একুশের চেতনায় প্রাণোচ্ছল বইমেলা
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:২৮ | আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৬:৩১
ঢাকা: অমর একুশে ফেব্রুয়ারি আর বইমেলা একই সূত্রে গাঁথা। তাইতো শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে দলে দলে মেলা প্রাঙ্গণে ভিড় করেন বইপ্রেমীরা।
মাসব্যাপী চলমান বইমেলা প্রাণ পায় অমর একুশে ফেব্রুয়ারির দিনটিতেই। তাই এদিন সকাল ৮ তা থেকে রাত ৯ তা পর্যন্ত টানা ১৩ ঘন্টা খোলা থাকে বইমেলার দুয়ার। এতে একুশের প্রথম প্রহরে ছোট্ট শিশু থেকে শুরু করে সবার পদচরণায় মুখরিত হয়ে উঠে বইমেলা প্রাঙ্গণ।
বাবা-মার হাত ধরে ছোট্ট ছোট্ট পায়ে ঘুরে বেড়ানো শিশুদের কলকাকলিতে মুখরিত ছিল মেলার শিশু চত্বর। সন্তান নিয়ে রাজধানীর খিলগাঁও থেকে মেলায় এসেছিলেন সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন আহমেদ। সারাবাংলাকে তিনি জানান, ৫২’এর ভাষা আন্দোলনের আত্মত্যাগের মহিমা, ও জুলাইয়ের অভ্যুথানে তারুণ্যের আন্দোলনের জোয়ারে নতুন করে উদ্ভাসিত বইমেলা। তাই বইমেলা আর একুশের চেতনা নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দিতেই বইমেলায় সন্তানদের নিয়ে আসা। এতে তারা ছোট থেকেই একুশের চেতনায় উদ্বুদ্ধ হবে।
মোহাম্মদপুর থেকে মেলায় আসা নাফিসা হক নীলা সারাবাংলাকে জানান, আমার ২ বছরের মেয়েকে নিয়ে মেলায় এসেছি। সে যেন আমাদের একুশকে ছোট থেকেই ধারণ করতে পারে, এজন্য মেলায় এত ভিড়ের মাঝেও সাথে করে নিয়ে আসা।
শহিদ মিনারে কিছুক্ষণ কাটানোর পর পরিবারকে নিয়ে বইমেলায় আসা ফারহা জামান সারাবাংলা কে জানান, এর আগেও একবার এসেছিলাম, তবে আজ বেশি ভালো লাগছে। চারদিকে একুশের আবহ। ভাষা দিবসের নানা আয়োজন খুব উপভোগ করছি।
মেলায় কালো পাঞ্জাবি পরে দল বেঁধে বেশ কয়েকজন তরুণকে একসঙ্গে হাঁটতে দেখা গেল। তারা সবাই উত্তরা থেকে এসেছেন একটি সংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের হয়ে শহিদ মিনারে ফুল দিতে। শহিদ মিনারে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এসেছেন বইমেলায়।
এদিকে, প্রকৃতিতে ঋতুরাজ বসন্ত থাকায় বইমেলায় এতদিন রঙিনের আবহ থাকলেও আজ একুশকে ঘিরে বইমেলায় ছিল সাদা কালোর আধিক্য।
মূলত একুশে ফেব্রুয়ারির পর থেকেই জমে উঠে বইমেলা। তাই এ দিনটির জন্যই অপেক্ষায় থাকেন প্রকাশক, লেখক ও পাঠকরা। কারণ বইমেলায় বিকিকিনির গল্পটাই জমে উঠে একুশের ফেব্রুয়ারি’র পর। একাধিক স্টল মালিক ও প্যাভিলিয়ন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রতিবার ২১ এর পর ঠিক বইমেলাতে বেচা কেনা জমে উঠে। আবারো আজ থেকে বিক্রি বেশি হবে।
চন্দ্রদ্বীপ প্রকাশনীর বিক্রেতা রাফসান সিরাজী সারাবাংলাকে জানালেন, বইমেলাতে এতদিন পাঠকরা পছন্দের বইয়ের তালিকা করেছেন। আজ থেকে তারা কিনতে শুরু করবেন। তাই ২১ ফেব্রুয়ারি থেকেই মূলত বিক্রি বেশি হবে।
এদিকে বাংলা একাডেমির মূলমঞ্চে সকাল থেকে অনুষ্ঠিত হয় স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর।
একুশের চেতনায় উদ্ভাসিত এ মেলার মাধ্যমে প্রসারিত হবে জ্ঞানের আলো, প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ছড়িয়ে যাবে একুশের মূল্যবোধ এমনটাই প্রত্যাশা সবার।
সারাবাংলা/এনএল/এনজে