ছাত্রদলের অবরুদ্ধের মুখে বরিশাল শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:০০
বরিশাল: বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউনুস আলী সিদ্দিকীকে তার দফতরে অবরুদ্ধ করে লাঞ্ছিত করেছেন ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের অর্ধশত নেতাকর্মী। বিদ্যালয় কমিটিতে নগর বিএনপির সদস্যসচিব জিয়া উদ্দিন সিকদারের নাম ১ নম্বরে না রাখায় সোমবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় তার অনুসারীরা চেয়ারম্যানকে নাজেহাল করেন। নেতাকর্মীরা এক ঘণ্টার বেশি সময় বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অবরুদ্ধ করে রাখেন বলে জানা গেছে।
পরে গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে গেলে নেতাকর্মীরা সটকে পড়েন। এ ঘটনার একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সন্ধ্যার দিকে হঠাৎ একদল নেতাকর্মী বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউনুস আলী সিদ্দিকীর কক্ষের সামনে জড়ো হয়ে হইচই করেন। এ সময় কয়েকজন নেতা বোর্ড চেয়ারম্যানের কক্ষের ভেতরে ঢুকে তার কাছে জানতে চান, কেন জিয়া উদ্দিন সিকদারকে এ ওয়াহেদ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আহ্বায়ক কমিটির তালিকায় ১ নম্বরে রাখা হয়নি? কেউ কেউ আবার টেবিল চাপড়ে চেয়ারম্যানকে হুমকিও দেন। খবর পেয়ে বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ছুটে গিয়ে দরজা খুলে চেয়ারম্যানকে উদ্ধার করেন। এ সময় সেখানে গণমাধ্যমকর্মী এবং গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা গেলে বিএনপি নেতা জিয়ার অনুসারীরা সাংবাদিকদের দায়িত্ব পালনে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
জানা গেছে, নগরীর ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের সাগরদী এলাকায় এ ওয়াহেদ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের কমিটি গঠনের জন্য বিভাগীয় কমিশনার তিন জনের নামের তালিকা চূড়ান্ত করে শিক্ষা বোর্ডে পাঠান। সেখান থেকে একজনকে সভাপতি চূড়ান্ত করবেন বোর্ড চেয়ারম্যান। ওই তালিকায় ১ নম্বরে বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম ছালাম মিয়ার স্ত্রীর নাম রয়েছে। সাধারণত সভাপতি মনোনয়নের ক্ষেত্রে ১ নম্বরে থাকা ব্যক্তিই অগ্রাধিকার পান। জিয়া সিকদারের বাসাও সাগরদী এলাকায়।
ঘটনাস্থলে যাওয়া বরিশাল নগরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সভাপতি শাহরিয়ার তুষার দাবি করেন, তিনি বোর্ড চেয়ারম্যানের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন। সেখানে কুশল বিনিময় করেছেন। চেয়ারম্যানকে ঘেরাও করা হয়েছে, এমনটা তিনি দেখেননি।
মহানগর স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক তারেক সোলায়মান বলেন, ‘আমি কেন বোর্ডে যাব? আমি কিছুই জানি না।’
ছাত্রদল নেতা ইলিয়াস তালুকদার বলেন, ‘চেয়ারম্যানের কাছে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যাই। জিয়া ভাইয়ের কমিটি নিয়ে কোনো কিছু না। তবে জিয়া ভাইয়ের একটি কমিটি আছে। আমরা বলছি যে সম্ভব হলে জিয়া ভাইয়ের স্কুলের কমিটির বিষয়টা দেখবেন।’
এ ঘটনার বিষয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ইউনুস আলী সিদ্দিকী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিএনপি নেতা জিয়াকে এ ওয়াহেদ বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের আহ্বায়ক কমিটির প্যানেলে ২ নম্বরে রাখা হয়েছে। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান আ. ছালামের স্ত্রীকে ১ নম্বরে রাখা হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘একদল কর্মী জানতে চেয়েছে, কেন জিয়া ভাইয়ের নাম ২ নম্বরে গেল? শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কে আহ্বায়ক হবেন, তা বিভাগীয় কমিশনার নির্ধারণ করে তালিকা পাঠান। এখানে আমাদের হাতে কিছুই নেই।’
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা জিয়া উদ্দিন সিকদার বলেন, তিনি ঢাকায় আছেন। যারা গিয়েছিল তাদের তিনি চেনেন না। কেউ তার নাম ব্যবহার করলে কিছু করার নেই।
সারাবাংলা/এসডব্লিউ