মিরাক্কেল ও সুলতান সুলাইমান চাষে সফলতা, ২ টমেটো ১ কেজি
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:০০ | আপডেট: ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৩:১০
পাবনা: মিরাক্কেল ও সুলতান সুলাইমান। নাম দুটোর একটি ভারতের বিখ্যাত কমেডি শো, আরেকটি তুরস্কের বিখ্যাত টিভি সিরিয়াল। এমনটিই প্রথমে যে কারও মনে হতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে এই নাম দুটি ধারণ করেছে শীতকালীন সবজি টমেটো। আর এই টমেটো চাষে সফলতা পেয়েছেন পাবনার সুজানগর উপজেলার সাগরকান্দী গ্রামের কৃষক আনসার আলী।
আনসার দীর্ঘদিন বিদেশে ছিলেন। কিন্তু দেশে এসে অন্য কাজ বাদ দিয়ে চাষাবাদে ঝুঁকে পড়েন। তবে তার চাষাবাদ গতানুগতিক ধারার নয়। তিনি আধুনিক পদ্ধতিতে উচ্চ ফলনশীল মিরাক্কেল এবং সুলতান সুলাইমান জাতের টমেটো চাষ করে পেয়েছেন সফলতা। আর তার এই সফলতা থেকে আশপাশের অনেক কৃষক টমেটো চাষে ঝুঁকছেন।
উপজেলা কৃষি অফিসের তথ্য মতে, উপজেলার সাগরকান্দী ইউনিয়নে রয়েছে বিস্তীর্ণ চরাঞ্চল। ওইসব চরাঞ্চলের জমিতে ধানপাট তেমন ভালো হয় না। সে কারণে এলাকার অনেক কৃষক চরাঞ্চলের ওই জমিতে শীতকালীন সবজি টমেটো চাষ করেন। বেশিরভাগ কৃষক তাদের জমিতে গতানুগতিক পদ্ধতিতে মিন্টু সুপার ও হিরো সুপারসহ বিভিন্ন জাতের হাইব্রিড টমেটো চাষ করে থাকেন।
কিন্তু চলতি বছর আনসার আলী উপজেলা কৃষি বিভাগের পরামর্শে আধুনিক চাষাবাদের নিয়মনীতি মেনে তার বাড়ির পাশে খলিলপুর মৌজায় চার বিঘা জমিতে চাষ করেছেন সুস্বাদু উচ্চ ফলনশীল মিরাক্কেল ও সুলতান সুলাইমান জাতের টমেটো। অনুকূল আবহাওয়া আর সঠিক সময় সার-বিষ দেওয়ায় নতুন জাতের এই টমেটোর বাম্পার ফলন হয়েছে। শুধু তাই নয়, প্রতিটি টমেটোর ওজন হয়েছে ৫০০ থেকে ৬০০ গ্রাম। টমেটো সুস্বাদু ও পুষ্টিগুণ বেশি হওয়ায় বাজারেও এর কদর রয়েছে। এ ছাড়া, এখানকার টমেটো ঢাকা-চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হচ্ছে।
কৃষক আনসার আলী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি গত ২০/২২ ধরে চরাঞ্চলের জমিতে টমেটো চাষ করি। এর আগে মিন্টু সুপার ও হিরো সুপার জাতের টমেটো চাষ করেছি। কিন্তু তাতে খুব বেশি সফলতা পাইনি। তবে এ বছর আধুনিক পদ্ধতিতে মিরাক্কেল ও সুলতান সুলাইমান জাতের টমেটো চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘প্রতি বিঘা জমিতে টমেটো চাষ করতে সার, বীজ, মাচান, পলিথিন ও শ্রমিকসহ উৎপাদন খরচ প্রায় ৭০ হাজার টাকা। আর বিঘাপ্রতি জমিতে টমেটো উৎপাদন হয়েছেন ২৫০ থেকে ২৬০মণ। বর্তমানে হাটবাজারে মিরাক্কেল ও সুলতান সুলাইমান জাতের টমেটোর বাজারও বেশ ভাল। প্রতিমণ টমেটো বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা। এতে উৎপাদন খরচ উঠে লাভ থাকছে বেশি।’
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রাফিউল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘মিরাক্কেল ও সুলতান সুলাইমান জাতের টমেটোর ফলন বেশি হয়। তাছাড়া বাজারে এই টমেটোর চাহিদাও বেশি। সেকারণে অনেক কৃষক এই দুই জাতের টমেটো চাষে ঝুঁকছেন।’
সারাবাংলা/পিটিএম