চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রামে প্রধান বন সংরক্ষকের বিরুদ্ধে বদলি বাণিজ্যে ১০ কোটি টাকা লেনদেনের অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নগরীর নন্দনকানন এলাকায় প্রধান বন সংরক্ষকের কার্যালয়ে অভিযান চালায় দুদকের একটি টিম। এ সময় বেশকিছু নথিপত্র জব্দ করা হয়।
দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান বন সংরক্ষক মোল্লা রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেয়ে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি একযোগে ৭৭ জন বন কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের তাদের পছন্দমতো জায়গায় বদলি করা হয়। প্রত্যেক বদলির জন্য লেনদেন হয় মোটা অঙ্কের টাকা। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ কোটি টাকা এ বদলি বাণিজ্যে লেনদেন করা হয়েছে বলে অভিযোগ আছে।
এছাড়া মোল্লা রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে ফেনীতে বিভাগীয় বন কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকার সময় একটি প্রকল্পে প্রায় আড়াই কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আছে।
অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া দুদক সমন্বিত চট্টগ্রাম জেলা কার্যালয়–১ এর সহকারী পরিচালক সাঈদ মাহমুদ ইমরান সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রধান বন সংরক্ষকের বিরুদ্ধে আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ ছিল। তিনি গত বছরের সেপ্টেম্বরে এখানে যোগ দেন। এরপর চলতি বছরের ৯ জানুয়ারি একই দিনে তার স্বাক্ষরে ৭৭ জন কর্মচারী বদলি হয়। আমাদের কাছে অভিযোগ এখানে প্রতিটি বদলির জন্য অনেক টাকা লেনদেন করা হয়েছে। সব মিলিয়ে প্রায় ১০ কোটি টাকা বদলি বাণিজ্যে নেওয়া হয়েছে। এটা যাছাই-বাছাইয়ের জন্য আমরা এখানে এসেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘যাদের বদলি করা হয়েছে তাদের নিয়ম মেনে বদলি করা হয়েছে কিনা সেসব নথিপত্র আমরা নিয়েছি। প্রধান বন সংরক্ষককে আমরা দীর্ঘ তিন ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। উনার আগের কর্মস্থলেও তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। উনি ফেনী বিভাগীয় বন কর্মকর্তার দায়িত্বে ছিলেন। ওই সময় একটি বাগান প্রকল্পে দুই কোটি ৩১ লাখ টাকার আত্মসাতের অভিযোগ আছে তার বিরুদ্ধে।’
দুদকের এ কর্মকর্তা বলেন, ‘তৎকালীন ঢাকার প্রধান বন কর্মকর্তা ইউনুচ আলী দুইবার তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর আবেদন করেছিলেন। কিন্তু সেটা আলোর মুখ দেখেনি। আমরা এসব বিষয়েও তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছি। তিনি আমাদের কিছু তথ্য দিয়েছেন। কিছু নথিপত্র পেয়েছি। যেগুলো পাইনি সেগুলো কাল পাব। যারা বদলি হয়েছে তাদের প্রত্যেককে আলাদাভাবে আমরা জিজ্ঞাসাবাদ করব। সবার বক্তব্য নেওয়ার পর, নথিপত্র যাছাই-বাছাই করে আমরা চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেব।’
এ বিষয়ে জানতে চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রধান বন সংরক্ষণ কর্মকর্তা মোল্লা রেজাউল করিমের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি নন বলে কল কেটে দেন।