ঘরে বসেই হবে জন্ম নিবন্ধন, পদ্ধতি নিয়ে ভাবছে ডিএনসিসি
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:০০ | আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:১৪
ঢাকা: শিশুকে স্কুলে ভর্তি, বিবাহ নিবন্ধন, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ভোটার তালিকা প্রণয়ন, জমি রেজিস্ট্রেশন, ব্যাংক হিসাব খোলাসহ আরও অনেক ক্ষেত্রে এখন জন্ম নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। কিন্তু এই জন্ম নিবন্ধনেই মানুষের বিড়ম্বনা ও ভোগান্তির যেন শেষ নেই। এদিকে সম্প্রতি পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিভিকেশন বন্ধ করেছে। ফলে জন্ম নিবন্ধনের গুরুত্ব আরও বাড়বে। এমন অবস্থায় জন্ম নিবন্ধনের নতুন কৌশল বা প্রক্রিয়া নিয়ে ভাবা হচ্ছে।
নিবন্ধন অফিসগুলোতে সরেজমিনে দেখা যায়, জন্ম নিবন্ধন করতে গেলে বর্তমান ঠিকানায় আবেদন করা যাচ্ছে না। ফলে যিনি ঢাকা থাকেন তার জন্মস্থান ও স্থায়ী ঠিকানা রংপুরে হলে সেখানে গিয়ে আবেদন করতে। আবার এই সনদ পেতে হলে তাকে ১৫ দিন অপেক্ষা করতে হয়। কিন্তু দালালদের কিছু টাকা দিলেই সেটি পাওয়া যাচ্ছে মাত্র কয়েক ঘণ্টায়। আবার টাকার দিয়ে ইচ্ছে মতো বয়স বাড়ানো বা কমানো যাচ্ছে। এ ছাড়া, উপজেলা পর্যায়গুলোতে আবেদন জমা দিতে গেলে নাটকীয়তার মাধ্যমে হয়রানির শিকার করা হচ্ছে।
এসব ভোগান্তি নিরসনে কীভাবে ঘরে বসেই জন্ম নিবন্ধন করা যায় সে বিষয়ে নতুন করে চিন্তা-ভাবনা করছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)। এটি করতে গিয়ে কী কী প্রতিবন্ধকতা রয়েছে সেটি চিহ্নিতের চেষ্টা করছেন ডিএনসিসি‘র প্রশাসক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ সারাবাংলাকে বলেন, ‘ঘরে বসেই জন্ম নিবন্ধন করা যায় কি না সেটি নিয়ে আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি। সিটি করপোরেশেন আমাকে জানিয়েছে যে, এটি করা যাবে। আমি তাদের বলেছি দুয়েক সপ্তাহ দেখব। যদি আমি নিজেই ঘরে বসে করতে পারি, তাহলে তো সবাই পারবে।’
জন্ম নিবন্ধনে ভোগান্তির বিষয় তুলে ধরা হলে তিনি বলেন, ‘প্রতিটি ওয়ার্ডে চলতি মাসের মধ্যে জন্ম নিবন্ধনের প্রয়োজনীয় ডিভাইস এবং অন্যান্য ইনস্ট্রুমেন্টগুলো দেওয়া হবে। জন্ম নিবন্ধনকে কীভাবে সহজ করা যায় সে বিষয়ে আমরা কাজ করব। মানুষ যাতে অফিসে না গিয়ে ঘরে বসেই করতে পারে সেজন্য আমরা ক্যাম্পেইন করব। কারণ, অফিসে এলে প্রথমেই তো দালালের খপ্পরে পড়ে। এটা তখন আর থাকবে না।’
জন্ম নিবন্ধনে দুর্নীতির বিষয়ে মোহাম্মদ এজাজ বলেন, ‘আমি ছাড়া বাংলাদেশে যত প্রশাসন বা মেয়র এসেছে, তারা বলেছে করাপশন করব না। কিন্তু তারা করেছে। আসলে কথায় কিছু আসে যায় না। আমি বলেছি যে, আমি কোনো দলের না। প্রতিটি ওয়ার্ডে এ বিষয়ে মনিটরিং করা হবে, আমার টিম আমাকে শিওর করবে এ সম্পর্কে।’
জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন কার্যালয়ের রেজিস্ট্রার জেনারেল (অতিরিক্ত সচিব) মো. যাহিদ হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘পুরো কাজটা অনলাইনে করা গেলে সেটি অবশ্যই ভালো হবে। তবে এতে কিছু প্রতিবন্ধকতা আছে। সেগুলা সমাধান করেই কাজগুলো করতে হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখনো অনলাইনে আবেদন করা যাচ্ছে। কিন্তু মানুষ অলস, তারা নিজের কাজ নিজে করতে চায় না। কাজগুলো সুন্দরভাবে যেন করা যায় সেটি আমরা চাই। আর সেজন্য নতুন পদ্ধতি নিয়ে ভাবা হচ্ছে।’
সারাবাংলা/এমএইচ/পিটিএম