‘যাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থা চালু হলে শোষণ ও দারিদ্র্য দূর হবে’
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:৪৭ | আপডেট: ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:৪৯
খুলনা: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, প্রচলিত পুঁজিবাদী ও তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ ব্যবস্থার কারণে সমাজে বৈষম্য, শোষণ ও বঞ্চনা বেড়েছে। অথচ যাকাতভিত্তিক অর্থব্যবস্থা চালু করা হলে সমাজের শোষণ ও দারিদ্র্য দূর হবে এবং ভারসাম্যপূর্ণ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা নিশ্চিত হবে ইনশাআল্লাহ।
শনিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) রাতে খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে নগরীর আল ফারুক সোসাইটিতে অনুষ্ঠিত যাকাত ও উশর শীর্ষক সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, ধনী ব্যক্তিরা তাদের সম্পদের প্রকৃত ফায়দা তখনই পাবেন, যখন ইসলামকে প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে সম্পৃক্ত হবেন। শুধু যাকাত দিলেই সমাজের সকল সমস্যা সমাধান হবে না, ইসলামের অন্যান্য মৌলিক বিধানও মেনে চলতে হবে। কুরআন ও সুন্নাহর ভিত্তিতে একটি সৎ ও মানবিক সমাজ গঠনের কোনো বিকল্প নেই।
তিনি আরও বলেন, মানুষের রচিত আইনকানুনের কারণে যে বৈষম্য, জুলুম ও শোষণ সৃষ্টি হয়েছে এগুলো থেকে সমাজকে বের করে এনে সুন্দর স্বাচ্ছন্দ্য জীবন এবং ভারসাম্যপূর্ণ অর্থব্যবস্থা নিশ্চিত করে যাকাত।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার, যাকাত ইসলামে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত। বাংলাদেশে যত ধনী আছে তারা যদি যাকাত দেন তাহলে আগামী ৫ বছরে বাংলাদেশে একজনও দরিদ্র থাকবে না। সবাই যাকাতদাতা হয়ে যাবে। আমাদের সমাজ যাকাতকে বর্জন করে গণতান্ত্রিক পুঁজিবাদী, তথাকথিত ধর্ম নিরপেক্ষ চিন্তাচেতনার ওপর গড়ে উঠার কারণে সমাজের মানুষের শোষণ বঞ্চনা দূর হচ্ছে না। যাকাত ভিত্তিক অর্থব্যবস্থা চালু না হলে এটা দূর করা সম্ভবও হবে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মানুষের একটি কল্যাণকর রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আগামীতে যদি সৎ লোকের নেতৃত্ব নিয়ে আসা যায়, তাহলে তারাই যাকাতভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। সমাজে সৎ নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, যাকাতভিত্তিক অর্থনীতি চালু না হলে এ দেশে অর্থনৈতিক সমস্যার সমাধান হবে না। যাকাতভিত্তিক অর্থনীতি চালু করতে হলে ইসলামী রাষ্ট্র ছাড়া সম্ভব না। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করে যাচ্ছে।’ তিনি সংগঠনের বিত্তবান ব্যক্তিদের সঠিক নিয়মে যাকাত ও উশর দেওয়ার আহ্বান জানান।
কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ মসজিদ কাউন্সিলের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মীর মঞ্জুর মাহমুদ, বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক। কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরার সদস্য ও মহানগরী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলালের পরিচালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন কুস্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দাওয়াহ অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের প্রফেসর ড. অ. ছ. ম. তরীকুল ইসলাম। এ সময় মহানগরী নায়েবে আমীর অধ্যাপক নজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি অ্যাডভোকেট শাহ আলম, প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও আজিজুল ইসলাম ফারাজী, হাফেজ মাওলানা আবু বকর সিদ্দিক প্রমুখ।
সারাবাংলা/এইচআই