ঢাকা: আগামী নির্বাচনে জেলা প্রশাসকরা নির্ভয়ে ও নির্ভার হয়ে কাজ করতে পারবেন- বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, এবার তাদের (ডিসি) ওপরে কোনো ইনফ্লুয়েন্স থাকবে না যে, ভোট এভাবে করতে হবে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক সম্মেলনের সপ্তম অধিবেশনে পরিবেশ বন ও জলবায়ু বিষয়ক এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে জেলা প্রশাসকদের বৈঠক শেষে এ কথা বলেন তিনি।
সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, এবারের নির্বাচন তো নির্দলীয় ব্যবস্থাপনায় হবে। কাজেই ডিসিদের এবার দলীয় তকমা থাকার কোনো কারণ নেই। তারপরেও কোনো ডিসিকে নিয়ে যদি কোনো রাজনৈতিক দলের আপত্তি থাকে, সেটা জানালে তা যৌক্তিক কারণ কি না- সেটা আমরা দেখবো।
এ সময় নিজ মন্ত্রণালয়ের নানা উদ্যোগ তুলে ধরে তিনি বলেন, জেলাগুলোতে নদ-নদী দখল ও দূষণমুক্ত করতে জেলা প্রশাসকদের উদ্যোগী হতে বলা হয়েছে। পাহাড়ের তালিকাটা পেয়েছি আমরা পেয়েছি। পাহাড় কাটলে আগে শ্রমিকদের ধরা হতো, এখন থেকে মালিককে ধরা হবে।
বন দখলমুক্ত করার কাজ ধরেছি উল্লেখ করে উপদেষ্টা বলেন, মধুপুর শালবনের সীমানা নির্ধারণ করে এর আগের রূপ ফিরিয়ে আনা হবে। বৈঠকে সংরক্ষিত বনের বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বন থাকে ডিসিদের নামে। বন উদ্ধারে ডিসিদের তাগিদ দেওয়া হয়েছে। বনের পাশাপাশি দ্বীপ যেমন- সেন্টমার্টিন নিয়েও আলোচনা হয়েছে। জাফলংকে ইকো-ট্যুরিজম করা হবে।
পলিথিন ও প্লাস্টিকের ব্যবহার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দুই কোটি পলিথিন ঢাকা শহরে প্রতিদিন ব্যবহার হয়। কার বাসায় চটের ব্যাগ নেই। পুরোনো কাপড় দিয়েও ব্যাগ তৈরি করা যায়। সুপারশপ তো এখন আর বলে না যে, বিকল্প দেন। আমাদের অভ্যস্ততার বিষয় আছে। পলিথিন বন্ধ না হলে সন্তান ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এখানে সরকার সফল না ব্যর্থ- সেটা দেখার সুযোগ নেই।
তিনি বলেন, সিঙ্গেল ইউজ প্লাস্টিক ব্যবহার বন্ধ করার বিষয়ে বলেছি। এখনো মানুষ গাড়িতে প্লাস্টিকের পানির বোতল ব্যবহার করে। এটার তো দরকার নেই। ব্যানার ব্যবহার করা হয় নানাভাবে, এটা বাদ দিতে হবে। প্লাস্টিক উৎপাদন বন্ধ করতে গিয়ে দুইবার অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটেছে। অফিসারের গায়ে হাত তোলা হয়েছে। এখানে চ্যালেঞ্জ আছে। কিন্তু জেলাগুলোতে সুযোগ আছে। আমরা হাইওয়েতে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।
পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের প্রসঙ্গে উপদেষ্টা বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিরুদ্ধে মানুষের অনেক অভিযোগ। আগে আমিও করতাম। এসব নিস্পত্তি করতে জেলা প্রশাসকদের বলেছি। নদ- নদীর নাব্যতা কমে যাচ্ছে বলে তারা জানিয়েছেন।
তিস্তা ইস্যুতে মহাপরিকল্পনা নেই- উল্লেখ করে তিনি বলেন, চায়না একটা প্রস্তাব দিয়েছিল, কিন্তু সেটা ফিজিবল না। আমরা দুই বছরের জন্য মেয়াদ বাড়িয়েছি। এটা বাস্তবায়ন করতে তিস্তা পারের মানুষের কথা শুনতে হবে। আমরা চায়নাকে দুই বছর মেয়াদ বাড়িয়ে দিয়েছি। কিন্তু এটা দীর্ঘ প্রসেস। তাই আমরা বলেছি যে, তাদের পরিকল্পনা যেন অক্টোবর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে জমা দেয়।
ঢাকার খাল সিটি করপোরেশনের অধীনে উল্লেখ করে বলেন, খালের মধ্যে কাঁচা পাকা বাজার করার আর সুযোগ নেই। সিটি করপোরেশন এটা কবে উদ্যোগ নিয়ে বাস্তবায়ন করবে- সেটা দেখার বিষয়।