Monday 24 Feb 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাজেকে পুড়ল রিসোর্ট-কটেজসহ প্রায় ১০০ স্থাপনা, ভ্রমণে নিরুৎসাহ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:৫৭ | আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:০২

সাজেক ভ্যালি

রাঙ্গামাটি: মেঘ-পাহাড়ের উপত্যকা রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ভ্যালি পর্যটন ও বিনোদনকেন্দ্রে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অন্তত ৯০-৯৫টির অধিক স্থাপনা পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুর সোয়া ১টার দিকে সাজেক ভ্যালি পর্যটনকেন্দ্রের ‘অবকাশ ম্যানুয়েল রিসোর্ট’সহ আশপাশের এলাকায় আগুন ছড়িয়ে পড়ে বলে জানিয়েছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন।

এদিকে, রাত সাড়ে ৮টার দিকে এক বিজ্ঞপ্তিতে রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) পাঠান মো. সাইদুজ্জামান সাজেকে ভয়াবহ আগুনের ঘটনায় পর্যটকদের নিরাপত্তার স্বার্থে মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) থেকে পরবর্তী নিদের্শনা না দেয়া পর্যন্ত সাজেক ভ্যালি ভ্রমণে পর্যটকদের নিরুৎসাহিত করেছে। মূলত নিরুৎসাহিত করা হলেও এ সময়ে সাজেকে পর্যটক যাতায়াত বন্ধ থাকে।

সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে জেলা প্রশাসনের সর্বশেষ এক প্রতিবেদন ও স্থানীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে আগুনের সূত্রপাতের পর আগুন মুহুর্তেই আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনার পর স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। এতে যোগদেন পর্যটনসহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরাও। বিকেল আনুমানিক সাড়ে ৪টার দিকে পর প্রায় সাড়ে ৩ ঘন্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুনে প্রায় ৯০-৯৫ টির বেশি রিসোর্ট-কটেজ, দোকানপাট, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, বসতবাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ইত্যাদি আগুনে পুড়ে গেছে। তবে এখনো পর্যন্ত হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। নিরূপন করা যায়নি ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক তালিকাও।

এদিকে, সাজেক ভ্যালিতে আগুনের ঘটনায় খাগড়াছড়ি জেলার দীঘিনালা উপজেলার ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটের সঙ্গে খাগড়াছড়ি ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটও কাজ করছে। সাময়িকভাবে সাজেক ভ্যালিতে পর্যটকদের যাতায়াত বন্ধ রাখার অনুরোধ জানিয়েছে রাঙামাটি প্রশাসন। তবে বিকেলে সাজেকের আগুন নিয়ন্ত্রণে বিমানবাহিনীর ২টি হেলিকপ্টার আসার কথা থাকলেও আগুন নিয়ন্ত্রণে আসা ও সন্ধ্যা নেমে আসায় পরে আর হেলিকপ্টার আনা হয়নি জানিয়েছে রাঙামাটির প্রশাসন।

বিজ্ঞাপন

স্থানীয়দের অভিযোগ, সাজেক ভ্যালিতে পর্যাপ্ত পানির সংকট ও দমকলবাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করতে না পারায় আগুনে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে। তবে আগুনের ঘটনায় রাঙামাটি জেলা প্রশাসনের প্রাথমিক প্রতিবেদনে ৯০-৯৫টির মতো স্থাপনা ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে জানানো হলেও ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত তথ্য নিরূপণ করা হয়নি। স্থানীয় ও পর্যটকদের সঙ্গে কথা জানা গিয়েছে, সাজেকে আগুনের ঘটনার পানি সংকটের কারণে স্থানীয়রা দ্রুত পানি নেভাতে পারেননি। এছাড়া দীঘিনালা, খাগড়াছড়িসহ অন্যান্য উপজেলা থেকে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পৌঁছাতে সময় লাগার কারণে আগুনে ক্ষয়ক্ষতি বেড়ে গেছে। সাজেকে অগ্নি মোকাবিলার জন্য যথাযথ পানি সংরক্ষিত ছিল না।

সাজেক রিসোর্ট ও কটেজ মালিক সমিতির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মতিজয় ত্রিপুরা বলেন, ‘আগুন এখন নিয়ন্ত্রণে এলেও ক্ষয়ক্ষতি কী পরিমাণ হয়েছে তা এখনো সঠিক বলা যাচ্ছে না। যে পরিমাণ আগুন লেগেছে মুহুর্তে চোখের সামনে সব শেষ হয়ে গেছে। সঠিক তথ্য জানাতে একটু সময় লাগবে, কারণ এ মুহূর্তে তাৎক্ষণিক আমরা কিছুই বলতে পারতেছি না।’ ১৬৭ নম্বর রুইলুই মৌজার হেডম্যান লাল থাঙ্গা লুসাই বলেন, ‘আগুনের ঘটনায় আমার বসতবাড়িসহ আশপাশের বিভিন্ন স্থাপনা পুড়ে গেছে। কথা বলার মতো পরিবেশে এখন নেই।’

এদিকে, রাঙ্গামাটির অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ রুহুল আমীন জানান, ‘সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুযায়ী সাজেকে ৯০-৯৫টির মতো স্থাপনা পুড়ে গেছে। আগুনে এখনো হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। হেলিকপ্টারের মাধ্যমে আগুন নিভানোর কথা থাকলেও বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণ আসায় হেলিকপ্টার আসা স্থগিত করা হয়েছে।’ রাঙ্গামাটি জেলাপ্রশাসক (ডিসি) মোহাম্মদ হাবিব উল্লাহ বলেন, ‘যতটুকু জানা গেছে, বৈদ্যুতিক শটসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। তবে সেটি পরে তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে। আপাতত আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ক্ষয়ক্ষতির নিরুপণে কাজ চলছে।

বিজ্ঞাপন

সারাবাংলা/এসআর

অগ্নিকাণ্ড পর্যটক ভ্রমণে নিরুৎসাহ রাঙ্গামাটি সাজেক সাজেক ভ্যালি সাজেকে পুড়ল রিসোর্ট-কটেজ সারাবাংলা

বিজ্ঞাপন

ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা অনুষ্ঠিত
২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:৪২

আরো

সম্পর্কিত খবর