Saturday 01 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রোববার কর্মবিরতি পালন করবে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য পরিষদ

স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
১ মার্চ ২০২৫ ১৫:৪০

পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করবে ২৫টি ক্যাডারের সদস্যরা।

ঢাকা: বিভিন্ন ক্যাডারের ১২ কর্মকর্তার সাময়িক বরখাস্তের প্রতিবাদে এবং আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের দাবিতে রোববার (২ মার্চ) পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করবে ২৫টি ক্যাডারের সদস্যরা।

শনিবার (১ মার্চ) রাজধানীর খামার বাড়িতে অনুষ্ঠিত সাংবাদিকদের সঙ্গে এক মতবিনিময়ে পরিষদের নেতারা তাদের এ কর্মসূচীর কথা জানান।

জানা যায়, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশের পর আন্তঃক্যাডার দ্বন্দ্ব ঘিরে যে সকল সরকারি কর্মকর্তা পরস্পরের বিরুদ্ধে ফেসবুকে বিরূপ মন্তব্য করেছেন, তারা শাস্তির মুখে পড়ছেন। বিসিএস প্রশাসন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ ক্যাডারসহ ১২ জন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এ সকল কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে নেওয়া সাময়িক বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করার দাবি জানিয়েছে আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ। একই সঙ্গে তাদের ক্যাডার সংক্রান্ত বৈষম্য নিরসনে সরকারের সঙ্গে আলোচনার দাবি তাদের। এসব দাবিতেই রোববার (২ মার্চ) পরিষদভুক্ত সকল ক্যাডার পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করবে। ওইদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কর্মকর্তারা নিজ নিজ দফতরের সামনে কালো ব্যাজ পরে ব্যানারসহ অবস্থান করবেন।

সভায় আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক ড. মুহম্মদ মফিজুর রহমান বলেন, ‘জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনে ২৫টি ক্যাডারের পক্ষ থেকেই পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা এবং উপসচিব পদে কোটা বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছিল। সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকেও সিভিল সার্ভিসে পেশাদারিত্বকে গুরুত্ব দেওয়ার জন্য আহ্বান করা হয়েছে। কিন্তু এসব উপেক্ষা করে সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে শুধু প্রশাসন ক্যাডারকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। এই রিপোর্ট পুরোপুরি বাস্তবায়িত হলে রাষ্ট্র সংস্কারের প্রচেষ্টা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবে ও প্রশাসনিক ফ্যাসিজম আরও শক্তিশালী হবে।

বিজ্ঞাপন

এ সময় আরও বলা হয়, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে ক্যাডার বহির্ভূত করার প্রস্তাব থেকে সরে এসে সুকৌশলে নিয়োগের প্রক্রিয়ায় ভিন্নতা রাখা হয়েছে। যেন ধীরে ধীরে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যকে মূলধারা থেকে বের করা যায়। এছাড়াও, পরিবার পরিকল্পনা ক্যাডারের বিষয় সংস্কার প্রস্তাবে না রাখা ও পরিসংখ্যান ক্যাডারকে অযৌক্তিকভাবে সার্ভিসের বহির্ভূত করার সুপারিশ করা হয়েছে। এর ফলে এইসব সেক্টরে মেধাবীরা কম আকৃষ্ট হবে এবং এসব সেক্টরসমূহ মেধাশূন্য হয়ে পড়বে।

সভায় পরিষদের পক্ষ থেকে কৃত্য পেশাভিত্তিক মন্ত্রণালয় (ক্যাডার যার, মন্ত্রণালয় তার) বাস্তবায়ন, উপসচিব পদে কোটা পদ্ধতি বাতিল করে মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ, সকল ক্যাডারের সমতা, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্যাডারসহ সব ক্যাডারকে একই কমিশনের আওতায় রাখা, পরিবার পরিকল্পনা ও পরিসংখ্যান ক্যাডারকে সার্ভিসে অব্যাহত রাখা, সুপিরিয়র এক্সিকিউটিভ সার্ভিসে প্রবেশের পর শুধুমাত্র প্রশাসন ক্যাডারের জন্য পূর্বের সার্ভিসে ফেরার সুবিধার প্রস্তাব বাতিল, জেলা কমিশনারকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব প্রদানের প্রস্তাব বাতিল, ‘এডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস’ এর পরিবর্তে ‘ভূমি সার্ভিস’ বা ‘ভূমি ব্যবস্থাপনা সার্ভিস’ নামকরণ, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে ‘মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়’ অথবা ‘সরকারি কর্মচারী ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়’ হিসেবে নামকরণসহ বিভিন্ন প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।

এ সময় আরও জানানো হয়, সম্প্রতি ফেসবুকে লেখালেখির মত তুচ্ছ কারণে ২৫ ক্যাডারের ১৩ জন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই ধরনের কাজ প্রশাসন ক্যাডারের সদস্যরা করলেও তাদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বৈষম্যপূর্ণ রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাকে কাজে লাগিয়ে প্রশাসন ক্যাডার ২৫ ক্যাডারের কার্যক্রমকে বাধাগ্রস্থ করতে এমন ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। বিভিন্ন ক্যাডার কর্মকর্তাদের সাময়িক বরখাস্তের প্রতিবাদে এবং আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসনের দাবিতে রোববার (২ মার্চ) পরিষদভুক্ত সকল ক্যাডার পূর্ণ দিবস কর্মবিরতি পালন করবে।

বিজ্ঞাপন

আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদের সমন্বয়ক কৃষিবিদ মো. আরিফ হোসেন বলেন, ‘আমরা আশা করি সরকার আমাদের কথা শুনবেন এবং জনসেবা নিশ্চিতে আমাদের দাবি মেনে নিতে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।

সারাবাংলা/জেআর/এমপি

‘আন্তঃক্যাডার বৈষম্য নিরসন পরিষদ কর্মবিরতি

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর