রাবির ১০ সাংবাদিক পেলেন বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:৪৫
রাজশাহী: ক্যাম্পাস সাংবাদিকতায় উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০ সাংবাদিককে রাবিসাস অ্যালামনাই ‘বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড ২০২৩-২৪’ প্রদান করা হয়েছে।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন’স কমপ্লেক্সের কনফারেন্স কক্ষে এক অনুষ্ঠানে অ্যাওয়ার্ড প্রাপ্তদের হাতে ক্রেস্ট, সনদ এবং নগদ অর্থ তুলে দেন উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব।
এই আয়োজনে প্রথম স্থান অধিকার করেছেন জাতীয় দৈনিক দেশ রুপান্তর পত্রিকার রাবি প্রতিনিধি ও রাবিসাসের সভাপতি নোমান ইমতিয়াজ। দ্বিতীয় ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে পুরস্কার পেয়েছেন দৈনিক প্রথম আলোর বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক সাজিদ হোসেন ও দৈনিক খবরের কাগজের প্রতিনিধি এস আই সুমন। তৃতীয় ক্যাটাগরিতে যৌথভাবে পুরস্কার পেয়েছেন দৈনিক আজকের পত্রিকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিবেদক এবং রাবিসাসের সাধারণ সম্পাদক রিপন চন্দ্র রায় ও দৈনিক সমকালের প্রতিনিধি অর্পণ ধর।
এছাড়া পাঁচ জনকে বিশেষ সম্মাননা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- দৈনিক বাংলার প্রতিনিধি আসিফ আজাদ সিয়াম, দৈনিক কালবেলার প্রতিনিধি সাজ্জাদ হোসেন, দৈনিক কালের কণ্ঠের প্রতিনিধি মাহবুব হাসান, দৈনিক প্রতিদিনের বাংলাদেশের প্রতিনিধি সাকিবুল হাসান ও সাম্প্রতিক দেশকালের প্রতিনিধি জাহিদুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীব বলেন, ‘সুষ্ঠু, গণতান্ত্রিক এবং রাষ্ট্রের জন্য সাংবাদিকতা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রে মাঠের পরিস্থিতির সঙ্গে সাংবাদিকতা মিলে না। আমার দীর্ঘ অভিজ্ঞতায় এমন অনেক সাংবাদিক দেখেছি যারা বিভিন্ন ইন্টারেস্ট গ্রুপের খপ্পরে পড়া এবং ইন্টারেস্ট প্রমোট করার রেহায় থেকে রক্ষা পায়নি। অন্য প্রতিষ্ঠানগুলো রাষ্ট্রকে ক্ষতি করার যে ক্ষমতা তার চেয়ে সাংবাদিকতার ক্ষমতা বেশি। আমরা যদি বিগত দিনের ইতিহাস দেখি, স্বৈরশাসন চেপে বসেছিল সেটাকে টিকিয়ে রাখতে সাংবাদিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। আমরা যদি উন্নতি চাই, ভালো কিছু দেখতে চাই তাহলে বিগত দিনের ভুলগুলো সুধরে নেওয়া উচিত। কোথায় ভুল করলাম আর কোন স্বার্থের কারণে দেশ, সমাজ এবং দেশের মানুষের পাশে দাড়াতে পারলাম না সেটা চিন্তা করা উচিত। এখন দেশে নতুন প্রেক্ষাপট তৈরী হয়েছে। এই সময়ে স্বাধীন সাংবাদিকতা আমরা চেষ্টা করলে তৈরী করতে পারব।’
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির প্রতিষ্ঠাতা সহ-সাধারণ সম্পাদক আহমদ শফিউদ্দিন বলেন, ‘আজকে সবচেয়ে যন্ত্রণাদায়ক বিষয় হচ্ছে এই যে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন, এটা কিন্তু কোটা আন্দোলন ছিল না। এটা হচ্ছে কর্ম বেকারত্বের বিদ্রোহ। হাজার হাজার তরুণ, কেউ বেকার, কেউ অর্ধ বেকার। এজন্য আমাদের দাবি তোলা উচিত কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কাছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে যে কোন বিভাগ করলে আমাদের বেকারত্ব কমবে। কোন বিভাগ করলে এই অঞ্চলে যে কৃষির ব্যপক সম্ভাবনা, কর্মসংস্থান, কৃষিভিত্তিক শিল্প এসবে ভালো করা যাবে। দেশের বিশ কোটি মানুষ চিকিৎসার জন্য বিদেশে যায়। কেনো এ দেশের চিকিৎসা বিকশিত হচ্ছে না। কর্তৃপক্ষকে বলবো আপনারা হসপিটাল ম্যানেজমেন্টের ওপর বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ডিপ্লোমা, ডিগ্রি চালু করুন। বর্তমান বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে পড়াশোনা করান। কর্মসংস্থানের সমস্যা নিরসন না করতে পারলে এদেশের দূর্নীতি, অনিয়ম, বেকারত্ব এসব কমানো সম্ভব নয়।’
রাবিসাসের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বুলবুল বলেন, ‘ফেব্রুয়ারি মাস আমার শোক আর আনন্দের মাঝে ঘুরপাক খায়। শোক হলো ১৯৬৯ সালের ১৮ই ফেব্রুয়ারি শামসুজ্জোহাকে হারানো আর আনন্দ হল রাবিসাসের জন্ম। রাবিসাসের অস্তিত্বকে ৫৬ বছর পরে হলেও মাটির প্রদীপের মতো জ্বালিয়ে রাখতে পেরেছি। এটাই আমার ৭৪ বছরের জীবনে সবচেয়ে বড় সাফল্য।’
রাবিসাসের সভাপতি নোমান ইমতিয়াজ বলেন, ‘আমরা যে কাজ করেছি সেটার এক প্রকার স্বীকৃতিস্বরুপ এই অ্যাওয়ার্ড। এভাবে পুরস্কৃত করার ধারাটা যদি অব্যাহত থাকে তবে যারা এই কাজ করছে, তারা কাজের প্রতি আরও বেশি অনুপ্রাণিত হবে।’
রাবিসাস অ্যালামনাই- এর কে এম শহীদুল হকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী তাহমিদা কনক। এ সময় আরও বক্তব্য রাখেন রাবিসাস অ্যালামনাই- এর সাধারণ সম্পাদক রব মজুমদার ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন বকুল। এ সময় রাবিসাসের প্রাক্তনী ও বর্তমান সদস্য এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এসডব্লিউ
বেস্ট রিপোর্টিং অ্যাওয়ার্ড রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) রাবিসাস