ঢাকা: বাইরে থেকে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা এবং ভেতর থেকে একটি পক্ষ গণতন্ত্রকে বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
বৃহস্পতিবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বেলা পৌনে ১২ টায় জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হল প্রাঙ্গণে আয়োজিত দলের বর্ধিত সভায় দেওয়া স্বাগত বক্তব্যে তিনি এ অভিযোগ করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘তারেক রহমানের নেতৃত্বে বর্ধিত সভার পর সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড গুলো অত্যন্ত গুরুত্বের সঙ্গে করব। খালেদা জিয়া কারাগারে যাওয়ার পর তিনি অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে আমাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন। ডান বামকে এক জায়গায় এনে ৩১ দফা দিয়েছেন।’
তিনি বলেন, ‘আপনারা দেখেছেন কী পরিমাণ ত্যাগের বিনিময়ে বিএনপির মতো একটি লিবারেল ডেমোক্রেটিক দল নিরন্তর সংগ্রাম চালিয়ে গেছে। এরই ফলশ্রুতিতে দেশ থেকে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘শেখ হাসিনার পতনের পর দেশের মানুষ আশা করেছিল অতি দ্রুত তারা ভোট দিতে পারবেন, তাদের কাঙ্ক্ষিত গণতন্ত্র ফিরে পাবেন। কিন্তু আমরা অত্যন্ত দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি, এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কোনো উদ্যোগ দেখতে পারছি না। আমরা ফ্যাসিবাদ তাড়িয়েছি গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার জন্য। কিন্তু, সেটা এখনো নিশ্চিত হয়নি। অথচ এ জন্য আমরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পালিয়ে যাওয়া শেখ হাসিনা দেশের বাইরে থেকে ও দেশের ভেতর থেকে একটা পক্ষ প্রতিনিয়ত গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত করার চেষ্টা করছে। তারা অখণ্ড বাংলার বিখ্যাত মনীষীদের নামে থাকা স্থাপনাগুলো থেকে তাদের নাম সরিয়ে বিতর্কিত ব্যক্তিদের নামে নামকরণের কথা বলে একটা অস্থিরতা তৈরির চেষ্টা করছে। এ ব্যাপারে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।’
এর আগে, কোরআন তেলোয়াতের মধ্য দিয়ে বর্ধিত সভা শুরু হয়। দেশের চলমান পরিস্থিতি, আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখা এবং মিত্র দলগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক অটুট রাখা— এই চার এজেন্ডা সামনে রেখে এবারের বর্ধিত সভা ডাকা হয়েছে। বর্ধিত সভার প্রথম সেশন দুপুরের মধ্যে শেষ হয়ে দ্বিতীয় সেশন শুরু হবে বিকেলে। এ সেশনটি হবে রুদ্ধদ্বার।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর লা মেরিডিয়ান হোটেলে দলের বর্ধিত সভা ডেকেছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ওই সভার পর ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে ‘জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি’ মামলায় কারাগারে পাঠানো হয়।
দীর্ঘ সাত বছর পর আয়োজিত বর্ধিত সভায় সারা দেশের প্রায় চার হাজার নেতা-কর্মী অংশ নিচ্ছেন। বর্ধিত সভায় আসা নেতাদের মধ্যে এক ধরনের উৎসাহ-উদ্দীপনা কাজ করছে।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে ডাকা এ বর্ধিত সভায় দেশের বর্তমান রাজনৈতিক হালচাল ও দলের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা হবে। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে আসবে দিকনির্দেশনামূলক বক্তব্য। নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয়টি গুরুত্ব পাবে শীর্ষ নেতাদের আলোচনায়।
বর্ধিত সভায় দলের নির্বাহী কমিটির কর্মকর্তা ও সদস্যরা ছাড়াও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে যারা বিএনপির চূড়ান্ত মনোনয়ন পেয়েছিলেন এবং যারা মনোনয়নের জন্য প্রাথমিক চিঠি পেয়েছিলেন তারাও উপস্থিত আছেন। সভা মঞ্চে আসন নিয়েছেন স্থায়ী কমিটির সদস্যরা। ভাইস চেয়ারম্যান, উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য, যুগ্ম মহাসচিব, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্যরা আছেন প্যান্ডেলের সামনের সারিতে।