বইমেলায় একুশের আবহ
২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:৩৪ | আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:৩৮
ঢাকা: যে দিনটিকে ঘিরে ফেব্রুয়ারির পুরো মাসজুড়ে বাংলা একাডেমি বইমেলার আয়োজন, সেই মাহেন্দ্রক্ষণ দরজায় করা নাড়ছে। তাই একুশের আগেই বইমেলা জুড়ে একুশের আবহ। দর্শনার্থীদের পোশাকে সাদা কালোর আমেজ। প্রকাশক ও বিক্রেতাদের মধ্যে একুশের প্রত্যশা।
এবারের বইমেলা নতুন এক পরিস্থিতিতে হচ্ছে। জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের কারণে ৫২’এর ভাষা আন্দোলনের আত্মত্যাগের বিষয়টি নতুন প্রজন্মের কাছে আরও বেশি আন্দোলিত করছে। এতে ভাষা শহিদদের প্রতি আরও বেশি শ্রদ্ধা বেড়ে গেছে এ প্রজন্মের কাছে।

বইমেলায় দর্শনার্থীদের পোশাকে সাদা কালোর আমেজ। ছবি: সারাবাংলা
মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসটির জন্যই যেন অপেক্ষায় আছে প্রকাশক, লেখক, পাঠক ও দর্শনার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) বইমেলাতে মোহাম্মদপুর থেকে স্বপরিবারে ছোট্ট দু’বাচ্চাদের নিয়ে এসেছেন শিরিন আক্তার। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারিতে ভিড়ের কারণে বাচ্চাদের নিয়ে বের হওয়ার সুযোগ হবে না। তাই আজ ২১’এর আবহ সাদাকালো পোশাকে বইমেলায় এসেছি। বিয়ের আগে প্রচুর বই পড়া হতো, বর্তমানে সময়ের অভাবে আর বই পড়া হয় না। তাই সময় বের করে পরিবার নিয়ে বইমেলায় আসা।’

ছবি: সারাবাংলা
শুধু শিরিন আক্তারের পরিবার নন, আরও অনেক পরিবার তাদের সন্তানদের নিয়ে বইমেলায় এসেছেন প্রাণের মেলায়। একুশের চেতনার সঙ্গে সন্তানদের পরিচয় করিয়ে দেওয়াই যেন অভিভাবকদের প্রচেষ্টা। বাচ্চাদের বইয়ের সঙ্গে সম্মিলন ঘটাতেই বই মেলায় এসেছেন অনেকেই।

বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের সবর উপস্থিতি ছিল মেলা জুড়ে। ছবি: সারাবাংলা
বইমেলায় রাঙামাটির তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায় থেকে বই কিনতে এসেছেন দিব্বো তঞ্চঙ্গ্যা। সারাবাংলাকে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে যেহেতু বিভিন্ন সম্প্রদায়ের বিভিন্ন ভাষার প্রচলন আছে, তাই সব সম্প্রদায়ের সব ভাষার বিষয়ে জানার বই প্রকাশিত হয় খুব কম। তাই ৫২’র আন্দোলনের মধ্যে দিয়ে, মায়ের ভাষায় কথা বলবার যে অধিকার প্রতিষ্ঠা হয়েছিল তা অক্ষুন্ন রাখতে বইমেলাতে বিভিন্ন ভাষার উপর আরও বেশি বই বের করা হোক। আমাদের সম্প্রদায়ের নিজস্ব ভাষা থাকলেও সেই ভাষার ওপর কোনো বই নাই। তাই লেখক ও প্রকাশকরা যেন তঞ্চঙ্গ্যা সম্প্রদায়ের ভাষার ওপর বই লেখেন।’

ছবি: সারাবাংলা
অমর একুশের চেতনাকে ধারণ করে বিশ্বের বিভিন্ন ভাষা ও সংস্কৃতির মানুষের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ জাগ্রত হবে। বৈষম্যহীন বর্ণিল পৃথিবী গড়ে উঠবে এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
একুশে ফেব্রুয়ারির দিনটিতে বইমেলা খোলা থাকবে সকাল ৮টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত। তাই এদিনটিকে ঘিরে সবচেয়ে ভালো বেচাবিক্রির প্রত্যাশা বিক্রেতাদের।
সারাবাংলা/এনএল/এইচআই