‘বিপ্লবের ৬ পর আমাদের রাস্তায় দাঁড়াতে হচ্ছে, এটা লজ্জার’
৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:৪৪ | আপডেট: ৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২১:১৫
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন’। ছবি: সারাবাংলা।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: গাজীপুরে ছাত্র-জনতার ওপর সন্ত্রাসী হামলা এবং আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে চট্টগ্রামে বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলন’। এসময় সংগঠকরা বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা ছাত্র-জনতার ওপর সারাদেশে হামলা চালাচ্ছে, গুপ্তহত্যা করছে। বিপ্লবের ছয়মাস পর আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বিচারের দাবিতে আমাদের রাস্তায় দাঁড়াতে হচ্ছে, এটা লজ্জার।’
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। এতে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী অংশ নেন।
এসময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘এ সরকার বারবার ব্যর্থ হচ্ছে। ছয়মাস হয়ে গেল, এখনও পর্যন্ত খুনিদের বিচার করতে পারেনি। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি খুবই বাজে। পুলিশ প্রশাসন বারবার ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। তাই আমরা আজ এই বীর চট্টলার জমিন থেকে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছি।’
সংগঠনটির চট্টগ্রামের সমন্বয়ক জোবায়েরুল আলম মানিক বলেন, ‘আমরা খুনি আওয়ামী লীগ ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে যেসব পদক্ষেপ নেওয়ার কথা, সে ধরনের কোনো পদক্ষেপ দেখতে পাচ্ছি না। আমরা চিহ্নিত খুনিদের বিরুদ্ধে যে ধরনের পদক্ষেপ নেওয়ার কথা, সেই পদক্ষেপ দ্রুত দেখতে চাই।’
বিক্ষোভ সমাবেশে চট্টগ্রামের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে আসা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের সংগঠকরা আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ না করায় সরকারের প্রতি ক্ষোভ জানান।
সমাবেশে সংগঠনটির চট্টগ্রামের সমন্বয়ক আব্দুর রহমান বলেন, ‘বিপ্লবের ছয়মাস পরে স্বৈরাচারের বিচারের জন্য আমাদের রাস্তায় দাঁড়াতে হয়, এটা আমাদের জন্য লজ্জার। বিপ্লবের ছয়মাস পরে আওয়ামী লীগের গুণ্ডারা আমাদের ওপর হামলা করে, ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট কি করছে ? দুই হাজার ছাত্র-জনতার লাশের ওপর যে ইন্টেরিম গভর্নমেন্ট গঠিত হয়েছে, এখনও পর্যন্ত তারা খুনের বিচার করতে পারেনি। আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করা হচ্ছে। যদি পুনর্বাসন না করে, তাহলে সাভারে-হাতিয়ায় তারা কীভাবে আমাদের ওপর সন্ত্রাসী আক্রমণের সাহস পায়। ছাত্র-জনতা মাঠে থাকবে, কোনোভাবেই আওয়ামী লীগকে পুনর্বাসন করতে দেওয়া হবে না।’
চট্টগ্রাম সরকারি কলেজ শাখার সমন্বয়ক তানভীর শরীফ বলেন, ‘বিপ্লবের ছয়মাস পর আমাদের আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে রাস্তায় দাঁড়াতে হচ্ছে, এটা আমাদের জন্য লজ্জার নয়, এটা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য লজ্জার। আওয়ামী লীগ গুপ্তহত্যা চালাচ্ছে। বিএনপি-জামায়াতকে বলব- বিএনপির সিনিয়র নেতা সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে তারা বাঁচাতে পারেনি, জামায়াতের সিনিয়র নেতাদের জামায়াত বাঁচাতে পারেনি, সুতরাং আমাদের চিন্তা তাদের করতে হবে না। বিপ্লবে যেভাবে আমরা রাজপথে ছিলাম, জীবনের বিনিময়ে হলেও আমরা এখনও রাজপথে থাকবো। আমরা ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করবো। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে বলতে চাই, আপনারা অবিলম্বে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করুন।’
সংগঠক সাদিয়া আফরিন সরকারের উদ্দেশে বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার ব্যবস্থা করুন। সরকার যতক্ষণ পর্যন্ত হাসিনাকে দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি না করবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকবো।’
সারাবাংলা/আরডি/এসআর
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবি চট্টগ্রাম বিক্ষোভ সমাবেশ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন