Sunday 02 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রাজধানীতে আইনজীবীসহ ৪ জনের আত্মহত্যা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
১ মার্চ ২০২৫ ২২:৫৭ | আপডেট: ১ মার্চ ২০২৫ ২২:৫৯

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা: রাজধানীতে আইনজীবীসহ চারজন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শুক্রবার দিবাগত রাত থেকে শনিবার (১ মার্চ) বিকেল পর্যন্ত পৃথক স্থানে এসব অপমৃত্যু ঘটে।

মৃতরা হলেন— লালবাগের সাদিয়া আক্তার(২০), চকবাজারের মরিয়ম আক্তার (২২), কলাবাগানের আইনজীবি টাইটাস হিল্লোল(৫৫) ও হাজারীবাগের আকাশ সরদার(২২)।

পুলিশ ও স্বজনরা জানান, রাজধানীর কলাবাগান থানা ক্রিসেন্ট রোড এলাকার একটি বাসায় টাইটাস হিল্লোল রেমা (৫৫) নামে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবীর গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শনিবার দুপুরে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠায়।

মৃত হিল্লোলের ময়মনসিংহ জেলার হালুয়াঘাট থানার রামপুরা গ্রামের লিডিং স্টোন রেমার ছেলে। তিনি কলাবাগান ক্রিসেন্ট রোডে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে থাকতেন।’

কলাবাগান থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দন কুমার দাস বলেন, ‘খবর পেয়ে কলাবাগান ক্রিসেন্ট রোডের বাসার চারতলা থেকে ওই আইনজীবীর ঝুলন্ত মরদহ উদ্ধার করা হয়।’

পরিবারের বরাত দিয়ে এসআই আরও বলেন, ‘আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ছিলেন তিনি। বেশ কিছুদিন থেকে ঘুমের ওষুধ নিতেন। হতাশাগ্রস্থ থেকেই ফাঁস দিয়েছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। ময়নাতদন্ত শেষে মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।’

এদিকে চকবাজার থেকে উদ্ধার করা হয় মরিয়ম আক্তারের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মরিয়ম আক্তার কুমিল্লা জেলার বরুড়া থানার পূর্ব আড্ডা বেপারি গ্রামের মৃত তাজুল ইসলামের মেয়ে। সে চকবাজারের ওয়াটার ওয়ার্কস রোডে একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন ও বিউটিপার্লারে বিউটিশিয়ানের কাজ করতেন।

মৃতের মা সেলিনা বেগম বলেন, ‘আমি নিজে গ্রামের বাড়িতেই থাকি। মেয়ে একাই চকবাজারের বাসায় ভাড়া থাকত। পুলিশের মাধ্যমে জানতে পারি, পুলিশ দরজা ভেঙে আমার মেয়ের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে। তবে কী কারণে মরিয়ম গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে তা বলতে পারি না।’

বিজ্ঞাপন

চকবাজার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) বেবী নাজনীন বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।’

অপরদিকে মৃত আকাশের মরদেহ হাজারীবাগ জিগাতলা মিতালী রোডের বাসায় আত্মহত্যা করেছেন। তিনি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার বেতগ্রামের রহমত সরদারের ছেলে।

সরদারের ভাই রাশেদ সরদার বলেন, গত দুইদিন আগে গ্রাম থেকে ঢাকায় আমার বাসায় আসে আকাশ। সাতমাস আগে বিয়ে করে সে। সে মানসিক রোগে ভোগায় তার চিকিৎসা চলছিল। দুপুরে বাসায় এসে দেখি দরজা বন্ধ। পরে জানালা দিয়ে তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে দরজা ভেঙ্গে উদ্ধার করি। পরে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

অন্যদিকে মৃত সাদিয়া আক্তার বাড়ি বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার দাতপুর গ্রামে। লালবাগ শহীদনগর বালুঘাট এলাকায় ভাড়া থাকত। আগে একটি ব্যাগ করখানায় কাজ করত।

মৃত সাদিয়া আক্তারের বোন জামাই নুর হোসেন বলেন, ‘তিন বছর আগে সাদিয়ার বিয়ে হয়েছিল। সেটা ছাড়াছাড়ি হয়ে গেছে। পরে এলাকায় একটি ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক হয়। ওই ছেলের সঙ্গে মোবাইলে ঝগড়া হয়। ঝগড়ার জের ধরে শুক্রবার রাতে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে ফাঁস দেয়। পরে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেলে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ (পরিদর্শক) মো. ফারুক মৃত্যুর বিষয় নিশ্চিত করে জানান, শুক্রবার রাতে সাদিয়া ও শনিবার বিকেলে আকাশকে স্বজনরা হাসপাতালে নিয়ে আসেন। পরে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করলে ময়নাতদন্ত শেষে সাদিয়ার মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। অন্যদিকে হাজারীবাগের যুবকের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে রাখা হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পের ইনচার্জ আরও বলেন, তাদের স্বজনরা জানিয়েছেন, তারা আত্মহত্যা করেছেন।

সারাবাংলা/এসএসআর/এসআর/এইচআই

আইনজীবীর আত্মহত্যা ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা রাজধানী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর