বাজারে তেল আছে, কারসাজি করছেন বিক্রেতারা: ভোক্তা অধিদফতর
১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:৫৪ | আপডেট: ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৭:৫৬
চট্টগ্রাম ব্যুরো: বাজারে বোতলের সয়াবিন তেলের সরবরাহ থাকলেও বিক্রেতারা কারসাজি করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছেন বলে জানিয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের কর্মকর্তারা।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নগরীর কাজির দেউড়ি কাঁচা বাজারে অভিযান চালায় অধিদফতরের একটি টিম।
অভিযানে বোতলের সয়াবিন তেল বেশি দামে বিক্রির অভিযোগে একটি মুদি দোকান ও মূল্যতালিকা না রাখার অভিযোগে চারটি মাংসের দোকানসহ মোট ছয় প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছে ভোক্তা অধিদফতরের কর্মকর্তারা।
এর মধ্যে সাদিয়া ডিপার্টমেন্টকে ছয় হাজার, মেসার্স জীবন গ্রোসারিকে আট হাজার, মিজান মাংসের দোকান, ইকবাল মাংসের দোকান, মায়ের দোয়া মাংসের দোকান ও কাশেম মাংসের দোকানের প্রতিটিকে পাঁচ হাজার করে মোট ৩৪ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
খুচরা ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বারবার ছোট দোকানদার ও ব্যবসায়ীদের টার্গেট করে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। বড় প্রতিষ্ঠান ও তেল সরবরাহকারীরা ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তারা যেভাবে মূল্য নির্ধারণ করে এবং শর্ত বেঁধে দেয় সেভাবে সাধারণ ক্রেতাদের পণ্যগুলো তাদের বিক্রি করতে হয়।
অভিযান শেষে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক ফয়েজ উল্লাহ সাংবাদিকদের বলেন, ‘বর্তমানে একটি বিষয় শোনা যাচ্ছে যে, বাজারে তেল পাওয়া যাচ্ছে না। আমরা এখানে এসে সব প্রতিষ্ঠানে দেখেছি তেল পর্যাপ্ত আছে। একটি প্রতিষ্ঠানে তেলে বোতলের ওপর প্রকৃত মূল্য মুছে দিয়ে বাড়তি দামে বিক্রির প্রমাণ আমরা পেয়েছি। আমরা ওই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করেছি।’
‘আমরা একটি খুচরা দোকানে গিয়েও সাড়ে ৬০০ লিটার তেল পেয়েছি। এটা থেকে স্পষ্ট যে, বাজারে প্রচুর পরিমাণে তেল সরবরাহ হচ্ছে। বিক্রেতাদের দায়িত্ব হচ্ছে কোনো প্রকার কারচুপি না করে এ তেল বিক্রি করা। কোনো প্রকার কারচুপি করার চেষ্টা করলে আমরা আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।’
বিক্রেতাদের অভিযোগ, অনেক প্রতিষ্ঠান তেলের সঙ্গে অন্য পণ্য নিতে বাধ্য করছে- সাংবাদিকরা এ বিষয়ে জানতে চাই তিনি বলেন, ‘যদি এমন করে থাকে তাহলে আমরা বিক্রেতাদের বলব, আপনারা আমাদের জানান। আমরা আইনগত ব্যবস্থা নেব। একটু আগেও একজন এ অভিযোগ করেছে। আমরা প্রতিষ্ঠানের নাম ও ঠিকানা চেয়েছি। তারা দিতে পারেনি। এটা তারা কেন দিতে পারেনি বা কেন দেয়নি আমি জানি না।’
তেল নেই, নাকি কারসাজি? এমন প্রশ্নে ফয়েজ উল্লাহ বলেন, ‘তেল আছে। একটি খুচরা দোকানে ৬৫০ লিটার তেল আছে। এখানে বোঝা যাচ্ছে, কোনো ক্রেতা যদি তেল না পায় তাহলে এটা কারসাজি। একজন ভোক্তা বাজার করতে ডিলারের কাছে যাবে না। যাবে খুচরা বিক্রেতার কাছে। কারচুপি তো খুচরা বিক্রেতায় করছেন। সরবরাহ স্বাভাবিক আছে।’
মেসার্স জীবন গ্রোসারি নামে এক মুদির দোকানের সত্ত্বাধিকারী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বলির পাঠা হয় ছোট দোকানদাররা। বড়দের কেউ ধরে না। যারা আমাদের কাছে বিক্রি করে তাদের মনিটরিং করা হয় না। তেল তো অনেকদিন ধরেই সাপ্লাই দেওয়া হয়নি। এখন দেওয়া শুরু হয়েছে। আমি যদি জিনিস না পাই, তাহলে তো আমাকে স্টক করে রাখতে হবে। এখন কাস্টমার এসে যদি পণ্য খুঁজে আমি কোত্থেকে দেব। আমি যদি স্টকে না রাখি তাহলে মাল কীভাবে বিক্রি করব।’
সারাবাংলা/আইসি/পিটিএম