Friday 06 Jun 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ভিড় নেই দর্শনার্থী-ক্রেতার

আহমেদ জামান শিমুল
৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০২:৩৬ | আপডেট: ৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:১১

অমর একুশে বইমেলা ২০২৫, বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গন। ছবি: সুমিত আহমেদ

আস্তে আস্তে জমতে শুরু করেছে ‘অমর একুশে বইমেলা-২০২৫’। শুক্রবার ও শনিবার দুদিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় দর্শনার্থীদের ভিড় যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে ক্রেতা-পাঠকের ভিড়। তবে শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) পর্যন্ত মেলার দুই অংশ—সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ঘুরে দেখা গেছে, দর্শনার্থী-ক্রেতা তার নব্বই শতাংশের বেশি সোহরাওয়ার্দী প্রাঙ্গনে। অর্থাৎ বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণ দর্শনার্থী-ক্রেতার খরায় ভুগছে।

মেলার আয়োজক বাংলা একাডেমির দেওয়া তথ্যানুযায়ী, এবারের বইমেলায় মোট ৭০৮টি প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানের জন্য । এর মধ্যে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ৯৯টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৬০৯টি। মোট প্যাভিলিয়ন ৩৭টি। এর মধ্যে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ১টি এবং সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ৩৬টি। লিটল ম্যাগাজিন চত্বর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উন্মুক্ত মঞ্চের কাছাকাছি গাছতলায়। সেখানে প্রায় ১৩০টি লিটলম্যাগকে স্টল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। এবারের মেলায় শিশুচত্বরে মোট ৭৪টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

বইমেলা ২০২৫ এ বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের কয়েকটি স্টল। ছবি: সারাবাংলা

বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনের ৯৯টি স্টলের অধিকাংশই সরকারি-বেসকারি বিভিন্ন সংস্থার স্টল। এর মধ্যে রয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি, বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ, স্পর্শ ফাউন্ডেশন, জিয়া স্মৃতি পাঠাগার, সার্ক আগ্রিকালচার সেন্টার, বৈষমবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র, বইটই, সোর্স, খবরের কাগজ, জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ, সমবায় অধিদফতর, বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ, চলচ্চিত্র ও প্রকাশনা অধিদফতর প্রভৃতি।

বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’র স্টল। ছবি: সুমিত আহমেদ

সরেজমিনে দেখা গিয়েছে, মেলার প্রবেশ পথের একটি ব্যতীত বাকি সব কয়টি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশ দিয়ে। বিশেষ করে মেট্রোরেল স্টেশনের অবস্থানগত কারণে গতবারের মেলার বাহির পথ এবার কিছুটা সরিয়ে মন্দির গেটের কাছাকাছি নেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া টিএসসি, দোয়েল চত্বর, এমআরটি বেসিং প্ল্যান্ট এবং ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন অংশে মোট চারটি প্রবেশ ও বাহির পথ আছে। এটি বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে দর্শনার্থী কম হওয়ার অন্যতম কারণ।

এছাড়া বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানের স্টল রয়েছে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণে। সে সব স্টলে ওই মতাদর্শের ক্রেতা ছাড়া সাধারণত কেউ যাচ্ছেন না।

উত্তরা থেকে মেলায় আসা ফরহাদ বলেন, ‘বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গনে আমরা খুব একটা ঢুকি না সাধারনত। কারণ, ছোট বড় সকল প্রকাশনা সংস্থার স্টল সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের পাশে। তাহলে কেন আমি কষ্ট করে এ পাশে ঢুকবো?’

তার পাশে থাকা আরেক দর্শনার্থী বলেন, ‘এ পাশের ৫-৬টা স্টল ছাড়া বাকি সবগুলোতে বই কিনতে গেলে বলে, শুধু প্রদর্শনীর জন্য রাখা হয়েছে। তাহলে আমরা এখান থেকে যদি প্রয়োজনীয় বইটা না পাই তাহলে কিনবটা কী?

বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভের স্টল প্রতিনিধি সারাবাংলাকে বলেন, আমরা যে টাকা দিয়ে স্টল করেছি, সে টাকাও বই বিক্রি থেকে উঠবে কিনা সন্দেহ। আমাদের স্টলটি এখানে না হয়ে সোহরাওয়ার্দী প্রাঙ্গনে হলে অনেক বেশি ক্রেতা পেতাম আমরা। কারণ চলচ্চিত্র বিষয়ক বইয়ের অধিকাংশ পাঠক খুঁজেই পায় না আমাদের স্টল।

তবে বাংলা একাডেমি প্রাঙ্গণের বেশ কিছু স্টল প্রতিনিধি বললেন ভিন্ন কথা। সোর্স নামক একটি স্টলে বিক্রি হচ্ছিল কমিকসের বই। তারা মূলত জাপানিজ একটি প্রতিষ্ঠান। বাংলায় থ্রিলার কমিকস বের করেন তারা। প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয় প্রতিনিধি সামিয়া সেতু বলেন, আমাদের একটি বড় ফেসবুক কমিউনিটি আছে। যারা মূলত আমাদের পাঠক। তারা জানে আমাদের স্টলটি কোথায়। তাই আমাদের বিক্রি বলতে পারেন একদমই খারাপ না।

বইটই একটি ই-বুক ও অডিও বুক অ্যাপ। স্টলটির প্রতিনিধি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের এখানে স্টল নেওয়ার মূল উদ্দেশ্য অ্যাপটির প্রচারণা। প্রচুর মানুষ আমাদের ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে। মেলা উপলক্ষে আমরা তাদের ছাড়ে সাবস্ক্রিপশন অফার করছি। অনেকে জেনে যাচ্ছে, পরে সাবস্ক্রাইব করবে বলছে।’

দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের জন্য ‘ব্রেইল’ পদ্ধতিতে বই নিয়ে এসেছে ‘স্পর্শ ফাউন্ডেশন’। ছবি: সারাবাংলা

দৃষ্টি প্রতিবন্ধীদের নিয়ে ব্রেইল বই প্রকাশ করে স্পর্শ ফাউন্ডেশন। প্রতিষ্ঠানটির বিক্রয় প্রতিনিধি ঊষা সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা ২০১১ থেকে মেলায় স্টল নিই। প্রতিবছরই আমরা ব্রেইলে প্রকাশিত বই দৃষ্টিপ্রতিবন্ধীদের বিনামূল্যে দিয়ে থাকি। এবছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি।’

মেলা শুরু হয়েছে ১ ফেব্রুয়ারি থেকে। চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রতিদিন বেলা ৩টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা খোলা থাকছে। রাত সাড়ে ৮টার পর নতুন করে কেউ মেলা প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে পারবেন না। ছুটির দিন বইমেলা চলে বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। একুশে ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে মেলা শুরু হবে সকাল ৮টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত।

সারাবাংলা/এজেডএস

বইমেলা ২০২৫

বিজ্ঞাপন

আজ পবিত্র ঈদুল আজহা
৭ জুন ২০২৫ ০০:০২

আরো

সম্পর্কিত খবর