Friday 21 Feb 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

দেশীয় লবণ শিল্পকে বাঁচাতে চায় না মিল মালিক সিন্ডিকেট

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৪:১৪ | আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৫:৫৪

লবণের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি: সারাবাংলা

ঢাকা: কক্সবাজার লবণ চাষী ও ব্যবসায়ী সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি মোহাম্মদ জামিল ইব্রাহিম বলেছেন, দেশীয় লবণ শিল্পকে বাঁচাতে চায় না মিল মালিক সিন্ডিকেট। ফলে চক্রান্তের শিকার হয়ে লবণ চাষ থেকে প্রকৃত লবণ চাষীরা নিজেদেরকে ধীরেধীরে সরিয়ে নিচ্ছেন। এ জন্য সাধারণ মানুষকে উচ্চ মূল্যে লবণ ক্রয় করতে হচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) সকালে রাজধানীর জাতীয় প্রেস ক্লাবে ইন্ডাস্ট্রিয়াল সল্ট (শিল্প লবণ) নাম দিয়ে লবণ আমদানী বন্ধ করে দেশীয় লবণ শিল্পকে রক্ষা করতে মাঠ পর্যায়ে প্রান্তিক চাষীদের উৎপাদিত লবণের ন্যায্য মূল্য নিশ্চিতের দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলে তিনি।

বিজ্ঞাপন

জামিল ইব্রাহিম বলেন, ‘লবণ নীতি অনুসরণ করে দেশীয় লবণ শিল্পকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা ও চাষিদের রক্ষার জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আবেদন জানাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘দেশের প্রায় ৯৫ শতাংশ লবণ উৎপাদন হয় কক্সবাজার জেলায় টেকনাফ, কক্সবাজার সদর, ঈদাগাঁও, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, পেকুয়া, চকরিয়া উপজেলায় ৫ শতাংশ লবণ উৎপাদন হয় চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায়। গত মৌসুমে প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকূলে থাকায় দেশীয় উৎপাদিত লবণ দেশের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হয়েছে। বিসিকের তথ্য মতে গত অর্থবছরে উৎপাদিত লবণ চাহিদা মিটিয়ে বর্তমানে আরও ২ লাখ ২২ হাজার মেট্রিক টন (১৪/০১/২০২৫) পর্যন্ত মজুদ আছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘চলতি মৌসুমে প্রাকৃতিক পরিবেশ অনুকূলে থাকায় লবণ উৎপাদন প্রক্রিয়া ভালোভাবেই চলছে। প্রায় ৬৫ হাজার একর জমিতে লবণ উৎপাদন হয়, যা ক্রমান্বয়ে আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। দেশীয় লবণ শিল্পের সঙ্গে প্রায় ৬৫ হাজার চাষী সক্রিয়ভাবে জড়িত।’

বিজ্ঞাপন

জামিল ইব্রাহিম বলেন, ‘আমরা লবন চাষী ও ব্যবসায়ীরা খুবই উদ্বিগ্ন অবস্থায় দিন কাটাচ্ছি। চাষীরা চলতি মৌসুমে দেশে লবণ উৎপাদনের অতীতের রেকর্ড ভাঙ্গতে চাইলেও লবণ মিল মালিকদের সিন্ডিকেট লবণ উৎপাদন কমানোর জন্য চাষীদের সাথে যুদ্ধে নেমেছে। যাতে লবণ চাষীরা চলতি মৌসুমে লবণ চাষের প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলে এবং লবণ উৎপাদনে ঘাটতি তৈরি হয়। এরই অংশ হিসাবে চলতি মৌসুমের শুরুতেই লবণ মিল মালিকেরা বস্তা প্রতি (প্রতি বস্তা ৮০ কেজি) ১৪০০ টাকা থেকে দফায় দফায় কমাতে কমাতে বর্তমানে ৬৪০ টাকায় নামিয়ে এনেছে। যা মিল মালিকদের ক্রয়মূল্য প্রতি কেজি ৮ টাকা। কৃষকদের মাঠ পর্যায়ে প্রতি কেজি লবণ উৎপাদন খরচ প্রায় ১৫ টাকা হলেও মাঠ পর্যায়ে প্রান্তিক চাষীরা লবণ বিক্রি করছে প্রতি কেজি ৫ টাকা ৫০ পয়সা যা খুবই বেদনাদায়ক।’

তিনি বলেন, ‘মাঠ পর্যায়ে লবণের দাম এতই কম হলেও বাজারে বিভিন্ন কোম্পানী (মোল্লা, এসিআই, ফ্রেশ, সিটি গ্রুপ, প্রাণ, এস.এ, কনফিডেন্স সহ আরও অনেক মিল মালিক)-এর প্যাকেটজাত লবণ বিক্রি হচ্ছে প্রতি কেজি ৪০-৪৫ টাকায়। অন্যদিকে লবণ মিল মালিকরা সিন্ডিকেট করে নিজেদেরকে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জনের জন্য দেশীয় লবণ শিল্পকে ধ্বংস করার জন্য ইন্ডাস্ট্রিয়াল লবণের নাম দিয়ে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সংশ্লিষ্ট সংস্থাকে নিয়ন্ত্রণ করে লবণ আমদানির এলসি অনুমোদন করার পায়তারা করছে। যদি তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন হয় বাংলাদেশের একমাত্র স্বনির্ভর লবণ শিল্পের ধ্বংস নিশ্চিত।’

অসাধু সিন্ডিকদের দেশ বিরোধী চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র রুখে দিয়ে কক্সবাজার জেলার অন্যতম প্রাকৃতিক শিল্পকে রক্ষা করে প্রায় ২৫ লাখ জনগোষ্ঠির অর্থনৈতিক চালিকা শক্তিকে উত্তোরত্তর সচল রাখতে দ্রুত সময়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রধান উপদেষ্টার দৃষ্টি আকর্ষণের সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি।

সারাবাংলা/এমএইচ/এমপি

দেশীয় লবণ শিল্প লবণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর