যুদ্ধ শেষে যুক্তরাষ্ট্রকে গাজার নিয়ন্ত্রণ দেবে ইসরায়েল: ট্রাম্প
৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:২২
যুদ্ধের সমাপ্তির পর গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ ইসরায়েল যুক্তরাষ্ট্রের কাছে হস্তান্তর করবে বলে সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশালে মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) ট্রাম্পের করা এ মন্তব্যে তার প্রশাসনের কর্মকর্তারা এর আগে বিপরীত মন্তব্য করেছিলেন।
ট্রাম্পের এই প্রস্তাবে ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তরের ইঙ্গিত থাকলেও তিনি বলেছেন, এতে কোনো মার্কিন সেনা প্রয়োজন হবে না। তবে তার পরিকল্পনাকে জাতিসংঘ, মানবাধিকার সংস্থাগুলো এবং আরব নেতারা জাতিগত নিধনের প্রচেষ্টা বলে নিন্দা জানিয়েছেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, বাস্তবে এই পরিকল্পনা কখনোই কার্যকর হবে না।
ট্রাম্প প্রথম এই মন্তব্য করার পর তার কর্মকর্তারা বলেছিলেন, কোনো স্থানান্তর হলে তা হবে সাময়িক। তার পরিকল্পনা অনুযায়ী, গাজার বাসিন্দারা নতুন, আধুনিক ও নিরাপদ এলাকায় পুনর্বাসিত হবেন এবং যুক্তরাষ্ট্র সেখানে পুনর্গঠনের উদ্যোগ নেবে। তবে তিনি স্পষ্ট করেননি যে, ফিলিস্তিনিরা গাজায় ফিরে আসতে পারবেন কি না।
আন্তর্জাতিক আইনে, দখলকৃত এলাকা থেকে জোরপূর্বক জনগোষ্ঠী স্থানান্তর কঠোরভাবে নিষিদ্ধ। তবে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র ক্যারোলিন লেভিট বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) বলেছেন, যে কোনো স্থানান্তরই হবে সাময়িক। মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী রুবিওও বলেছেন, গাজার ধ্বংসস্তূপ পরিষ্কার এবং পুনর্গঠনের সময়ের জন্য গাজার বাসিন্দারা সাময়িকভাবে সরে যাবেন।
ট্রাম্প মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) প্রথম বলেন, গাজাকে মধ্যপ্রাচ্যের রিভেরা বানানো হবে এবং ফিলিস্তিনিদের স্থানান্তর স্থায়ী হবে। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে এক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র গাজা উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ নেবে এবং আমরা এখানে কাজ করব।’
তবে নিউইয়র্ক টাইমস জানায়, ট্রাম্প প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও এই ঘোষণায় বিস্মিত হয়েছেন, কারণ এটি নিয়ে কোনো পরিকল্পনা ছিল না।
গাজায় বর্তমান পরিস্থিতি প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেছেন, তিনি শান্তি ও ঐক্যের দূত হিসেবে পরিচিত হতে চান। কিন্তু ১৫ মাসের সংঘাত গাজাকে প্রায় বসবাসের অনুপযোগী করে ফেলেছে।
জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক সংস্থা (ইউএনইপি) বলেছে, গাজার ধ্বংসস্তূপ সরাতে ২১ বছর সময় লাগতে পারে। সেখানে পানি ও পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা প্রায় সম্পূর্ণভাবে ধ্বংস হয়ে গেছে।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলি হামলায় ৪৭ হাজার ৫৫০ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ১১ হাজার ৬০০ জন আহত হয়েছেন।
সারাবাংলা/এনজে