Thursday 20 Feb 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

প্রত্যাশা-চ্যালেঞ্জকে সামনে রেখে শেষ হলো জেলা প্রশাসক সম্মেলন

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১০:৩৮ | আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৩০

ঢাকা: পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে হয়রানীমুক্তভাবে সরকারের সেবা জনগনের কাছে পৌঁছে দেওয়া, জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নানা চ্যালেঞ্জ ও নীতি নির্ধারকদের দিক নির্দেশনা নিয়ে শেষ হলো তিনদিনের জেলা প্রশাসক সম্মেলন। মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ জানিয়েছেন, সম্মেলন থেকে যে দিক নির্দেশনা জেলা প্রশাকরা পেয়েছেন, সেসব তাদের কাজকে এগিয়ে নিতে সহায়ক হবে।

মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) শেষ হয় জেলা প্রশাসক সম্মেলন। এরআগে রোববার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে শুরু হয় জেলা প্রশাসক সম্মেলন। প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের শাপলা হলে ‘জেলা প্রশাসক সম্মেলন-২০২৫’ উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা জেলা প্রশাসকদের বিভিন্ন নির্দেশনা দেন। প্রধান উপদেষ্টার উদ্বোধন শেষে দুপুরের পর রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে শুরু হয় মূল অধিবেশন। আর মঙ্গলবার তৃতীয় ও শেষ দিনে মোট ২২টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে ১৪টি কার্য-অধিবেশন হয়। সব মিলিয়ে এবারের জেলা প্রশাসক সম্মেলনে মোট ৩৪টি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলন উপলক্ষে জেলা প্রশাসক ও বিভাগীয় কমিশনারদের কাছ থেকে ৩৫৪টি প্রস্তাব পাঠানো হয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে।

বিজ্ঞাপন

কার্য-অধিবেশনগুলোতে এ সব প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এগুলো ছাড়াও ডিসিরা তাৎক্ষণিক বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টাদের কাছে।

তিন দিনের সম্মেলনে জেলা প্রশাসকরা তাদের প্রস্তাব, চাওয়া- পাওয়া যেমন তুলে ধরার সুযোগ পেয়েছেন, তেমনি মাঠ পর্যায়ে সেবা দিতে নানা দিক নির্দেশনাও পেয়েছেন। প্রথম দিন আটটি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে তিনটি কার্য-অধিবেশন হয়। এদিন সন্ধ্যায় বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধান উপদেষ্টা বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সভা করেন। এরপর সেখানে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে ডিসি এবং বিভাগীয় কমিশনাররা নৈশভোজ করেন। দ্বিতীয় দিন সন্ধ্যায় সুপ্রিম কোর্ট ভবনে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও দিক-নির্দেশনা গ্রহণ করেন জেলা প্রশাসকরা। এরপর জাতীয় সংসদে স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় এবং নৈশভোজ করেন ডিসিরা। দ্বিতীয় দিন ২১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে আটটি অধিবেশন হয়।

বিজ্ঞাপন

জেলা প্রশাসক সম্মেলনে এবার আলোচনায় গুরুত্ব পেয়েছে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোর কার্যক্রম জোরদার করা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ভূমি ব্যবস্থাপনা, অবৈধ বনভূমি উদ্ধার, পরিবেশ রক্ষা, ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম, স্থানীয় পর্যায়ে কর্ম-সৃজন ও দারিদ্র্য বিমোচন কর্মসূচি বাস্তবায়ন, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনি কর্মসূচি বাস্তবায়ন। আরো ছিলো তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহার এবং ই-গভর্নেন্স, শিক্ষার মান উন্নয়ন ও সম্প্রসারণ, স্বাস্থ্যসেবা ও পরিবার কল্যাণ, পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ রোধ, ভৌত অবকাঠামোর উন্নয়ন এবং উন্নয়নমূলক কার্যক্রমের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও সমন্বয়ে বিষয়গুলোকে আলোচনার জন্য প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরিশাল বিভাগের একজন জেলা প্রশাসক সারাবাংলাকে বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে জনগন যেন সরকারের কোনো সেবা থেকে বঞ্চিত না হয় সে বিষয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে তাদের। নির্বাচনকে সামনে রেখে কোনো বিশৃঙ্খলা যাতে না ঘটে সে বিষয়ে সজাগ থাকতে বলা হয়েছে। এছাড়া রাজনীতির উর্দ্ধে থেকে সকলকে কাজ করতে বলা হয়েছে।

সম্মেলন শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শেখ আব্দুর রশিদ সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে সকল জেলা প্রশাসককে বলা হয়েছে, সামনে চ্যালেঞ্জ আছে, সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। সেজন্য যাতে তারা যেন প্রস্তুত থাকেন। তিনি বলেন, যে লক্ষ্য জেলা প্রশাসক সম্মেলনের আয়োজন করা হয় তা পূরণ হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, আমরা আশা করি ডিসিরা এই সম্মেলন থেকে ফিরে আরও উজ্জীবিত হয়ে কাজ করবেন।

সরকারের নীতি-নির্ধারক ও জেলা প্রশাসকদের মধ্যে সামনা-সামনি মতবিনিময় এবং প্রয়োজনীয় দিক-নির্দেশনা দেওয়ার জন্য প্রতিবছর ডিসি সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। বিগত বছরগুলোতে ৪ দিন ব্যাপী এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হলেও এবার তিনদিনব্যাপী হলো।

সারাবাংলা/জেআর/এমপি

জেলা প্রশাসক প্রধান উপদেষ্টা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর