ঢাকা: আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জাতীয় পার্টি দল গোছানোর উদ্যোগ নিয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় আগামী এপ্রিলের শেষ অথবা মে মাসের প্রথম দিকে জাপার কেন্দ্রীয় কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানা গেছে। এই কাউন্সিলে মহাসচিব পদে পরির্বতন আসতে পারে বলেও ইঙ্গিত পাওয়া গেছে।
দলটির বর্তমান মহাসচিব পদে রয়েছেন মুজিবুল হক চুন্নু। তার আগে ছিলেন জিয়া উদ্দিন বাবলু। ২০২১ সালে ২ অক্টোবর জিয়াউদ্দিন বাবলু মৃত্যুবরণ করলে ৯ অক্টোবর মুজিবুল হক চুন্নুকে মহসচিব করা হয়। জিয়া উদ্দিন বাবলুর আগে মহাসচিব পদে ছিলেন এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার। তিনি দীর্ঘদিন দলটির মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন।
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কাউন্সিল ও আসন্ন নির্বাচনসহ বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে আগামী ২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পার্টির বনানী চেয়ারম্যান কার্যালয়ে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির এক সভা অনুষ্ঠিত হবে। সভায় জাতীয় পার্টির সকল প্রেসিডিয়াম সদস্য, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা, ভাইস চেয়ারম্যান, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক, সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য ও নির্বাহী সদস্যরা উপস্থিত থাকবেন বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির এই বৈঠক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বৈঠকে জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কাউন্সিল, নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীদের দিক-নির্দেশনা দেওয়া এবং আগামী নির্বাচনে জোটগতভাবে না এককভাবে অংশ নেবে- এসব বিষয়ে আলোচনা হবে। এ ছাড়া, দলটির সম্ভাব্য প্রার্থীদের নিজ নিজ নির্বাচনি এলাকায় গণসংযোগ করার নির্দেশ দেওয়া হতে পারে।
সূত্র আরও জানায়, দলটির চেয়ারম্যান সম্প্রতি বলেছেন, লেভেল প্লেইং ফিল্ড না হলে তারা নির্বাচনে অংশ নেবে না। তার এই বক্তব্যের সঙ্গে কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা একমত কিনা সে বিষয়টি নিয়েও আলোচনা হবে। তবে এ সর্ম্পকে জাতীয় পার্টির এক প্রেসিডিয়াম নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে সারাবাংলাকে বলেন, ‘জাপা নির্বাচনমুখী দল। নির্বাচনে অংশ নেওয়ার দিকেই ঝুঁকে আছেন কেন্দ্রীয় নেতারা।’
জাতীয় পার্টির বর্তমান নেতারা বলছেন, ১৯৯০ সালে তৎকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার জাতীয় পার্টিকে কোণঠাসা করে রেখেছিল। তার পরও ৩৫টি আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থীরা জয়লাভ করে। বর্তমান সরকারও জাতীয় পার্টির দিকে তির্যক দৃষ্টিতে তাকাচ্ছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা তাদের আওয়ামী সরকারের দোসর বানিয়েছে।
তাদের দাবি, ১৯৯০ সালের পরের নির্বাচনের চেয়ে এবার জাপা কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন। এই অবস্থায় পার্টি কোন ফরমুলায় নির্বাচন করবে সেটা নিয়ে আলোচনা চলছে। তবে দলটির একটি অংশের নেতারা চাচ্ছেন এককভাবে নির্বাচন করতে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, কেন্দ্রীয় কমিটির এই বৈঠকে দলছুট কয়েকজন নেতাকে দলে ফিরিেিয় আনার বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। এ ছাড়া, দলের মহাসচিব পদে পরিবর্তন আসতে পারে।
এ সব বিষয়ে নিয়ে কথা হলে দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য অ্যাডভোকেট রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া সারাবাংলাকে বলেন, ‘২৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠক খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই বৈঠকে এপ্রিলে জাতীয় পার্টির কউন্সিল নিয়ে আলোচনা হবে। নিয়ম অনুসারে ডিসেম্বরে কাউন্সিলের কথা রয়েছে। তবে ত্রয়োদশ জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে এপ্রিল অথবা মে মাসে কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘নির্বাচন জোটগত না এককভাবে করব- সে বিষয়ে আলোচনা হবে। তবে আমরা চাচ্ছি এককভাবে নির্বাচনে অংশ নিতে। যদি নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক হয় ও লেভেল প্লেইং ফিল্ড থাকে জাতীয় পার্টি অবশ্যই অংশ নেবে।’ আসছে কাউন্সিলে নেতৃত্বে পরির্বতন আসবে কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘এ বিষয় ডেলিগেটরা সিদ্ধান্ত নেবে।’