‘প্রতিবেশি দেশের অত্যাচারে আমরা দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তিতে আছি’
১ মার্চ ২০২৫ ১০:৫১ | আপডেট: ১ মার্চ ২০২৫ ১০:৫৭
সেন্টার ফর জাকাত ম্যানেজমেন্টের কার্যালয়ে আয়োজিত ‘লুক ইস্ট পলিসি: ইকোনোমিক, জিওপলিটিক্যাল, ক্লাইমেট, কালচারাল পারসপেকটিভ’ শীর্ষক সেমিনার
ঢাকা: সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক এন্ড পিস স্টাডিজের (সিএসপিএস) চেয়ারম্যান এবং সাবেক সচিব মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া বলেন, প্রতিবেশি দেশের অত্যাচারে আমরা দীর্ঘদিন ধরে ভোগান্তিতে আছি। সেই অত্যাচার মোকাবিলায় কিভাবে নিজেদের নিরাপত্তা রক্ষা করা যায়, সেটারই অলটারনেটিভ ‘লুক ইস্ট পলিসি’। এই শব্দটি নতুন কিছু না। এটি প্রথম খালেদা জিয়া ২০০১ সালে শুরু করেছিলেন। কিন্তু এটি আর বেশি দূর আগাতে পারেনি।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সেন্টার ফর জাকাত ম্যানেজমেন্টের কার্যালয়ে ‘লুক ইস্ট পলিসি: ইকোনোমিক, জিওপলিটিক্যাল, ক্লাইমেট, কালচারাল পারসপেকটিভ’ শীর্ষক সেমিনারে এ সব কথা বলেন তিনি।
মোহাম্মদ আইয়ুব মিয়া বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ ও মালেশিয়ার সরকারের মধ্যে একটা ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে। সেই ক্ষেত্রে কিন্তু অনেক কিছু করার করার আছে। সেটা কতটুকু করা যাবে সেটা জানিনা, কারণ এই সরকারের স্থায়িত্ব আমাদের কাছে পরিস্কার না। ইন্টারনাল এতো ইস্যু নিয়ে তারা ব্যস্ত যে অন্যদিকে নজর দেওয়ার সময় নাই।
তিনি বলেন, সিএসপিএস থেকে এ বিষয়টিকে অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিচ্ছি। সেই সঙ্গে পাঁচটি ইস্যুর পরে পাঁচটি পেপার তৈরি হয়ে যাক রিসার্চ আর্টিকেল হিসেবে। আমরা এই পাঁচটি ইস্যুকে নিয়ে একটি কম্পাইল বই তৈরি করবো। এটা বর্তমান সময়ের জন্য না, দীর্ঘকালের জন্য একটি রিসার্চ হিসেবে থেকে যাবে। আমাদের পরবর্তী জাতির জন্য চিন্তার কিছু উপাদান রেখে যাওয়া উচিৎ। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে আমরা বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে দেখছি। আগামীতে সিকিউরিটি এন্ড রিলিজিয়ন নিয়ে সিএসপি আলোচনা করবে। তৃতীয় আলোচনা হবে ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কেমন হওয়া উচিৎ। আমার মনে হয় এই জাতির মধ্যে চিন্তা করার লোকের সংখ্যা বেশি নাই। অন্তত যারা এই দেশে নেতৃত্ব দিবে তাদের কাছে তিনটি উপাদান দেওয়ার চেষ্টা করবো।
বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে ক্লাইমেট পরিবর্তন নিয়ে পল্লী কর্ম সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) ডি এম ডি ড. ফজলে রাব্বি সাদিক আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশ বিশ্বের জলবায়ুর প্রতি সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে একটি। গত বিশ বছর ধরে গড়ে এটি সপ্তম সর্বাধিক ঝুঁকিপূর্ণ দেশ। ২০৫০ সালে কার্বন নিউট্রাল হতে হবে। না হলে আমাদের প্রসিডিউর এক্সপেনসিভ হবে। উন্নত দেশে প্রতিবছর এম্বিশন বাড়ছে। উন্নত দেশে কার্বন বাজেট রয়েঠে। কিন্তু সেটি তারা মেইনটেইন করে না। আমেরিকার আইন খুবই নেগেটিভ। তারা কথা দেয় কিন্তু পরে মানে না। পাঁচটি দেশের জন্য কিটো প্রটোকল সফল হয়নি। কোন গ্রুপের মাধ্যমে আমরা আসলে কাজ করবো তা এখনই ঠিক করতে হবে।’
চেঞ্জ ইনিশিয়াটিভ এর হেড অব রিসার্চ মো. ইশতিয়াক বারি বলেন, ‘বাংলাদেশ দীর্ঘদিন ধরে জি-৭৭ এবং স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) গ্রুপের সদস্য হিসেবে আন্তর্জাতিক জলবায়ু আলোচনায় সক্রিয় ভূমিকা রেখে আসছে। তবে, আমাদের কূটনৈতিক মনোযোগ মূলত এলডিসি গ্রুপের দিকেই কেন্দ্রীভূত। তবে জি-৭৭ এর সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক খুব দৃঢ় নয় এবং এলএমডিসি-এর সাথেও কোনো আনুষ্ঠানিক সংযোগ নেই। ফলে এলডিসি থেকে উত্তরণের পর বাংলাদেশ একটি কূটনৈতিক শূন্যতার সম্মুখীন হতে পারে। এই শূন্যতা পূরণের জন্য ইউএনএফসিসিসি-এর অধীনে একটি শক্তিশালী ফোরাম গঠন জরুরি। এতে আমাদের মতো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলো একত্রিত হয়ে নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে পারবে।’
সেমিনারে উপস্থিত ছিলেন- ইসলামী ব্যাংকের সাবেক ম্যানেজিং ডিরেক্টর এবং ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংকের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, অধ্যাপক ড. আব্দুল লতিফ মাসুম (সাবেক ভিসি, পটুয়াখালি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়), মাসুমুর রহমান খলিলি (দৈনিক নয়াদিগন্তের এক্সিকিউটিভ সম্পাদক), ড. মো. মিজানুর রহমান (সিএসপিএস এর এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর), ড. ফয়সাল খান (এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব পলিসি স্টাডিস), ডি. মুনির আহমেদ, মো. মাহবুবুর রহমানসহ আরও অনেকে।
সারাবাংলা/এমএইচ/এনজে