Monday 24 Feb 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

১১ বছর পর কবর থেকে জামায়াত-শিবিরের ৩ কর্মীর মরদেহ উত্তোলন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:০১ | আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:১০

কবর থেকে মরদেহ উত্তোলন। ছবি: সারাবাংলা

নোয়াখালী: নোয়াখালীতে দাফনের ১১ বছর পর আদালতের নির্দেশে কবর থেকে জামায়াত-শিবিরের তিন কর্মীর মরদেহ (হাড়গোড়) উত্তোলন করা হয়েছে।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরহাজারী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুর রাজ্জাক মিয়ার নতুন বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান, রামপুর ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের করিম উল্লাহ মাঝি বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান ও চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের কমর উদ্দিন বেপারী বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মরদেহগুলো উত্তোলন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

উত্তোলন করা জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা হলেন, উপজেলার চরহাজারী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে আব্দুল আজিজ ওরফে রায়হান (১৮), রামপুর ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের নুর ইসলামের ছেলে সাইফুল ইসলাম (২০) ও চরকাঁকড়া ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের আবুল কালামের ছেলে সাইফুল বাবলু (২০)।

এদের মধ্য বামনী ডিগ্রি কলেজের শিক্ষার্থী সাইফুল, বসুরহাট দাখিল মাদরাসার শিক্ষার্থী রায়হান শিবির কর্মী ছিলেন ও বাবলু পেশায় একজন রং মিস্ত্রি ও জামায়াত কর্মী ছিলেন।

জানা যায়, নিহতের স্বজনদের মামলার প্রেক্ষিতে আদালতের আদেশে সকালে পারিবারিক কবরস্থান থেকে রায়হান ও বিকাল ৩টার দিকে সাইফুলের ও বিকেল ৫টার দিকে বাবলুর মরদেহ তোলা হয়। পরে মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসাপাতালের মর্গে পাঠানো হয়। এ সময় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট প্রশান্ত চক্রবর্তী ও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা উপপরিদর্শক (এসআই) মঈনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

বিজ্ঞাপন

বসুরহাট পৌরসভা জামায়াতের আমির মাওলানা মোশাররফ হোসাইন বলেন, নিহতের স্বজন ১১ বছর পর এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মামলা দায়ের করেছেন। আমরা সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে খুনের আসামিদের আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাচ্ছি।

কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গাজী মুহাম্মদ ফৌজুল আজিম বলেন, আদালতের নির্দেশে কবর থেকে জামায়াত-শিবিরের তিন কর্মীর মরদেহ উত্তোলন করা হয়। এর আগে গত বছরের ১০ ডিসেম্বর উপজেলার বসুরহাট পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের নয়ন হাজী বাড়ির পারিবারিক কবরস্থান থেকে মতিউর রহমান সজীব (১৭) নামে আরও এক শিবির কর্মীর মরদেহ (হাড়গোড়) তোলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে ১৪ ডিসেম্বর জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা কাদের মোল্লার ফাঁসি কার্যকর করার প্রতিবাদে বসুরহাট বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করে জামায়াত ও শিবিরের নেতাকর্মীরা। কোম্পানীগঞ্জ শাখা জামায়াতে ইসলামীর এ বিক্ষোভ মিছিলে আড়াই থেকে তিন হাজার লোক সমাবেত হয়। জামায়াত নেতাদের নেতৃত্বে করা বিক্ষোভ মিছিলটিতে পুলিশ বাধা দিলে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় জামায়াত ও শিবিরের সাতজন নেতা-কর্মী নিহত হন। যাদের মধ্যে তিনজনের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে পুলিশ। বাকী চারজনের মরদেহ বিনা ময়নাতদন্তে দাফন করা হয়, তখন মামলাও হয়নি। পরে ৫ আগস্ট পরবর্তী এ ঘটনায় বসুরহাট পৌরসভার সাবেক মেয়র আবদুল কাদের মির্জা, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বাদল, সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নুরুজ্জামানসহ ১১২ জনের বিরুদ্ধে মামলার আবেদন করা হয় আদালতে। পরে আদালতের নির্দেশে কোম্পানীগঞ্জ থানায় হত্যা মামলা রুজু করা হয়।

এ ছাড়া মামলায় আসামি করা হয় কোম্পানীগঞ্জ থানার সাবেক পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শফিকুল ইসলাম, সাবেক উপপরিদর্শক সুধীর রঞ্জন বড়ুয়া, আবুল কালাম আজাদ, শিশির কুমার বিশ্বাস ও উক্যসিং মারমা।

সারাবাংলা/এসআর

১১ বছর পর মরদেহ উত্তোলন জামায়াত-শিবির কর্মী নোয়াখালী মরদেহ উত্তোলন সারাবাংলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর