এবার বেনাপোল সীমান্তে হচ্ছে না দু’বাংলার ভাষা প্রেমী মানুষের মিলনমেলা
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৩:২৩
বেনাপোল: একুশে ফেব্রুয়ারী আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে প্রতিবারই যশোরের বেনাপোল চেকপোস্ট নো-ম্যান্সল্যান্ডে বসে দু’বাংলার ভাষাপ্রেমী মানুষের মিলন মেলা। বুকে কালো ব্যাজ, মুখে ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’, নানা রং এর ফেস্টুন, ব্যানার, প্লেকার্ড, ফুলে-ফুলে ভরে ওঠে নো-ম্যান্সল্যান্ড। তখন দুই দেশের সীমান্তের মধ্যবর্তী স্থানে আবেগাপ্লুত পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
একে অপরকে আলিঙ্গণ করে সকল ভেদাভেদ ভুলে যান কিছু সময়ের জন্য। ফুলের মালা দিয়ে উভয় দেশের আবেগপ্রবণ অনেক মানুষ বাঙালীর নাড়ির টানে একজন অপরজনকে জড়িয়ে ধরে। ভৌগোলিক সীমারেখা ভুলে কেবল মাত্র ভাষার টানে সীমান্তের কাঁটাতারের বেড়া উপেক্ষা করে দলে দলে যোগ দেন একুশের মিলন মেলায়। ভারত-বাংলাদেশের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন অংশ নেয় এ অনুষ্ঠানে। এ সময় পেট্রাপোল ও বেনাপোল চেকপোস্টে ঢল নামে হাজার হাজার মানুষের। ক্ষণিকের জন্য হলেও আন্তর্জাতিক সীমান্ত রেখায় ছেদ পড়ে।
২১ ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে বেনাপোল নো-মান্সল্যান্ড এলাকা সাজে নানা রংয়ের বর্ণিল সাজে। নো-ম্যান্সল্যান্ড এলাকায় নির্মাণ করা হয় অস্থায়ী শহিদ মিনার। সকাল থেকে দুই দেশের হাজার হাজার মানুষ পুস্পার্ঘ্য অর্পণ করেন শহিদ বেদীতে। আবেগ আর ভালোবাসায় ভাষা প্রেমীরা ভূলে যায় তাদের সীমান্ত রেখা।
কিন্তু এবারের ২১ ফেব্রুয়ারি মাতৃভাষা দিবসে বেনাপোলে বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে এই দৃশ্য আর দেখা যাবে না। এতোদিন দুই দেশের সরকারি প্রতিনিধি ও মন্ত্রীরা প্রতিবেশী দেশে গিয়ে শহিদ বেদীতে পুস্পস্তবক দিতেন। কিন্তু দু’দেশের রাজনৈতিক টানাপোপড়েন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ভালো না থাকার কারণে এবার যৌথ ভাবে একুশের কোন অনুষ্ঠান নো-ম্যান্সল্যান্ডে হবে না। তবে ওপারে ছোট করে একটা অনুষ্ঠান হবে।
এ ব্যাপারে শার্শা উপজেলা বিএনপির সাধারন সম্পাদক আলহাজ্ব নুরুজ্জামান লিটন বলেন, দেশে ফ্যাসিস্ট সরকারের পতনের পরে দু’দেশের রাজনৈতিক টানাপোপড়েন এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ভালো না থাকার কারণে এবার বেনাপোল চেকপোস্ট নো-ম্যান্সল্যান্ডে একুশের মিলন মেলা হচ্ছে না। তবে পেট্রাপোলে ছোট একটি অনুষ্ঠান হবে। দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উন্নতি হলে আগামী বছর থেকে পুনরায় অনুষ্ঠান করা হবে।
যশোর ৪৯ বিজিবি ব্যাটেলিয়ন এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী জানান, প্রতিবছরই একুশে ফেব্রুয়ারি বেনাপোল স্থানীয় প্রশাসন আয়োজন করে থাকে। এ বছর বেনাপোল প্রশাসন কর্তৃক আয়োজিত না হওয়ার কারণে দুই বাংলার মিলনমেলা অনুষ্ঠানটি হচ্ছে না।
সারাবাংলা/এনজে