Tuesday 25 Feb 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর হাসপাতালে অবরুদ্ধ ৪ সমন্বয়ক

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২০:৫৩

প্রায় ২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ ছিলেন চার সমন্বয়ক। ছবি: সারাবাংলা

রাজশাহী: রাজশাহীর বারিন্দ মেডিকেল কলেজে গিয়ে অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছিলেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক এক কেন্দ্রীয় সমন্বয়কসহ চারজন। পরে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে কলেজ থেকে তাদের উদ্ধার করা হয়। এর আগে প্রায় দুই ঘণ্টা তারা অবরুদ্ধ ছিলেন।

এই চারজন হলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক জি কে এম মেশকাত চৌধুরী মিশু, সংগঠনের জেলা কমিটির মূখ্য সংগঠক সোহাগ সরদার, যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুল বারী ও ছাত্রনেতা আল-সাকিব। এদের মধ্যে মিশু ও সাকিব রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। আব্দুল বারী ও সোহাগ সরদার পড়াশোনা করেন রাজশাহী কলেজে।

বারিন্দ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের মালিক আওয়ামী সরকারের সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। আত্মগোপনের আগে তিনি প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ছিলেন। তার বাবা মো. শামসুদ্দিন প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। বর্তমানে তিনি চেয়ারম্যান হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।

বারিন্দ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ ডা. বেলাল উদ্দীন বলেন, ‘এই চারজন সোমবার এসে আমাদের সচিবের সঙ্গে কথা বলে গিয়েছিলেন। মঙ্গলবার আমার সঙ্গে বসার কথা ছিল। কিন্তু আমার সঙ্গে না বসে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের কক্ষে যান। তারা বিভিন্ন কথাবার্তা বলছিলেন। এখন আমাদের কলেজেও তো আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী আছে। তারা এসবের প্রতিবাদ করেন।’

অধ্যক্ষ জানান, তার কলেজে অনুষ্ঠান চলছে। তাই আগে থেকেই পুলিশ ছিল। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে পুলিশ সেনাবাহিনীকে খবর দেয়। পরে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের (আরএমপি) কুইক রেসপন্স টিমের (সিআরটি) সদস্যরাও আসেন। তারা চারজনকে থানায় নিয়ে যায়।

বিজ্ঞাপন

প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শামসুদ্দিন বলেন, ‘এখন কিছু বলা যাচ্ছে না। আমার সাথে কঠোর ভাষায় কথাবার্তা বলেছে।’ তারপর তিনি ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।

সন্ধ্যায় ওই চার ছাত্রনেতাকে নগরীর চন্দ্রিমা থানা থেকে অন্য ছাত্রনেতাদের জিম্মায় দেওয়া হয়। আরএমপির অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে অভিযোগ পাওয়া যায়নি। তাই ছাত্রনেতাদের জিম্মায় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।’

ঘটনার বিষয়ে সন্ধ্যায় সাবেক কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক মিশু গণমাধ্যমে একটি লিখিত বক্তব্য পাঠিয়েছেন। এতে তিনি লেখেন, ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে দেশের ছাত্র-জনতার উপর গণহত্যার সাথে জড়িত আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বিভিন্ন প্রভাবশালী মহলের আশ্রয় প্রশ্রয়ে ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছেন। বেশ কয়েকদিন ধরে বারিন্দ মেডিকেল কলেজ থেকে আমাদের কাছে বেশকিছু অভিযোগ আসতে থাকে। সেখানে আওয়ামী লীগের সাবেক প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমের বাবার (যিনি শাহরিয়ার আলমের অবর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন) আশ্রয়ে বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী কর্মরত রয়েছেন।’

তিনি আরও লেখেন, ‘চলমান অপারেশন ডেভিল হান্টে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে সহায়তা করতে আমরা সেখানে তথ্য সংগ্রহ করতে যাই। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে প্রতিষ্ঠানটির ভারপ্রাপ্ত সচিব ভারপ্রাপ্ত তাজুল ইসলাম রনির সাথে যোগাযোগ করে আমরা প্রতিষ্ঠানের প্রিন্সিপাল ও চেয়ারম্যানের সাথে আলোচনায় বসি। আলোচনার একপর্যায়ে সেখানে কর্মরত বেশ কয়েকজন অফিস স্টাফ (যারা আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে জড়িত) এবং স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী ঢুকে পড়েন এবং আমাদের বাকবিতণ্ডা শুরু করেন। এরমধ্যে রুম এবং প্রতিষ্ঠানটির বাইরে মব তৈরি করে আমাদের আটকে ফেলা হয় এবং ইচ্ছেকৃতভাবে চাঁদাবাজ বানিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়।’

বিজ্ঞাপন

মিশু লেখেন, ‘আমরা এই ধরনের ন্যাক্কারজনক ঘটনায় আমরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছি। এবং অনতিবিলম্বে ঘটনার সাথে জড়িত আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের গ্রেফতারের দাবি জানাচ্ছি।’

সারাবাংলা/এমপি

অবরুদ্ধ সমন্বয়ক

বিজ্ঞাপন

কেরানীগঞ্জে ছুরিকাঘাতে নারী নিহত
২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২২:৩১

আরো

সম্পর্কিত খবর