শহিদ শামসুজ্জোহার সমাধিতে রাবিসাস’র শ্রদ্ধা নিবেদন
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:২৪
ড. শহিদ সৈয়দ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি
রাবি: শিক্ষক দিবস উপলক্ষ্যে ড. শহিদ সৈয়দ মোহাম্মদ শামসুজ্জোহার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতি (রাবিসাস)।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ নজরুল ইসলাম প্রশাসন ভবনের সামনের ড. জোহার সমাধিতে শ্রদ্ধা জানান সংগঠনের সদস্যরা।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দিনটির তাৎপর্য নিয়ে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে সঞ্চালনা করেন রাবিসাসের কোষাধ্যক্ষ আসিফ আজাদ সিয়াম। এ সময় বক্তব্য দেন রাবিসাসের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ইরফান তামিম।
ড. শহিদ শামসুজ্জোহার আত্মদানের উল্লেখযোগ্যভাবে জাতীয় স্বীকৃত হয়নি উল্লেখ করে রাবিসাসের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইরফান তামিম বলেন, ‘ড. জোহার শাহাদাৎয়ের ৫৬ বছর পেরোলেও জাতীয়ভাবে তার স্বীকৃতি পাওয়া যায়নি। এর পেছনে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনেরও সদিচ্ছার ঘাটতি রয়েছে। বিচ্ছিন্নভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এই দিনটিকে জাতীয় দিবসের দাবি জানালেও ঐক্যবদ্ধভাবে উপস্থাপন করতে পারেনি। এই দিনটার জাতীয় স্বীকৃতি পেতে রাষ্ট্রের সদিচ্ছার পাশাপাশি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, শিক্ষক-শিক্ষার্থী, সাংবাদিকসহ সংশ্লিষ্ট সকলের ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে আসতে হবে।’
এ সময় সংগঠনের কোষাধ্যক্ষ আসিফ আজাদ সিয়াম বলেন, ‘৬৯ এর গণঅভ্যূত্থানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সড়ক অবরোধের সিদ্ধান্ত নিলে পাকিস্তানি আর্মি তাদের ওপর গুলি চালানোর সিদ্ধান্ত নেয়। শিক্ষার্থীদের বাচাতে ড. শামসুজ্জোহা এগিয়ে আসলে তার বুকে গুলি চালায় পাক বাহিনী। এটা নিঃসন্দেহে শিক্ষক ও ছাত্রের সম্পর্কের উৎকৃষ্ট উদাহরণ। আমরা বর্তমানে এমন উদার শিক্ষকের দেখা পাই না।’
এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন রাবিসাসের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজিদ হোসেন, দফতর সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম সুমন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মীর কাদির ও ক্রীড়া সম্পাদক আবু আইউয়ুব আনসারী সাজ্জাদ প্রমুখ।
শহিদ শামসুজ্জোহা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক (তৎকালীন রিডার) ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের দায়িত্ব পালনকালে ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৬৯ সালে আইয়ুববিরোধী আন্দোলনের সময় পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর আক্রমণের মুখে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের রক্ষা করতে গিয়ে শহিদ হন তিনি। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে তিনি দেশের জনগণকে পাকিস্তানবিরোধী আন্দোলনে দৃঢ়ভাবে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি, ছাত্রনেতা আমানুল্লাহ আসাদুজ্জামান, ১৫ ফেব্রুয়ারি, সার্জেন্ট জহুরুল হক এবং ১৮ ফেব্রুয়ারি অধ্যাপক শহিদ শামসুজ্জোহার মৃত্যু দেশবাসীকে স্বাধীনতা আন্দোলনের দিকে ধাবিত করে। শামসুজ্জোহাকে দেশের প্রথম শহিদ বুদ্ধিজীবী হিসেবে গণ্য করা হয়। ভাষা সংগ্রামের সময়ও তিনি প্রত্যক্ষভাবে আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন।
সারাবাংলা/এইচআই