Saturday 22 Feb 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চেয়ারম্যানের পদত্যাগ ও বিআরটিএ’র বিলুপ্তির দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতি’র

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:৩৯ | আপডেট: ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৩৫

ঢাকা: সিএনজি অটোরিকশার চালকদের নৈরাজ্য না ঠেকিয়ে তাদের কাছে নতি স্বীকার করায় বিআরটিএ চেয়ারম্যানের পদত্যাগ এবং প্রতিষ্ঠানটি বিলুপ্তির  দাবি জানিয়েছে যাত্রী কল্যাণ সমিতি।

একই সঙ্গে মেয়াদোর্ত্তীণ ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কর বাস উচ্ছেদ করে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে মালিক সমিতির পরিবর্তে একটি কোম্পানির আদলে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে রুট রেশনলাইজেশন পদ্ধতিতে কোরিডরভিত্তিক চলাচল নিশ্চিত করে ৫ হাজার উন্নতমানের বাস নামানোর দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।

বিজ্ঞাপন

সোমবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনাতনে যাত্রী কল্যাণ সমিতি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন – ছবি : সারাবাংলা

সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি সাগর-রুনী মিলনাতনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সমিতির মহাসচিব মোঃ মোজাম্মেল হক চৌধুরী এ দাবি জানান।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) নগরজুড়ে সড়ক অবরোধ করে সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালকরা। ভয়াবহ যাত্রী দুর্ভোগ তৈরির জন্য তাদের দায়ী না করে বরং উল্টো নতি স্বীকার করেছে বিআরটিএ। যা জনগণের দুর্ভোগকে আরও দীর্ঘায়িত করেছে। জনগণের অর্থে পরিচালিত প্রতিষ্ঠানটি অতিরিক্ত ভাড়া আদায়কারী সিএনজিচালিত অটোরিকশার বিরুদ্ধে মামলা রুজুর প্রজ্ঞাপন বাতিল করে অসহায় যাত্রীদের ভাড়া নৈরাজ্যকারী অটোরিকশা চালকদের হাতে তুলে দেওয়ায় চেয়ারম্যানের পদত্যাগসহ প্রতিষ্ঠানটি বিলুপ্তিরও দাবি জানান তিনি।

মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, রাজধানী ঢাকার সৌন্দর্য বর্ধন, পরিবেশ দূষণ রোধ, সড়ক দুর্ঘটনা ও যাত্রী হয়রানি বন্ধের পাশাপাশি সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে অন্তবর্তী সরকার ঢাকা মহানগরীর ২০ বছরের পুরনো লক্কড়-ঝক্কর বাস উচ্ছেদে কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। গত ১৯ ডিসেম্বর সরকারের চার উপদেষ্টা, পুলিশ, নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ’সহ বিভিন্ন শীর্ষস্থানীয় স্টেকহোল্ডারদের সভায় সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্ঠা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান ঢাকা মহানগরীর ২০ বছরের পুরোনো বাস মে মাসের মধ্যে উচ্ছেদ করার নির্দেশনা দেন। আগাম প্রস্তুতি হিসেবে ২৫ ফেব্রুয়ারী থেকে ঢাকার সব রুট বিলুপ্ত করে ৯টি রুটে ৯ কালারের উন্নত বাস পরিসেবা চালুর নির্দেশনা দেন। কিন্তু এ নির্দেশনার অপব্যবহার করে নতুন উন্নত বাসের বদলে ২০ থেকে ৪০ বছর যাবত নগরীতে চলাচলরত পুরনো মেয়াদোত্তীর্ণ লক্কড়-ঝক্কর ফিটনেসবিহীন বাসগুলোতে রাতারাতি গোলাপি রং লাগয়ে চালানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এর ফলে নগরজুড়ে প্রতিদিন গণপরিবহন সংকটে ভয়াবহ যাত্রী দুর্ভোগ তৈরি হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, উপদেষ্টাদের ওই বৈঠকে ইতোপূর্বে মুখ থুবড়ে পরা ই-টিকিটিং পদ্ধতিতে বাস কাউন্টারে ভাড়ার টাকা আদায় করে চালক-সহকারীর দৈনিক হারে ট্রিপভিত্তিক মজুরী নির্ধারণ ও সাপ্তাহিক, পাক্ষিক হারে মালিকের জমা বাস মালিক সমিতি কর্তৃক প্রদানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এতে দীর্ঘদিন ধরে দৈনিক চুক্তিতে চলা বাসগুলোর মালিকেরা সমিতি থেকে সঠিক হিসাবে তাদের বাসগুলোর জমা টাকা পাওয়া নিয়ে বিশ্বাস-অবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। অন্যদিকে চুক্তিতে চলা বাসের আয় থেকে কম মজুরী নির্ধারণ করায় চালক ও সহকারীর মধ্যে তীব্র অসন্তোষ দেখা দিয়েছে। এতে করে প্রান্তিক বিভিন্ন বাসের মালিক ও চালক-সহকারীরা তাদের কিছু কিছু বাস চলাচল বন্ধ রেখেছে। বাসের ভাড়া নির্ধারণের শর্ত লংঘন করে এমন অব্যবস্থাপনায় গণপরিবহন সংকটে ভয়াবহ যাত্রী দুর্ভোগ তৈরি হয়েছে নগরজুড়ে। এতে ভয়াবহ দুর্ভোগে পড়ছেন প্রতিদিন নিয়মিত অফিসগামী যাত্রীরা।

সমিতির মহাসচিব বলেন, এমন সঙ্কট নিরসনে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিআরটিএ, ট্রাফিক বিভাগ ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ের কোন প্রকার হস্তক্ষেপ লক্ষ্য করা যায়নি। সঙ্কট নিরসনে যাত্রী কল্যাণ সমিতির পক্ষ থেকে বিভিন্ন মহলে যোগাযোগ করা হলে কোন সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না।

এদিকে গত ৪ ফেব্রুয়ারী এক সংবাদ সম্মেলনে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা ঢাকা মহানগরীর ২১টি পরিবহন কোম্পানীর গাড়ি ০৬ ফেব্রুয়ারী থেকে কাউন্টারভিত্তিক পরিচালনার কথা বলে সার্ভিস শুরু করলেও এ সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে তারা যাত্রী কল্যাণ সমিতিকে বিষয়টি অবহিত করেন নি। নগরীতে যেকোন উন্নত গণপরিবহন পরিসেবা প্রদানের ক্ষেত্রে বিআরটিসির অনুমোদন নেওয়ার বাধ্যবাধকতা থাকলেও এ ক্ষেত্রে তা অনুসরন করা হয়নি। ২ হাজার ৬১০টি বাসের রং পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও বিআরটিএ’র পূর্ব অনুমোদন নেয়া হয়নি। এসব বাসের তালিকা বিআরটিএ বা ট্রাফিক বিভাগ কারো কাছে পাওয়া যায়নি।

তিনি বলেন, যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, এসব বাস-মিনিবাসের অধিকাংশই ফিটনেসবিহীন লক্কড়-ঝক্কর, অপরিচ্ছন্ন ও অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে নোংরা আর্বজনায় ভরপুর। কোন কোন বাসের পেছনে লাইট-ইন্ডিকেটর আর লুকিং গ্লাস নেই। আসনে দুই পা মেলে বসা যায় না। কোন কোন বাসের পাদানি, ধরার হ্যান্ডেল ভাঙ্গা। ময়লা-আবর্জনা, ছাড়পোকা-তেলাপোকায় ভরপুর। কোন কোন বাসের সিট তেল চিটচিটে। কোন বাসের আসনে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার বালাই নেই। উপরন্তু কোন কোন পথে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের অভিযোগ উঠেছে। এমন পরিস্থিতিতে এসব মেয়াদোর্ত্তীণ লক্কড়-ঝক্কর ফিটনেসবিহীন বাস উচ্ছেদ ঠেকাতে কেবলমাত্র উপরে গোলাপি রং লাগানো হয়েছে বলে পর্যবেক্ষণকালে অভিজ্ঞমহল মনে করেন।

সারাবাংলা/ইউজে/আরএস

ফিটনেসবিহীন ২০ বছরের পুরনো লক্কড়-ঝক্কর বাস যাত্রী কল্যাণ সমিতি সিএনজিচালিত অটোরিকশা

বিজ্ঞাপন

‘সীমান্তের ওপার থেকে ষড়যন্ত্র চলছে’
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:১৮

আরো

সম্পর্কিত খবর