আসিফ নজরুল সন্ত্রাসীদের মুক্ত করে দিচ্ছেন: ইনকিলাব মঞ্চ
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১৯:০৬ | আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:০৯
ঢাবি: আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল সন্ত্রাসীদের মুক্তি করে দিচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরীফ ওসমান হাদী।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘ইন্টারপোলের রেড অ্যালার্ট জারিকৃত সন্ত্রাসীদের আসিফ নজরুল কীভাবে মুক্তি দেন! অথচ জুলাই আন্দোলনের অনেক ব্যক্তির মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার হয়নি। আইন উপদেষ্টা আসলে কী করতে চান তিনি জাতিকে স্পষ্ট করবেন। এমন অবস্থা তৈরি করবেন না যেন ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে মানুষ দাঁড়িয়ে যায়।’
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার অযোগ্যতা ও দায় স্বীকার করে পদত্যাগ করতে হবে দাবি করে তিনি বলেন, ‘আমরা জানি না ঠিক কী করলে তিনি পদত্যাগ করবেন। উনি অযোগ্য লোক। এই পদে বসে কোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের সাহস ও সক্ষমতা কিছুই তার নাই। এখনো খুনি আওয়ামী লীগের মন্ত্রীরা যেন আদালতে পিকনিক করতে আসে, তারা হাসে খেলে। অন্যদিকে যারা অভ্যুত্থান করেছে তারা ভয়ে আছে। এর দায় কেবল স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাই নয়, প্রতিটা উপদেষ্টার।‘
সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় শহিদ সেনা দিবস নিয়ে তিনি বলেন, ‘জাতীয় শহিদ সেনা দিবসকে ‘গ শাখা’য় অধিভুক্ত করা হয়েছে। যা এর গুরুত্বকে কমিয়ে দিয়েছে। এই দিবসকে ‘ক শাখা’য় অধিভুক্ত করতে হবে যাতে বাধ্যতামূলকভাবে সকল প্রতিষ্ঠান এই দিবসকে উদযাপন করে। বিডিআর হত্যাকাণ্ডকে বিডিআর বিদ্রোহ না বলার আহ্বান করছি।’
দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করা হচ্ছে অভিযোগ করে তিনি বলেন, ‘সারাদেশে চাঁদাবাজি, ধর্ষণ, ছিনতাই নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা হয়ে গেছে। এসব সাধারণ অপরাধীদের কাজ নয়। মূলত একটা বিশেষ শ্রেণি এখানে দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে।’
সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে প্রত্যাখান করে তিনি বলেন, ‘সেনাপ্রধান সম্প্রতি নির্বাচিত সরকার নিয়ে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা ভারতের সঙ্গে মিলে যায়। আমরা এই বক্তব্যকে ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করি। বাংলাদেশের প্রধান শত্রু ভারতকে কুর্ণিশ করে জুলাই পরবর্তী সময়ে রাজনীতি করা যাবে না।’
বিএনপি না চাইলে দেশে কোনো সংস্কার সম্ভব হবে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘আমাদের ধারণা যে ছয়টি সংস্কার কমিটি গঠন করা হয়েছে, বিএনপি না চাইলে এর একটিও করা সম্ভব নয়। ইতোমধ্যে এই সংস্কার কমিশনের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে এনএসআই, ডিজিএফআইয়ের মতো সংগঠনগুলো। জামায়াতের সঙ্গে বিএনপিকে সমঝোতায় এসে নতুন দেশ গঠনের কাজ করতে হবে। নাহলে এই অভ্যুত্থান ব্যর্থ হবে।’
বিএনপিকে ভারত ও শাহবাগীদের সঙ্গে হাত মিলাতে নিষেধ করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি যেন ভারতের সঙ্গে হাত মিলিয়ে দেশের ক্ষমতায় বসার স্বপ্ন না দেখে। আওয়ামী লীগ তো পালিয়ে ভারতে গিয়েছে কিন্তু বিএনপির সে জায়গাও নেই। আপনাদের কাছে অনুরোধ, শাহবাগীদের হাতে হাত মিলায়ে জনগণের বিপক্ষে দাড়াবেন না।’
ছাত্র জনতাকে নিয়ে কমিউনিটি পুলিশ তৈরির আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘দেশে যত অপরাধ হচ্ছে তা ঠেকানোর জন্য জরুরি ছাত্র-জনতাকে শামিল করে কমিউনিটি পুলিসিং চালু করা। তাদের ভাতার ব্যবস্থা করার মাধ্যমে এই উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে। পাশাপাশি বিভিন্ন এলাকায় দায়িত্ব অবহেলার জন্য পুলিশকে শাস্তি দিতে হবে। পুলিশকে প্রতি সপ্তাহে একদিন সকল অপরাধ ও তদন্তের তথ্য দিতে হবে।’
ইনকিলাব মঞ্চ নতুন রাজনৈতিক দলে যুক্ত হবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নতুন রাজনৈতিক দলকে স্বাগত জানাই। তবে জুলাইকে বাঁচিয়ে রাখতে ইনকিলাব মঞ্চ কোনো দলের সঙ্গে যাবো না।’
সারাবাংলা/এআইএন/এইচআই