বসন্ত মৌসুমে ক্ষেত ভরা ফুল, ব্যস্ত চাষীরা
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৪৪ | আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:২৫
ঢাকা: প্রকৃতিতে এখন বিরাজ করছে ঋতুরাজ বসন্ত। আর তাই ফাগুনের হাওয়ায় দুলছে রং বাহারি নানা জাতের ফুল। বাগান ভরা ফুলের পসরা নিয়ে ব্যস্ত ফুল চাষিরা।
সাভারের গেন্ডা এলাকার, গোলাপ বাগান এলাকায় সরেজমিনে দেখা গেলো পুরো ফুলবাগান যেন হয়ে উঠেছে শিল্পীর তুঁলিতে আঁকা অনিন্দ্যসুন্দর ছবি। গাঁদা, গোলাপ, জারবারা, স্টার, রজনীগন্ধা, চন্দ্রমল্লিকা, গ্লাডিওলাসসহ নানা জাতের ফুল সংগ্রহের কাজ চলে টানা দুপুর পর্যন্ত। ভোরের আলো ফোটার আগেই চাষিরা নেমে পড়েন ক্ষেতে। নানা রকমের ফুল সংগ্রহের কাজ চলে টানা দুপুর পর্যন্ত।
এরপর ফুলগুলো থেকে আগাছা সরানো হয়। ফুলের ধরণ অনুযায়ী গুচ্ছ তৈরি করা হয়। কিছু ফুল আবার মিক্সড করে তৈরি করা হয়। এরপর বাজারে পাইকারদের কাছে বিক্রি করা হয়।পরবর্তীতে এই ফুলগুলো হাত বদলে পৌঁছে যায় ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনাসহ দেশের বিভিন্ন শহরে।
দীর্ঘ ৩০ বছর ধরে ফুলের চাষ করেন জাহাঙ্গীর হোসেন। সারাবাংলাকে তিনি জানান, ‘আমাদের বাগানে ফুল ফুটলেই ফুল সাপ্লাই দেই। একবার ফুল তোলা হলে, আবার নতুন ফুল ফুটতে কিছু সময় নেয়। তবে আগেই বাজার ডাক দেই। কোনো পাইকার ব্যবসায়ীদের ফুলের চাহিদা থাকলে তখন সেগুলো তোলা হয়।’

চারদিকে রঙ-বেরঙের ফুলের সমারোহ। ছবি: সারাবাংলা
তিনি জানান, ‘ফাল্গুন মাস আসলেই ফুল বেশি ফোটে। আর ফুল ফুটতেও অনেক সময় অপেক্ষা করতে হয় না। আর বসন্ত ও বৈশাখেই বেশি লাভ হয়। এর বাইরে, বিয়ে, গাঁয়ে হলুদ এসব উৎসবের জন্য আমাদের অপেক্ষা করতে হয়।’
স্টার ফুলের চাষীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেলো, চলতি মৌসুমে গদখালী এলাকায় প্রায় ৫ হাজার কৃষক দেড় হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন প্রজাতির ফুলের চাষ করেছেন। তবে ফেব্রুয়ারি মাসে বসন্ত বরণ, বিশ্ব ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসকে ঘিরেই ফুল বিক্রি বেশি হয়। এ জন্য, এই সময়টায় ব্যস্ততা বেশি থাকে।
ফুল চাষী সেলিম মিয়া সারাবাংলাকে জানান, ‘আমি আমার ৩ বিঘা ক্ষেতে গোলাপ ও ২ বিঘাতে গাঁদা চাষ করেছি। ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবসে এই গোলাপ ও গাদা ফুল বিক্রি করবো। এজন্য এখন ফুলের পরিচর্যা করছি। বিশেষ করে ফুল ধরে রাখতে এবং পোকামাকড়ের হাত থেকে রক্ষা করতে ভিটামিন ও কীটনাশক ব্যবহার করছি। আশা করছি ভালো দামে ফুল বিক্রি করতে পারবো।’
আরেক ফুল চাষী আলী মোহাম্মদ বলেন, ‘আমার ২ বিঘা ৪ কাটা গোলাপ বাগান রয়েছে। আমার বাগানের গোলাপগুলো লংস্টিক এবং লাল, সাদা, ও হালকা গোলাপি রঙের। এখন ভিটামিন স্প্রে করছি। ২১ফেব্রুয়ারি ফুলের দাম বাড়বে। আশা করছি, এক একটি গোলাপের পাইকারি দাম ২০ থেকে ৩৫ টাকা করে পাব।’
এদিকে রকমারি ফুলের সমারোহে প্রকৃতি এক অপরূপ সৌন্দর্য ধারণ করেছে। তাই প্রতিদিন অনেক দর্শনার্থীরা ফুল বাগানে ঘুরতে আসেন। বিবিধ ফুলের সঙ্গে নিজেদের ফ্রেম বন্দি করেন। দর্শনার্থীরা যাতে ফুল বাগান দর্শণ করতে পারে, সেজন্য আলাদা আইল করা আছে। কেউ সরেজমিনে থেকে ফুল কিনতে চাইলে, তাও বিক্রি করা হয়। সবকিছু মিলে বসন্ত মৌসুমে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন ফুল চাষীরা।
সারাবাংলা/এফএন/এমপি