খুলনায় ১৩৪ জরাজীর্ণ ভবনে চলছে পাঠদান, ঝুঁকিতে শিক্ষক-শিক্ষার্থী
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:০০ | আপডেট: ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৩:১৮
খুলনা: খুলনার ১৩৪টি জরাজীর্ণ ভবনে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান চলছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের। এসব বিদ্যালয়ের হাজার-হাজার শিক্ষার্থী ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন ক্লাস করছে। দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকলেও কোমলমতি শিশুরা বাধ্য হয়ে বিদ্যালয়ে আসতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে চরম উদ্বেগে রয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা।
বিদ্যালয় ভবনের দরজা-জানালা ভেঙে গেছে, ওয়ালগুলো ধসে পড়ছে। খসে পড়ছে পলেস্তারা। বেরিয়ে গেছে ভেতরের রড। বর্ষায় বৃষ্টির পানিতে শ্রেণিকক্ষ ভিজে যায়। এসময় স্যাঁতসেঁতে হয়ে যায় আশপাশের পরিবেশ। ওইসব বিদ্যালয় ভবন পাঠদান অনুপযোগী হওয়ার পরেও ঝুঁকি নিয়ে চলছে শ্রেণি কার্যক্রম। বিকল্প ভবন না থাকায় বাধ্য হয়েই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে পাঠদান অব্যাহত রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, খুলনা জেলার নয়টি উপজেলায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১ হাজার ৩৩টি। এর মধ্যে ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ ভবন রয়েছে কয়রা উপজেলায় ৩৪টি, রূপসায় ২০টি, বটিয়াঘাটায় ২০টি, দিঘলিয়ায় ২টি, তেরখাদায় ২৬টি ও পাইকগাছায় ৩২টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া দাকোপ, ডুমুরিয়া, ফুলতলা উপজেলাতেও জরাজীর্ণ ভবন রয়েছে।
সরেজমিন রূপসা উপজেলার ঘাটভোগ ইউনিয়নের পিঠাভোগ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে, বিদ্যালয়টিতে দুটি ভবন রয়েছে। একটির অবস্থা ভাল থাকলেও অপরটির খুবই খারাপ। ভবনটির বেশিরভাগ স্থানে ফাটল দেখা দিয়েছে।
পিঠাভোগ সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মানষ কুমার দত্ত সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের পুরাতন ভবনটি অত্যান্ত জরাজীর্ণ। ভবনটির পিলারগুলোও অনেকটা ধসে পড়েছে। যেকারণে ঝুঁকিতে রয়েছে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থী রাবেয়া খাতুন বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয় ভবনের বিভিন্ন জায়গায় ফাটল ধরায় আমরা আতঙ্কে থাকি। এতে আমরা ক্লাসে ভালোভাবে মনোযোগ দিতে পারি না।’
কয়রা উপজেলার মদিনাবাদ মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক অভিভাবক হুমাইরা বেগম সারাবাংলাকে বলেন, ‘বিদ্যালয়টির খুবই জরাজীর্ণ অবস্থা। কাছাকাছি ভালো কোনো স্কুল না থাকায় পড়ালেখা করতে সেখানে পাঠাতে বাধ্য হচ্ছি। সন্তানকে স্কুলে পাঠিয়ে ভয়ে থাকতে হয়।’
রূপসা উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আমিনুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঝুঁকিপূর্ণ ও জরাজীর্ণ এমন বিদ্যালয় ভবনের তালিকা করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।’
খুলনা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শেখ অহিদুল আলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা আমাদের স্কুল ভবনের চাহিদার কথা সংশ্লিষ্ট দফতরকে জানিয়েছি। আশা করছি এ ব্যাপারে দ্রুতই পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’
সারাবাংলা/এসআর
খুলনা জরাজীর্ণ ভবন ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান দুর্ঘটনার আশঙ্কা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের