টেলিযোগাযোগ খাতে ব্যাপক লুটপাট হয়েছে: ইশরাক
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:৫৯ | আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:০৯
ঢাকা: দেশের টেলিযোগাযোগ খাতে ব্যাপক লুটপাট হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক কমিটির সদস্য ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। আইসিটি সেক্টরে হওয়া দুর্নীতি নিয়ে শ্বেতপত্র প্রকাশ করা উচিত বলেও মন্তব্য করেছন তিনি।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশন আয়োজিত ‘টেলিযোগাযোগ ও ইন্টারনেট সেবা খাতে সংস্কার এর প্রয়োজনীয়তা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। মুঠোফোন গ্রাহক এসোসিয়েশনের সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই সেমিনারে খাত সংশ্লিষ্টরা বক্তব্য দেন।
বিএনপির তরুণ নেতা ইশরাক হোসেন বলেন, ‘২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার কাদের লাইসেন্স দিয়েছে, বিটিআরসির ভূমিকা কি ছিল -সেটি আমরা সকলেই জানি। সরকারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ দু’চার জন সুবিধা পেয়েছেন। বিরোধীমত ধামাচাপা দেওয়ার জন্য ইন্টারনেট শাটডাউন করে দেওয়া হয়েছে, জাতিসংঘের প্রতিবেদনেও তা উঠে এসেছে। যারা আওয়ামী সরকারের বেনিফিশিয়ারি হিসেবে লাইসেন্স পেয়েছিল তাদের অনেকেই অর্থ বিদেশে পাচার করেছে। টেলিযোগাযোগ খাতে নিরবে নিভৃতে ব্যাপক লুটপাট হয়েছে। আইসিটি সেক্টরে কারা কারা দুর্নীতি করেছে তার শ্বেতপত্র প্রকাশ করা উচিত। প্রান্তিক পর্যায়ে ইন্টারনেট সহজলভ্য করে দিতে হবে। সে ধরণের পলিসি ঠিক করতে হবে রাজনীতিবিদদের।’

আলোচনা সভায় বক্তব্য দিচ্ছেন ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন। ছবি: সারাবাংলা
তিনি বলেন, ‘বিটিআরসি একটি সংবিধিবদ্ধ স্বাধীন প্রতিষ্ঠান হওয়ার কথা। সেখানে উচিত ছিল তাদের সঠিকভাবে রেগুলেট করা। কিন্তু আপনারা দেখেছেন সকল কিছু এক ব্যক্তির দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়েছে। এখানে সকল কিছু দলীয়করণ করা হয়েছে। বিটিআরসির অবস্থাও তাই। এখনও সেই অবস্থাতেই আছে। তারা রেগুলেট করে ভেরিয়ার সৃষ্টি করেছে শুধু, যাতে ওই ব্যবসায় আর কেউ ঢুকতে না পারে।’
তিনি আরও বলেন, ‘লাইসেন্স দেওয়ার ক্ষেত্রে ২৭টি লেয়ার তৈরি করেছে। এই লাইসেন্সগুলো করা পেয়েছে, সেটির একটি সঠিক সার্ভে হওয়া উচিত। তাদের নাম পরিচয় দিয়ে একটি সঠিক পরিসংখ্যান তুলে ধরা উচিত। দলীয় পরিচয়ে কতোটুকু লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে, আর নির্দলীয়ভাবে কতোটুকু লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। যারা অতীতে ব্যবসায় ছিলো তাদের কতো শতাংশ লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে। তাহলে পুরো চিত্রটি বুঝা যাবে কি করা হয়েছে।’
ইশরাক বলেন, ‘আমরা বিটিআরসির রিফর্মের পক্ষে। আমরা সহজলভ্য অর্থাৎ কম মূল্যে প্রান্তিক পর্যায়ে যাতে জনগণের কাছে ইন্টারনেট পৌঁছায়, আমরা তা চাই। তবে অতীতে যারা লাইসেন্স পেয়েছে, তারা তো একটি ব্যবসা দাঁড় করিয়েছে, তারা তো কর্মসংস্থান তৈরি করেছে, অতএব তারা যাতে বড় অপারেটরদের কাছে মার্কেট আউট না হয়, তা রাজনীতিবিদ হিসাবে আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। আমাদের দেশীয় প্রতিষ্ঠানকেও আমাদের রক্ষা করতে হবে।’
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, ‘গুগল ফেসবুক ও অ্যামাজনে ৭০ শতাংশ ডাটা যায়। অথচ আমাদের দেশে এই প্রতিষ্ঠানগুলোর ক্যাশ সার্ভার নেই। পার্শ্ববর্তী দেশ হয়ে ডাটা আসছে, আমরা চাই তারা যেন বাংলাদেশে ক্যাশ সার্ভার স্থাপন করে।’
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন টেলিকম বিশেষজ্ঞ মুস্তাফা মাহমুদ হুসাইন। এতে আরও বক্তব্য দেন বেসিসের সাবেক সভাপতি ও বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফাহিম মাশরুর, ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইআইজিএবি) এর সভাপতি আমিনুল হাকিম, ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (আইএসপিএবি) সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশনের সাবেক পরিচালক খালেদ আবু নাসের, রবি’র সিনিয়র ডিরেক্টর অনামিকা ভক্ত, গ্রামীণফোনের হোসেন সাদাত, এমটব এর হেড অব কমিউনিকেশন আব্দুল্লাহ আল মামুন প্রমুখ।
সারাবাংলা/ইএইচটি/ইআ