‘দ্রুত নির্বাচন দিয়ে অস্থিরতা দূর করুন’
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:০৮ | আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:০০
ঢাকা: বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আজ পুরো জাতি অস্থিরতার মধ্যে আছে। নির্বাচন দিয়ে অস্থিরতা দূর করুন। আর একটি রাজনৈতিক দলকে বলব, এমন কিছু বলবেন না, যাতে দেশ আবারও অস্থির হয়ে ওঠে।
তিনি বলেন, সংস্কারের কথা বলে অনেকে নির্বাচন পেছানোর কথা বলছেন। সংস্কার সাধারণ মানুষ কয়জন বোঝে? দুই বেলা ভাত, মাথার গোঁজার ঠাই, চিকিৎসা, শিক্ষা এবং শান্তি চায় মানুষ। জনগণের কাছে এই মৌলিক অধিকারগুলোই হচ্ছে সংস্কার।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কুমিল্লার লাকসাম স্টেডিয়ামে রাষ্ট্র সংস্কারে বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে এক এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
লাকসাম উপজেলা, পৌরসভা ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা বিএনপি আয়োজিত জনসভায় সভাপতিত্ব করেন বিএনপির শিল্পবিষয়ক সম্পাদক মো. আবুল কালাম। জনসভার শুরুতে ৩১টি কবুতর উড়িয়ে বিএনপির ৩১ দফাকে স্বাগত জানানো হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘দয়া করে দেশকে আর অস্থিতিশীল করবেন না, নৈরাজ্য সৃষ্টি করবেন না। সম্প্রতি ফেসবুক-ইউটিউবে দেখা যাচ্ছে, বিদেশে বসেই কেউ কেউ সব সংগ্রাম করেছে। আমরা কিছুই করিনি। বিদেশে বসে অনেক কিছুই লেখা যায়, বলা যায়।’
তিনি বলেন, ‘দেশকে আবার অস্থির করার পাঁয়তারা চলছে। আমরা চাই, এই অন্তবর্তী সরকার সফল হোক। কেননা ছাত্রজনতার রক্তের বিনিময়ে এ সরকার গঠিত হয়েছে। বাংলাদেশ একটি ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। আজ একটি ফ্যাসিবাদ সবকিছু ধ্বংস করে দিয়েছে। সেখান থেকে ছাত্র-জনতার সমন্বয়ে আমরা বিদায় করেছি। এখন একটি সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এখন এ সরকারকে সমর্থন না দিলে কাজ করতে পারবে না। তাই সমর্থন দিয়ে যাচ্ছি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা ভোটের কথা কেন বলছি। নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে জনগণ থাকে। অনির্বাচিত সরকারের সঙ্গে জনগণ থাকে না। তাই যতদ্রুত সম্ভব সংস্কার করে নির্বাচন দেন। ৭১ সালে দেশ স্বাধীন করেছিলাম। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগ ভালো কিছু উপহার দিতে পারে নাই। তারা সংসদ, বিচার বিভাগ, নির্বাচনি ব্যবস্থা, ভোটাধিকার, অর্থনীতি সব ধ্বংস করে দিয়েছে। এ থেকে দেশকে সুস্থধারায় ফিরে আনতে তারেক রহমান স্লোগান দিয়েছেন টেকব্যাক বাংলাদেশ। আরেকটি স্লোগান দিয়েছে ফয়সালা হবে রাজপথে। রাজপথেই ফয়সালা হয়েছে। হাসিনা পালিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘এই লাকসামে বিএনপির নেতাকর্মীরা অনেক অত্যাচারের শিকার হয়েছে। ভয়ংকর রূপে আর্বিভূত হয়েছিল মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। বিএনপির কাউকে এলাকায় ঢুকতে দেয়নি। লাকসামের ত্রাস ছিলেন। এখন কোথায়?’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নিজেদের মধ্যে কোনো বিভেদ সৃষ্টি করতে চাই না। কেউ কোনো বিভেদ সৃষ্টির চেষ্টা করবেন না। অযথা দেশকে বিভ্রান্ত করবেন না। ২৪ যেমন আমাদের স্মরণীয়, ৭১-ও স্মরণীয়। ৭১ নিয়ে কটাক্ষ করে কেউ কথা বলবেন না। অনেক বয়স হয়েছে। আর হানাহানি চাই না।’
তিনি বলেন, ‘দেশ নিয়ে শেখ হাসিনা দিল্লিতে বসে এখনো ষড়যন্ত্র করছে। আগেও বলেছি ভারত আমাদের বড় প্রতিবেশি। তারা শেখ হাসিনাকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দিলে জনগণ তাদের পক্ষে থাকবে না। এরা দেশের মানুষকে হত্যা করেছে।’
মনোহরগঞ্জ উপজেলার আহবায়ক শাহ সুলতান খোকন, লাকসাম উপজেলার সদস্য সচিব আব্দুর রহমান বাদল এবং পৌর সদস্য সচিব বেলাল রহমানের যৌথ সঞ্চালনায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন- বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা মনিরুল হক চৌধুরী, প্রবাসীবিষয়ক সম্পাদক শেখ ফরিদ আহমেদ মানিক, ত্রাণ ও পুনর্বাসন সম্পাদক হাজী আমিন উর রশিদ ইয়াসিন, কর্মসংস্থান সম্পাদক জাকারিয়া তাহের সুমন, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) মো. মোস্তাক মিয়া, সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক (কুমিল্লা বিভাগ) কর্ণেল অব. আনোয়ারুল আজিম, কুমিল্লা মহানগর বিএনপির আহবায়ক উৎবাতুল বারী আবু, সদস্য সচিব ইউসুফ মোল্লা টিপু, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার সদস্য সচিব আসিকুর রহমান ওয়াসিম, কুমিল্লার উত্তরের আহবায়ক আক্তারুজ্জামান সরকার, সদস্য সচিব এএফ তারেক মুন্সীসহ স্থানীয় নেতা আমিরুজ্জামান আমির, শাহ সুলতান খোকন, আব্দুর রহমান বাদল, ইলিয়াস পাটোয়ারী, আবুল হোসেন মানু, ডা. নুরুল্লাহ রায়হান, মজিবুর রহমান প্রমুখ।
সারাবাংলা/এজেড/পিটিএম