গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই: শামসুজ্জামান দুদু
১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:৫৯ | আপডেট: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:০২
ঢাকা: বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, কেউ যদি জনগণের ম্যান্ডেডপ্রাপ্ত সরকার গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয় তাহলে গণতন্ত্র গ্রহণ করতে ব্যর্থ হবে। সে জন্য আমরা নির্বাচনের কথা বলেছি। গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) জাতীয় প্রেস ক্লাবের মাওলানা আকরাম খাঁ হলে বাংলাদেশ ইয়ুথ ফোরামের উদ্যোগে এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, দেশে একটা ঐতিহাসিক পরিবর্তন হয়েছে। ফ্যাসিবাদের গ্রাস থেকে জাতি মুক্তি পেয়েছে। এ ব্যাপারে যেসব ছাত্র জনতা অকুণ্ঠচিত্তে নিঃস্বার্থভাবে বুলেট বুকে ধারণ করেছে, জীবণকে উৎসর্গ করেছে আমি তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই এবং তাদের জন্য প্রার্থনা করি।
তিনি বলেন, এতো বড় একটা পরিবর্তনের পরেও বাংলাদেশের মানুষ আশায় বুকে বেঁধেছিল, তাদের জীবন ধারনের জন্য অন্তত পক্ষে গত সরকারের আমলের তুলনায় এবার অনেক ভালো থাকবে। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, কোনো কোনো ক্ষেত্রে শুরুতেই দ্রব্য মূল্যের দাম একটু কমের দিকে গেলেও পরবর্তীতে দাম বেড়ে যায়। মাঠ পর্যায়ের যে কৃষকরা সঠিক দাম পাওয়ার প্রত্যাশা করেছে সেটির ধারে কাছেও তারা যেতে পারেনি। এ দেশের কৃষক শ্রমিক সব সময় অবহেলিত থেকেছে এবং নিমর্মতার স্বীকার হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, বিএনপি গরিব মানুষের দল। বিএনপি খেটে খাওয়া মানুষের দল। কামার, কুলি, মজুর ঠিক তেমনি মধ্যবিত্তের দল। সব শ্রেণির মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে বিএনপি। সেই বিএনপি আজকে এ সরকারকে অকুণ্ঠ সমর্থন জানাল কিন্তু সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ছয় মাস চলে যাওয়ার পরেও ব্যর্থ হয়েছে বলে সবাই মনে করছে।
এ সরকার বাজারদর এখনো নিয়ন্ত্রণ করতে পারেনি এমন মন্তব্য করে শামসুজ্জামান দুদু বলেন, মানুষের জানমালের নিরাপত্তা দিতে পারেনি। দেশের শৃঙ্খলা রক্ষা করতে পারছেন না।
তিনি বলেন, আমরা শুরুতেই বলেছিলাম, সরকার প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষ করে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে জাতীয় সংসদ নির্বাচন দেন। বর্তমান সরকার তার সমর্থনকে কাজে লাগানোর যে দক্ষতার দরকার ছিল, সেটা তারা করতে পারেনি। কিন্তু এ সরকারকে এখনো পর্যন্ত আমরা সমর্থন করি। এ সরকারের সমালোচনা করি সঠিক পথে থাকার জন্য। হয়তো তারা কিছু কিছু ক্ষেত্রে অসন্তুষ্ট হতে পারে কিন্তু চোখে আঙুল দিয়ে দেখানো ছাড়া কোনো পথ নেই। কারণ, তারা যদি ব্যর্থ হয় তাহলে এর অংশীদার আমাদেরকেও হতে হবে। সরকারের সমালোচনার কারণ হলো, তারা যাতে সফল হয়। এ সরকারকে আমরা ব্যর্থ হতে দিতে চাই না।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন,দেশের মধ্যে একধরনের নির্বাচনের আমেজ তৈরী হতে যাচ্ছে। সেই জায়গায় কিছু কিছু রাজনৈতিক দল প্রয়োজনীয় সংস্কার নয়, সংস্কার করে নির্বাচনের কথা বলছেন। বলতেই পারে! সকল রাজনৈতিক দলতো স্বাধীন। সকল রাজনৈতিক দলের নিজস্ব কর্মসূচি আছে। তারা যদি মনে করে যে, এই সরকারের সংস্কার দরকার, সেই কথা তারা বলতে পারে। আমার কাছে মনে হয় নির্বাচিত সরকার দায়িত্ব নিয়ে সংস্কার করতে পারে। জনগণের ম্যান্ডেডপ্রাপ্ত সরকার যদি কেউ গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়, তাহলে গণতন্ত্র গ্রহণ করতে তারা ব্যর্থ হবে। সেজন্য আমরা নির্বাচনের কথা বলেছি। গণতন্ত্র উত্তরণের জন্য নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই।
আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা এম নাজমুল হাসানের সভাপতিত্বে ও সভাপতি সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপির সহ তথ্য বিষয়ক সম্পাদক ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব কাদের গনি চৌধুরী, বিএনপি’র নির্বাহী কমিটির সদস্য মাইনুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, মৎস্যজীবী দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সিরাজী, জাতীয়তাবাদী চালক দলের সভাপতি জসিম উদ্দিন কবিরসহ প্রমুখ।
সারাবাংলা/এফএন/ইআ