শেষ বেলায়ও জমেনি মেলা
২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ২৩:৫৩ | আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০০:১১
ঢাকা: অমর একুশে বইমেলা আর মাত্র দুদিন আছে। এবারের মেলার শুরু থেকে পাঠক-দর্শনার্থীদের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্য হারে কম। হকার-ভিক্ষুকের উপদ্রবের পাশাপাশি ধুলোর রাজত্ব বিরক্ত করেছে সবাইকে। বিশেষ কয়েকটি দিনে প্রচুর দর্শনার্থী আসলেও ওই অর্থে বই বিক্রি হয়নি। লেখক-প্রকাশকরা আশা করেছিলেন শেষ সপ্তাহে এসে অন্তত মেলা জমবে। কিন্তু তাদের সে আশায় গুঁড়েবালি।
জিনিয়াস পাবলিকেশনের বিক্রয়কর্মী তোহা সারাবাংলাকে বলেন, ‘এবারের মেলার বেচা-বিক্রি নিয়ে আমরা আসলেই হতাশ। এবার বেশিরভাগ পাঠক শুধু বই হাতে নিয়ে ছবি তুলে রেখে চলে গেছে। আগে কখনও এমন হয়নি। অনেকে বলেছে বই কিনে হবে, পিডিএফ পড়ে নিবোনে। কিংবা পরিচিত কেউ কিনলে তার কাছ থেকে নিয়ে পড়ে নিবে।’
শিশুসাহিত্যিক পলাশ মাহবুবের সঙ্গে কথা হয় পাঞ্জেরী পাবলিকেশনের সামনে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘এবারের মেলায় পাঠক কম এ কথা সত্য। হয়তো দেশের সার্বিক পরিস্থিতির কারণে এমনটা হয়েছে।’
গায়ক-গীতিকার-লেখক লুৎফর হাসানও হতাশা প্রকাশ করলেন সারাবাংলার কাছে। তিনি বলেন, ‘আমরা আগে দেখেছি বইমেলার প্রবেশ লাইন বাংলা একাডেমি থেকে শুরু হয়ে শাহবাগ পর্যন্ত চলে গেছে। এবার কিছু কিছু দিন প্রচুর মানুষজন এলেও তারা বই কেনেননি তেমন একটা।’ তিনি আরও বলেন, ‘দেশ কিছুটা অস্থিরতার মধ্য দিয়ে চলছে। ফলে মানুষ মেলায় এসেছে কম। আবার প্রকাশকরাও সেভাবে বই প্রকাশ করেননি।’
শেষ বেলায় বইমেলা না জমলেও কিছু স্টলে ভিড় বরাবরের মত বুধবারও (২৬ ফেব্রুয়ারি) বেশি ছিল। অন্যপ্রকাশ, পাঞ্জেরী, বাতিঘর, সেবা প্রকাশনী এর মধ্যে অন্যতম।
সেবা প্রকাশনীতে বই কিনতে আসা মধ্যবয়স্ক পনির সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি সেই আশির দশক থেকে সেবার ওয়েস্টার্ন সিরিজি, তিন গোয়েন্দার ভক্ত। বলতে পারেন এ বয়সেও আমার সেই প্রেম একটুও কমেনি। শারীরিক অসুস্থতার কারণে এবার আগে আসতে পারিনি। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চলেই এলাম। পছন্দের বই কিনে বাসায় ফিরব।’
বাতিঘরের এক বিক্রয়কর্মী সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের পাঠকরা মূলত আমাদের শো-রুমগুলো থেকে প্রচুর বই কিনে। এরপরও আমাদের এখানে কিন্তু প্রতিদিনই ভিড় ছিল। বিক্রি আগের বছরগুলোর মতো না হলেও খারাপ বলব না। তবে দর্শনার্থীদের অনেকে বই কেনার চেয়ে সেলফি তোলায় ব্যস্ত ছিল, এটা অস্বীকার করব না।’
সারাবাংলা/এজেডএস