তেঁতুলিয়ায় ২ সমন্বয়কে বহিষ্কার
২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৯:৪৩ | আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ১১:৫১
পঞ্চগড়: পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে শৃঙ্খলা বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার পাশাপাশি জেলা সমন্বয়কদের নিয়ে মিথ্যাচার বক্তব্য দেওয়াসহ বিভিন্ন অভিযোগে হযরত আলী ও ওবায়দুল্লাহ (ওবায়দুল হক) নামে দুই সমন্বয়ককে বহিষ্কার করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড় জেলা সংগঠন।
বুধবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন পঞ্চগড় জেলার আহ্বায়ক ফজলে রাব্বী, সদস্য মো. আকিব ও মো. মনজিল সই করা এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিত আহ্বায়ক ফজলে রাব্বী সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
অভিযুক্ত ওই দুই সমন্বয়ক জেলার তেঁতুলিয়া উপজেলায় নেতৃত্ব দিয়ে আসছিলেন।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড় জেলা থেকে জানানো যাচ্ছে যে- তেঁতুলিয়া উপজেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের প্রতিনিধি হিসেবে কাজ করে আসছিলেন মো. হযরত আলী ও মো. ওবায়দুল্লাহ। কিন্তু ৫ আগস্টের পরবর্তী সময়ে তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে নানান ধরনের শৃঙ্খলা বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। সেই সঙ্গে জেলা সমন্বয়কদের নিয়ে মিথ্যাচার বক্তব্য প্রদান করেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ ধরনের কাজকে কোনোভাবেই সমর্থন করে না। তাই শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড় জেলার পক্ষ থেকে তাদেরকে বহিষ্কার করা হলো। পরবর্তী সময়ে তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কোনো কার্যক্রমে অংশ্রহণ করতে পারবেন না।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড় জেলার আহ্বায়ক ফজলে রাব্বী বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানার ব্যবহার করে তারা বিভিন্ন অফিসে গিয়ে সমন্বয়ক পরিচয়ে শৃঙ্খলা বহির্ভূত কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছেন। তার প্রতিবাদ করায় আমাদের গুপ্ত সংগঠন ও শিবির বলে অপ্রচার চালাচ্ছেন। কয়েকদিন আগে তেঁতুলিয়া যাওয়ার পথে কারণ ছাড়াই জেলার সমন্বয়ক সান ও আমাকে মারতে আসেন। একইসঙ্গে তারা আমাদের গুপ্ত সংগঠনের সদস্য বলে আখ্যায়িত করছেন। তাদের এমন কর্মকাণ্ডে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
অভিযুক্ত হযরত আলী ও ওবায়দুল্লা বলেন, ‘সারাদেশের প্রেক্ষাপটে আমরা নিজেদের জায়গা থেকে সবার মতো আন্দোলনে অংশ নিয়েছি। আমরা কারো বাপের কথায় আন্দোলন করিনি। যে অভিযোগ তুলে আমাদের বহিষ্কারের আদেশ দিয়েছে সেটার কোনো ভিত্তি নেই। কারণ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পঞ্চগড়ে কোনো কমিটি নেই। আর সে কারণে তিনি বহিষ্কার করতে পারেন না। আমরা যতদূর মনে জানি সমন্বয়ক ফজলে রাব্বী শিবির করেন।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের পালটা অভিযোগের ভিত্তিতে তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বী বলেন, ‘আমি জনগণের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের এখানে অনেকে অনেকভাবে চাঁদাবাজির চেষ্টা করছে। এগুলোর বিরুদ্ধে আমি সব সময় সোচ্চার থাকায় আমার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠছে। বহিষ্কারের ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’
তিনি বলেন, ‘আমি কারো সঙ্গে যুক্ত না, শৃঙ্খলার বাইরে কোনো কর্মকাণ্ডে জড়িত না। কারো বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে সেটার সত্যতা যাচাই করে দেখা উচিত। আমরা গণতন্ত্র বাংলাদেশ সরকারের চাকরি করতে এসেছি, আমরা সরকারের নির্দেশনা মেনে কাজ করি। এখানে কারো সেল্টারের প্রয়োজন নেই। কারো ছত্রছায়ায় থেকে অপকর্ম করার প্রচেষ্টা করার কোনো সুযোগ এই চাকরিতে নেই। যদি কারো অভিযোগ থাকে, সুনির্দিষ্ট অভিযোগ করুক। তদন্ত হওয়ার পর সত্য প্রমাণিত হলে আমাকে শাস্তি দেওয়া হোক। আর যদি তা না হয়, তাহলে এটাকে অপপ্রচার হিসেবে ধরে নেওয়া হোক।’
সারাবাংলা/ইআ