Saturday 22 Feb 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

এজিএমে সুরক্ষা তহবিলের দাবি আইএসপিএবি সদস্যদের

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট 
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:৫৫ | আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:২৩

আইএসপিএবি’র ২২তম বার্ষিক সাধারণ সভা

ঢাকা: দেশের ইন্টারনেট সেবাদাতাদের সংগঠন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএসপিএবি)’কে আরও সদস্যবান্ধব হতে হবে। সদস্যদের সুরক্ষা নিয়ে আরও বেশি মনযোগ দেওয়া দরকার। সদস্যদের সুরক্ষার জন্য আলাদা ফান্ডের ব্যবস্থা করতে হবে বলে আইএসপিএবি’র ২২তম বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) বক্তারা বলেন।

তারা আরও বলেন, মোবাইল অপারেটরদের আইএসপি হওয়ার মনোভাব ও স্যাটেলাইট ইন্টারনেটের আগমনের কঠিন সময়ে প্রান্তিক পর্যায়ের আইএসপিদের সুরক্ষা দিতে হবে। সব মিলিয়ে বিটিআরসি যেন আইএসপি’র কোনো একটি গোষ্ঠীর হয়ে কাজ না করে তা নিশ্চিত করতে হবে।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর মহাখালীর রাওয়া ক্লাবে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আর্থিক প্রতিবেদন তুলে ধরেন আইএসপিএবির সভাপতি ইমদাদুল হক। সর্বসম্মতিক্রমে তা পাশ হয়। আগামী বছরের বাজেটসহ সংগঠনের আরও বেশ কিছু প্রতিবেদন সদস্যদের ভোটে পাশ হয়।

এদিকে আইএসপিএবির’ এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আইএসপিএবি’র সভাপতি ইমদাদুল হক আলোচ্যসূচি অনুযায়ী ২১তম বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণী অনুমোদনের বক্তব্য রাখেন। পরে উপস্থিত সদস্যদের আপত্তি না থাকায় ২১ তম বার্ষিক সাধারণ সভার কার্যবিবরণী কণ্ঠভোটে অনুমোদন হয়। সভাপতির সম্মতিক্রমে মহাসচিব নাজমুল করিম ভূঁঞা ২০২৪ সালের বার্ষিক কর্মকাণ্ডের বিবরণী এবং কোষাধ্যক্ষ মো. আসাদুজ্জামান সুজন নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পেশ করার পাশাপাশি আগামী বছরের জন্য আর্থিক বাজেট কর্মপরিকল্পনা উপস্থাপন করেন। সদস্যদের বিস্তারিত আলোচনা ও মতামতের ভিত্তিতে ২০২৪ সালের কার্যক্রম, নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুমোদন এবং ২০২৫ সালের নিরীক্ষক নিয়োগ ও আগামী বছরের জন্য অ্যাসোসিয়েশনের বাজেট অনুমোদিত হয়।

বিজ্ঞাপন

আর্থিক প্রতিবেদন তুলে ধরার সময় আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, ‘গত এক বছর আমাদের তেমন কোনো কার্যক্রম ছিল না। জাতীয় নির্বাচন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের প্রভাবে তেমন কোনো কাজ হয়নি। কিছু সাধারণ ট্রেনিং পোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়েছে।’

আরও পড়ুন-‘মোবাইল অপারেটরদের আইএসপি লাইসেন্স দিলে মেনে নেব না’

তিনি বলেন, ‘নিজস্ব অফিস করতে গিয়ে গত বছর পর্যন্ত ৪ কোটি টাকা ঋণ ছিল। গত এক বছরে ৩ কোটি টাকার বেশি পরিশোধ করেছি। এটি একটি বড় অর্জন। এখন সংগঠনের ঋণের পরিমাণ মাত্র ৯০ লাখ টাকা।’

আইএসপিএবি’র সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক

সংগঠনের মহাসচিব নাজমুল করিম ভূঁইয়া বলেন, ‘আমরা ১১ কোটি ২০ লাখ টাকা দিয়ে আইএসপিএবির অফিস কিনেছি। আইএসপিবির আয়ের বড় উৎস হচ্ছে মেলা ও খেলার মতো অনুষ্ঠান। সেখান থেকে যে আয় হয়, তা দিয়েই বাকি কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকি। আমরা আমাদের সদস্যদের পাশে থাকি না, কথাটি ঠিক নয়। আমরা সব সময় আইএসপি’র পাশে ছিলাম। যখন কেউ কোনো চিঠি দিয়েছে, আমরা কিছু না কিছু হলেও অর্থ সহায়তা দিয়েছি।’

মুক্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে আইএসপিএবির এক সদস্য বলেন, ‘সবই ঠিক আছে, কিন্তু আগামী বছরের বাজেটে আমাদের সদস্যের কোনো সুরক্ষার বাজেট নেই। আমরা গণতান্ত্রিকভাবে আপনাদের নির্বাচিত করতে পারিনি, তাই আপনারা আমাদের কথা চিন্তা করেননি। আশা করছি পরবর্তীতে আমাদের কথা চিন্তা করা হবে।’

অপর এক সদস্য বলেন, ‘আশা করছি বাজেট সংশোধন করে সদস্যদের সুরক্ষার জন্যে ফান্ড রাখা হবে। সংগঠনের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মনোভাব সদস্য বান্ধব নয়। তাদের সেই মনোভাব পরিবর্তন করতে হবে।’

অন্য এক সদস্য বলেন, ‘দেশে স্যাটেলাইট ইন্টারনেট আসছে। এটি আমাদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে। আবার মোবাইল অপারেটরাও আইএসপি হতে চাচ্ছে। ফলে সামনে কঠিন সময়। প্রযুক্তির উন্নয়নে আমাদের আরও বেশি ট্রেনিং পোগ্রামের আয়োজন করা উচিত।’

অপর এক আইএসপি সদস্য বলেন, ‘প্রান্তিক পর্যায়ের আইএসপিদের রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এসওএফ ফান্ড ব্যবহার হচ্ছে না। রিক্রিয়েশন সব সংগঠন থেকেই হতে পারে। কিন্তু আইএসপির কর্মীদের জন্যে সামাজিক সুরক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে। মোবাইল অপারেটররা আইএসপি লাইসেন্স নিচ্ছে, তখন ছোট আইএসপিরা আর থাকবে না।’

অন্য এক সদস্য বলেন, ‘যে কোনোভাবে পুরাতন লাইসেন্স বাতিলের বিষয়ে আমাদের সোচ্চার থাকব। আপনারা আমাদের (সদস্য) নিয়ে বিটিআরসিতে যাবেন। আপনারা মিটিং করবেন, আমরা নিচে থাকব। রিসেলারদের কারণে আমরা যারা লাইসেন্সধারী তারা কাজ করতে পারি না। রিসেলার যদি বন্ধ করি আমরা লাইসেন্সধারী আইএসপিরা উপকৃত হবো।’

এসব বিষয়ে উত্তর দিতে গিয়ে আইএসপিএবি সভাপতি ইমদাদুল হক বলেন, ‘সদস্যদের সুরক্ষার জন্য আমরা একটি কমিটি করে দেব। কিবরিয়া ও জীবনসহ আরও কয়েকজন এই কমিটিতে থাকবে। আপনারা প্রস্তাব দেবেন সুরক্ষার অর্থ কোথায় থেকে আসবে ও কিভাবে সুরক্ষা দেব।’

সদস্যদের অপর এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘বিটিআরসি সবার কথা আলাদা আলাদা শুনতে চাচ্ছে। আইনে আছে আমরা রিসেল করব না। কিন্তু তা মানছি না। মাত্র ১০ শতাংশ সদস্য রিসেল করছে না। বিটিআরসি সব লেয়ারের কথা আলাদা আলাদা শুনছে। আগামীকালও বিটিআরসিতে আমাদের বৈঠক আছে। সেখানে এসব বিষয় তোলা হবে।’

বার্ষিক সাধারণ সভায় পরামর্শ দিয়ে আইএসপিএবি’র সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক বলেন, ‘৫০০ টাকার প্যাকেজে আমরা যে ভ্যাট দিই, তা গ্রাহকের কাছ থেকে নেওয়া হয় না। এই টাকা আমাদের পকেট থেকে যায়। এক সঙ্গে আমরা ওই ভ্যাট দিলে সরকারকে বলতে পারবো আমরা এতো টাকার ভ্যাট দিয়েছি। সেটি গর্বের হতো। বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।’

সারাবাংলা/ইএইচটি/এইচআই

আইএসপিএবি ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ সাইফুল ইসলাম সিদ্দিক

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর