ঢাকা: পবিত্র রমজান, ঈদুল ফিতরসহ আরও কয়েকটি ছুটি মিলিয়ে ১ মাস ১০ দিন অর্থাৎ টানা ৪০ দিনের ছুটি পাচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এ সময় দেশের সকল স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে। দীর্ঘ এই ছুটিতে শিক্ষার্থীদের শিখন ঘাটতি দেখা দেবে বলে মনে করছেন অভিভাবকরা। তাই তারা এই ছুটি প্রথম রোজা নয়, ২০ রোজা থেকে দেওয়ার সুপারিশ করেছেন।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) সে হিসেবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সর্বশেষ ক্লাস হবে।
কারণ ২৮ ফেব্রুয়ারি ও ১ মার্চ শুক্র ও শনিবারের ছুটি।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা জানিয়েছেন, এসব ছুটির ঘোষণা দিয়ে রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এরমধ্যেই ছুটির নোটিশ দেওয়া হয়েছে। সে নোটিশে বলা হয় পবিত্র রমজান মাস, শুভ দোলযাত্রা, স্বাধীনতা দিবস, জুমাতুল বিদা, শবে কদর ও ঈদুল ফিতরের ছুটি ২ মার্চ থেকে শুরু হয়ে শেষ হবে ৮ এপ্রিল। এর দুই দিন বাদে অর্থাৎ ১০ এপ্রিল থেকে শুরু হচ্ছে চলতি বছরের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা। এ পরীক্ষায় যে সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে পরীক্ষা কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হবে সেসব প্রতিষ্ঠান টানা ২ মাস ১০ দিন ছুটি থাকবে। তবে রমজান, ঈদ এবং এসএসসি পরীক্ষার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দীর্ঘদিন বন্ধ থাকছে।
এতে শিখন ঘাটতি দেখা দেবে। সেজন্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতর থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে পরীক্ষার ফাঁকে ফাঁকে ক্লাস নেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছে। তবে সেজন্য কোনো বাধ্যবাধকতা থাকবে না।
এ প্রসঙ্গে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের উপপরিচালক (মাধ্যমিক) মো. ইউনুছ ফারুকী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘সরকারি শিক্ষাপঞ্জি অনুযায়ী এ ছুটি থাকবে। এই ছুটি সরকারি, বেসরকারি সব পর্যায়ে স্কুলের জন্য প্রযোজ্য।’
এদিকে ২০ রমজান পর্যন্ত দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শ্রেণির কার্যক্রম চালু রাখার দাবি জানিয়েছে অভিভাবক ঐক্য ফোরাম। সে জন্য সংগঠনটির সভাপতি জিয়াউল কবির দুলু ও সাধারণ সম্পাদক সেলিম মিয়া মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. আজাদ খানের কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।
এ প্রসঙ্গে জিয়াউল কবির দুলু সারাবাংলাকে বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের হাতে এখনো সব বই পৌঁছায়নি। ফলে গত দুই মাসে সেভাবে পড়াশোনা হয়নি। এর মধ্যে রমজান, ঈদুল ফিতরের এক মাসের বেশি ছুটি। আমরা বলছি, অন্তত ২০ রমজান থেকে যেন ছুটি দেওয়া হয়। সেটা সম্ভব না হলে অনলাইনে পাঠদানের যেন ব্যবস্থা রাখা হয়।
সরকারি নির্দেশনা বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুসরণ করার কথা। সে নির্দেশনা অনুযায়ী বেসরকারি কিছু স্কুল বন্ধ শুরু হবে। আবার কিছু নিজেদের মত করে বন্ধ রাখবে। বিশেষ করে কিন্ডারগার্টেনগুলো বন্ধ হবে ১০ রমজান থেকে। আবার কেউ ১৫ রমজান থেকে বন্ধ শুরু করবেন। প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষকেরা জানান, শিখন ঘাটতি এড়াতেই তারা আরও ১০ দিন স্কুল খোলা রাখতে চান।
হাটখোলার ব্লুবার্ড কিন্ডারগার্টেনের প্রিন্সিপাল হুমায়ুন কবীর সারাবাংলাকে বলেন, ঈদের পর পরই বাচ্চাদের পরীক্ষা। এতদিন গ্যাপ পড়লে বাচ্চারা সবকিছু ভুলে যাবে। এমনিতেই ছোট ছোট বাচ্চারা স্কুলে আসতে চায় না। তাই ওদের জন্য এতদিন ক্লাস বন্ধ রাখা কঠিন।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা সাধারনত ১০ রোজা থেকে স্কুল বন্ধ শুরু করি। এ রকম ক্লাস খোলা রাখা হবে এই এলাকার স্পার্কেল ইন্টারন্যাশনাল, লিটল জুয়েল কিডস, শেমরক, ফুলকুঁড়ি কিন্ডারগার্টেনসহ এ ধরনের অধিকাংশ বিদ্যালয়।