‘যেকোনো মূল্যে নির্বাচন উত্তমভাবে করার নির্দেশনা দেওয়া হবে ডিসিদের’
১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:৫৮ | আপডেট: ১৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:৪১
ঢাকা: যেকোনো মূল্যে আগামী জাতীয় নির্বাচন উত্তমভাবে করার বিষয়ে জেলা প্রশাসকদের নির্দেশনা দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাঠ প্রশাসন কোনো পক্ষপাতমূলক আচরণ করতে পারবে না- জেলা প্রশাসকদের সম্মেলনে এমন বার্তা দেবে নির্বাচন কমিশন।
রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে ইসি সচিবালয়ে নিজকক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে এ কথা বলেন নির্বাচন কমিশনার।
আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘দল নিরপেক্ষ ডিসিদের রিটার্নিং অফিসার নিয়োগে কঠোর থাকবে কমিশন।’ আওয়ামী লীগের নিবন্ধন নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এখনো আসেনি বলেও জানান তিনি।
তিনি বলেন, ইসি বিশ্বাস করে, এবার কোনো খারাপ উদাহরণ সৃষ্টি হবে না এবং একটা উত্তম নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে একটা হবে।
এবার প্রথমবারের মতো ডিসি সম্মেলনে ইসিকে আমন্ত্রণ করা হয়েছে। আজ তিন দিনব্যাপী জেলা প্রশাসক সম্মেলন শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার, নির্বাচন কমিশনার ও ইসি সচিব এ সম্মেলনে ডিসিদের দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেওয়ার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনার জানান, প্রতি বছর ডিসি সম্মেলন হয়; তারই ধারাবাহিকতায় এবারও হচ্ছে। আমরা দাওয়াত পেয়েছি। ১৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ইসির জন্য নির্ধারিত একটা সেশন রয়েছে। প্রতিটি মন্ত্রণালয়, বিভাগ এর নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে মাঠ প্রশাসনের কাজ নিয়ে বিভিন্ন নির্দেশনা থাকবে।
সেইসঙ্গে তিনি আরও জানান, “একটা উত্তম নির্বাচন করতে চাচ্ছি আমরা এবং যে কোনো মূল্যে এটি করতে হবে, এ মেসেজটি আমরা দেওয়ার চেষ্টা করব।”
মাঠ প্রশাসন যেন ইসির নির্দেশনা প্রতিপালন করে সে বিষয়ে কঠোর তাগিদ দেওয় হবে বলে জানান নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
দল নিরপেক্ষ রিটার্নিং অফিসার বা জেলা প্রশাসক নিয়োগের বিষয়ে তিনি বলেন, “নির্বাচন কাজে সহায়তা করতে বাধ্য। যখন তফসিল ঘোষণা করা হবে, তখন ইসি মনে করলে যে নিরপেক্ষ জেলা প্রশাসককে পদায়ন প্রয়োজন, সে বিষয়ে ইসি কঠোরভাবে সে সিদ্ধান্তে অটল থাকবে। ”
আনোয়ারুল ইসলাম জানান, ইসির নিজস্ব কর্মকর্তাকে রিটার্নিং অফিসার নিয়োগের বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। প্রয়োজনে এ বিষয়ে পাইলটিং করা হবে।
মাঠ প্রশাসন যেকোনো খারাপ উদাহরণ সৃষ্টি করতে না পারে, সে বিষয়েও নজর রয়েছে ইসির। তিনি জানান, ইতোপূর্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে যে নির্বাচনগুলো হয়েছে, এ মাঠ প্রশাসনকে দিয়েই নির্বাচনগুলো হয়েছে। সুতরাং, সরকারের পক্ষ থেকে কোনো ধরনের প্রেসার থাকবে না; কোনো ধরনের প্রভাব থাকবে না।
“সেহেতু আমরা আশাবাদী এবারও সুষ্ঠু, সুন্দর নির্বাচন হবে। এতে করে কেউ সাহস পাবে না (খারাপ কাজ করার), আমাদের সমানে ভালো উদাহরণও রয়েছে, খারাপ উদাহরণও রয়েছে। কমিশন বিশ্বাস করে, এবার কোনো খারাপ উদাহরণ সৃষ্টি হবে না এবং একটা উত্তম নির্বাচন বাংলাদেশের ইতিহাসে একটা হবে ইনশাহআল্লাহ” -বলেন আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।
আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের দাবি জানাচ্ছে অনেক দল। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, “আমাদের এ বিষয়ে বলার সময় এখনও আসেনি। এ বিষয়ে আমরা এখনো কিছু বলতে চাচ্ছি না। সময়ই বলে দেবে, সময়ই আমাদের গাইড করবে। সময়ই বলবে আমরা কী সিদ্ধান্ত নিচ্ছি।”
সীমানা নির্ধারণের বিষয়ে তিনি বলেন, জনসংখ্যার ভিত্তিতে সীমানা পুনঃনির্ধারণ করতে গেলে কোনো আসনই ঠিক রাখা যাবে না। তাই বিদ্যমান আইনের পরিবর্তনের উদ্যোগ নিচ্ছে কমিশন।
তিনি বলেন, সীমানা নির্ধারণ প্রক্রিয়াটি একটা জটিল প্রক্রিয়া। সেক্ষেত্রে বিদ্যমান আইন সংশোধন হলে আমরা (সীমানা নির্ধারণে) ব্যবস্থা নেব। এক্ষেত্রে প্রশাসিনক ব্যবস্থাপনার সুবিধা, উন্নয়ন কর্মকাণ্ড, জনসংখ্যার বিষয়, ভৌগলিক অবস্থা, বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে মানুষের সুবিধা-অসুবিধা দেখে তা করা হবে।
সারাবাংলা/এনএল/ইআ