তিন মার্চেন্ট ব্যাংকের সার্বিক কার্যক্রম পরিদর্শন করবে বিএসইসি
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৮:০০ | আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:১০
ঢাকা: পুঁজিবাজারের সদস্যভুক্ত তিনটি মার্চেন্ট ব্যাংকের সার্বিক কার্যক্রম পরিদর্শন করে খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ লক্ষ্যে তিন সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করা হয়েছে। গঠিত পরিদর্শন কমিটিকে আগামী ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিএসইসিতে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মার্চেন্ট ব্যাংক তিনটি হচ্ছে- আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, জনতা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড ও আইআইডিএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেড।
অন্যদিকে গঠিত পরিদর্শন কমিটির সদস্যরা হলেন- বিএসইসি’র অতিরিক্ত পরিচালক মোহাম্মদ শামসুর রহমান, সহকারী পরিচালক মো. মতিউর রহমান ও সহকারী পরিচালক মো. আমিরুল ইসলাম।
জানা গেছে, পরিদর্শন কমিটি মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর মার্জিন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা, নেগেটিভ ইক্যুইটিসহ বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্টের সংখ্যা, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোতে নেতিবাচক ইক্যুইটি কেন বাড়ছে ও এর জন্য কারা দায়ী, নেতিবাচক ইক্যুইটির পরিমাণ, প্রভিশনস বা মার্জিন অ্যাকাউন্টের বিপরীতে রক্ষিত তহবিল, প্রভিশন ঘাটতি ও মার্জিন অ্যাকাউন্টে অননুমোদিত লেনদেনসহ আরো বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখবে।সম্প্রতি এ সংক্রান্ত একটি আদেশ বিএসইসি’র মার্কেট ইন্টেলিজেন্স অ্যান্ড ইনভেস্টিগেশন ডিভিশন থেকে জারি করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। বিএসইসির জারি করা আদেশ তিনটি ব্রোকারেজ হাউজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তাকে প্রেরণ করা হয়েছে।
তথ্য মতে, বিগত সরকারের আমলে আইন লঙ্ঘন করা মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর বিরুদ্ধে তেমন কোনো কঠোর ব্যবস্থাই নেওয়া হয়নি। তবে, রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর পুনর্গঠিত বিএসইসির খন্দকার রাশেদ মাকসুদের নেতৃত্বাধীন নতুন কমিশন সমন্বিত গ্রাহক হিসাবে ঘাটতি থাকা ব্রোকারেজ হাউজগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।
বিএসইসির পরিদর্শনের আদেশ: বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন মনে করে, পুঁজিবাজার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে আইসিবি ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, জনতা ক্যাপিটাল অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেড এবং আইআইডিএফসি ক্যাপিটাল লিমিটেডের সার্বিক কার্যক্রম পরিদর্শন করা প্রয়োজন। তাই, সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (মার্চেন্ট ব্যাংকার ও পোর্টফোলিও ম্যানেজার) বিধিমালা, ১৯৯৬ এর বিধি ৩২ এর প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কমিশন তিন জন কর্মকর্তাকে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর কার্যক্রম পরিদর্শন করার জন্য নিয়োগ দেওয়া হলো। পরিদর্শক কর্মকর্তারা এই আদেশ জারির তারিখ থেকে ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে পরিদর্শন কার্যক্রম সম্পন্ন করবেন এবং এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন কমিশনে জমা দেবেন।
পরিদর্শন কমিটি যেসব বিষয় খতিয়ে দেখবে: পুঁজিবাজার এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থে গঠিত পরিদর্শন কমিটি তিনটি মার্চেন্ট ব্যাংকের মার্জিন অ্যাকাউন্টের সংখ্যা, নেগেটিভ ইক্যুইটিসহ বিও অ্যাকাউন্টের সংখ্যা, প্রকৃত নেগেটিভ ইক্যুইটির পরিমাণ, প্রভিশনস, প্রভিশনসের ঘাটতি, মার্জিন অ্যাকাউন্টে অনুমতিবিহীন লেনদেন শনাক্ত করা এবং এর কারণ চিহ্নিত করা, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোতে নেগেটিভ ইক্যুইটির পরিমাণ কেন বাড়ছে তা চিহ্নিত করা, এর জন্য কারা দায়ী তা চিহ্নিত করা।
এছাড়া, মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো কেন আনরিয়েলাইজড লসের বিপরীতে প্রয়োজনীয় প্রভিশনস বজায় রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে- সেটার কারণ চিহ্নিত করা। সেই সঙ্গে মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোর এ সংক্রান্ত কি কি সিকিউরিটিজ আইন লঙ্ঘন করতে তা চিহ্নিত করা। ২০১৬ সাল থেকে একাধিকবার সময় চেয়েও মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো কেন আনরিয়েলাইজড লসের বিপরীতে প্রয়োজনীয় প্রভিশনস বজায় রাখতে ব্যর্থ হচ্ছে- তা চিহ্নিত করা। সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অন্য কোনো প্রাসঙ্গিক সমস্যা থাকেলে সেটাও চিহ্নিত করা।
সারাবাংলা/জিএস/আরএস