কর্মশালায় বক্তারা
নিরাপত্তা ঝুঁকিতে সাংবাদিকতা
১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:৪৮
ঢাকা: দেশে দেশে বিভিন্ন প্রান্তরে সাংবাদিকরা যেভাবে হত্যা ও হুমকির শিকার হচ্ছে- ইউনেস্কো বলছে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। ইউনেস্কো’র হিসাব মতে, ১৯৯৩ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিশ্বে এক হাজার ৬০০ জনের বেশি সাংবাদিককে হত্যা করা হয়েছে। অফলাইন ও অনলাইন হুমকির শিকার হচ্ছে বলে বক্তারা জানান।
মঙ্গলবার ( ১১ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মোহাম্মদপুরে ইউনেস্কো ও নিউজ নেটওয়ার্ক আয়োজিত সাংবাদিকদের নিরাপত্তা শীর্ষক প্রশিক্ষণের খসড়া ম্যানুয়ালের ওপর এক কর্মশালায় বক্তা ও অংশগ্রহণকারীরা এই অভিমত জানান। নিউজ নেটওয়ার্কের সম্পাদক ও সিইও শহীদুজ্জামানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন ইউনেস্কো’র ঢাকা অফিসের কমিউনিকেশন ও ইনফরমেশন প্রকল্প কর্মকর্তা নুরে জান্নাত প্রমা। খসড়া ম্যানুয়ালটি তুলে ধরেন সিনিয়র সাংবাদিক ও গবেষক গৌতম মন্ডল।
বক্তারা বলেন, নিরাপত্তাকর্মী ও বিক্ষোভকারীদের নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন সাংবাদিকরা। শারীরিক আক্রমণের শিকার হচ্ছে নারী সাংবাদিকরাও। শুধু বাংলাদেশে নয়, গোটা বিশ্বে নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে সাংবাদিকদের অনেক বিষয়ে আপস করতে হচ্ছে, যা মুক্ত সাংবাদিকতার জন্য অন্তরায়। তাই পেশাগত কাজে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা নিয়ে তাদের মধ্যে ধারণা থাকা প্রয়োজন।
কর্মশালায় জানানো হয়, সাংবাদিকরা বেশিরভাগ সময় ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে কাজ করেন। বিশেষ করে তথ্য সংগ্রহে তারা যখন যুদ্ধক্ষেত্র বা সংঘর্ষের মধ্যে যান, তখন তাদের শারীরিক নিরাপত্তা জরুরি হয়ে পড়ে। দুর্নীতির তথ্য সংগ্রহেরে সময়ও তারা ঝুঁকিতে থাকেন। এমন পরিস্থিতিতে তারা শারীরিক আক্রমণ, অপহরণ, এমনকি খুনের শিকার হন। তাই তাদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা প্রয়োজন। সাংবাদিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিতে ইউনেস্কো আন্তর্জাতিকভাবে পদক্ষেপ নিচ্ছে।
আলোচনায় উঠে আসে, সাংবাদিকদের নিরাপদ কর্মপরিবেশ স্বাধীন সংবাদপত্রের মৌলিক বিষয়। সাংবাদিকরা যখন অনিরাপদ বোধ করেন, তখন তারা বিতর্কিত বিষয়ে প্রতিবেদন করা থেকে বিরত থাকেন। যাকে বলা হয় ‘সেলফ সেন্সরশিপ’। এটি স্বাধীন সংবাদমাধ্যমের নজরদারির ভূমিকা বাধাগ্রস্ত করে। সাংবাদিকদের নিরাপত্তা শুধু ব্যক্তিগত বিষয় নয়, এটি একটি সামাজিক প্রয়োজনীয়তা। কেননা, এটি যেমন তথ্যের অখণ্ডতা নিশ্চিত করে, তেমনি জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে গণতন্ত্রকে সুসংহত করে। তাই সমাজ যখন ক্রমাগত বিকশিত ও নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করছে, তখন সাংবাদিকদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দেখা দিয়েছে।
সারাবাংলা/জিএস/পিটিএম