Saturday 22 Feb 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘জুলাই বিপ্লবের বিরোধিতাকারী আসামিরা আইনের ফাঁক গলিয়ে যেন বেরিয়ে না যায়’

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:২১ | আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:২৫

যশোরে মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগবিষয়ক কর্মশালায় অ্যাটর্নি জেনারেল

যশোর: অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেছেন, কোনো ক্রমেই যেন জুলাই বিপ্লবের বিরোধিতাকারী কোনো আসামি আইনের ফাঁক গলিয়ে বেরিয়ে না যায়। বার ও বেঞ্চ এক হয়ে ৫ আগস্ট পরবর্তী বাংলাদেশ বিনির্মাণে এক হয়ে কাজ করতে হবে। তারা যেন কোনোভাবেই আইনের ফাঁক ফোকর দিয়ে বিচারের হাত থেকে রেহায় না পায়, জামিন না পায়-সে ব্যাপারে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে।

শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) যশোরে পিটিআই স্কুল অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মানবাধিকার ও পরিবেশের ওপর গুরুত্বসহ আইন প্রয়োগবিষয়ক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, বিগত সরকার দেশে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি চালু করেছিল সেই জায়গা থেকে জাতিকে বের করে আনতে হবে। ন্যায় বিচার নিশ্চিত করতে হবে। ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশ বিনির্মাণ করতে হবে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুল স্প্রিরিটকে ধারন করতে হবে। বাংলার মাটিতে যেন ভবিষ্যতে আর কোন ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সে ব্যাপারে প্রত্যেককে তার অবস্থান থেকে দায়িত্ব পালন করতে হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গণির সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথি ছিলেন আন্তজার্তিক অপরাধ ট্রাইবুনালের চীফ প্রসিকিউটর (এ্যাটর্নি জেনারেল, আইসিটি) তাজুল ইসলাম ও প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য) প্রখ্যাত সাংবাদিক মনির হায়দার।

অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেছেন, গত ১৬ বছরে দেশের বিচার ব্যবস্থাকে পরিকল্পিত ভাবে ধ্বংস করা হয়েছিল। বিচারের নামে প্রহসন সৃষ্টি করা হযেছিল। দেশে আয়না ঘর তৈরি করে চরমভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছিল। দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বকে অন্য একটি দেশের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছিল। দেশের প্রশাসন যন্ত্রকে ধ্বংস করা হয়েছিল। পুলিশকে দলীয় লাঠিয়াল বাহিনীর মতো ব্যবহার করা হয়েছিল। সেনাবাহিনীর ভেতরে আয়না ঘর তৈরি করা হয়েছিলো, বাংলাদেশের নিরাপত্তার মধ্যে অন্য একটি রাষ্ট্রের কর্মকর্তারা ঢুকে পড়েছিল।

বিজ্ঞাপন

তিনি বিচারকদের উদ্দেশ্য বলেন, আপনাদের প্রো এ্যাকটিভ হয়ে বিচারকার্য চালাতে হবে। নতুন করে জুরিস ফুটেজ তৈরি করে বিবেকের কাছে দায়বদ্ধ থেকে বিচার কাজ চালাতে হবে। মনে রাখতে হবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের মাধ্যমে যে নতুন দেশ আমরা পেয়েছি সে অর্জন যেন কোনোভাবেই বৃথা না যায়।

তিনি বলেন, ‘দেশের মানুষ আর কোনো ফ্যাসিস্টটের মাথাচাড়া দিয়ে ওঠা দেখতে চাই না। আজ যারাই ফ্যাসিস্টদের পক্ষ অবলম্বন করবে তাদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর হতে বাধ্য হবে। যাদের নেতৃত্বে হামলা হয়েছে, খুন হয়েছে, গুম হয়েছে তাদের প্রতি কোনো অনুকম্পা দেখানো চলবে না। নতুন বাংলাদেশে কোনো ফ্যাসিবাদের স্থান হবে না। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন দমাতে যাদের যাদের ভূমিকা ছিল তারা সবাই ফ্যাসিস্ট। তাদেরকে বিচারের মুখামুখি করা হবেই। যারা এই জুলাই বিপ্লবকে প্রতিহত করার চেষ্টা করেছে তারাই জাতির শত্রু।’

আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চীফ প্রসিকিউটর (এ্যার্টনি জেনারেল) মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম তার বক্তৃতায় বলেন, ‘বন্দুকের ক্ষমতার জোরে গত ১৬ বছর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ সরকার দেশের বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসনিক কাঠামো, পুলিশি কাঠামো পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করেছে। তারা দেশকে পরাধীনতার শৃঙ্খলে আবদ্ধ করেছিল। ৩৬ জুলাই আন্দোলনে কিভাবে পাখির মতো গুলি করে মানুষ হত্যা করেছিল সেদৃশ্য বিশ্ববাসী দেখেছে। দেশ আজ একটি যুদ্ধপরিস্থিতির মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আমরা যুদ্ধপরিস্থিতির মধ্যেই আছি। ফলে স্বাভাবিক ভাবে কোনো কিছু নেওয়ার অবস্থায় আমরা নেই।

তিনি আরও বলেন, আমি দ্বিধাহীন কণ্ঠে বলতে চাই, পুলিশের যে সকল আইজিপি, যে সকল ডিআইজি, যে সকল এসপি যে সকল ডিসি রাতের ভোটে সহায়তা করে দেশে ফ্যাসিবাদকে প্রতিষ্ঠিত করেছিল, গণতন্ত্রকে হত্যা করেছিল-তারা যতই শক্তিশালী হোক তাদেরকে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না।

সারাবাংলা/এইচআই

অ্যাটর্নি জেনারেল মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান যশোর

বিজ্ঞাপন

২২তম দিনে নতুন বই এলো ১৪৪টি
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:৪৫

আরো

সম্পর্কিত খবর