশাসা অঞ্চলের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।
সারাবাংলা/এসডব্লিউ