নিষিদ্ধঘোষিত কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টি (পিকেকে) শনিবার (১ মার্চ) তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে, দলটির ঘনিষ্ঠ এক সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে। সংগঠনটি তাদের কারাবন্দি নেতা আবদুল্লাহ ওজালানের নিরস্ত্রীকরণ আহ্বান মেনে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা চার দশকের দীর্ঘ বিদ্রোহের অবসানের পথে বড় পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) ওজালান পিকেকে’কে অস্ত্র পরিত্যাগ ও দল ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানান। প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান সরকার এবং বিরোধী প্রো-কুর্দিশ ডেম পার্টি এই আহ্বানের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে।
১৯৮৪ সালে সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করা পিকেকে, বর্তমানে ইরাকের উত্তরের পাহাড়ি অঞ্চলে ঘাঁটি তৈরি করেছে। বিদ্রোহ চলাকালে ৪০ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। অস্ত্রবিরতি সফল হলে এটি তুরস্কের দক্ষিণ-পূর্ব অঞ্চলে শান্তি ও উন্নয়নের জন্য ঐতিহাসিক সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে, যেখানে সংঘর্ষ বহু মানুষের প্রাণ নিয়েছে এবং অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
সংগঠনটি আশা করছে, আঙ্কারা ওজালানের ওপর আরোপিত কঠোর নিষেধাজ্ঞা শিথিল করবে যাতে তিনি নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব দিতে পারেন। ফিরাত সংবাদ সংস্থার বরাতে পিকেকে এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘আমরা এই আহ্বানের সাথে সম্পূর্ণ একমত এবং এর প্রয়োগ নিশ্চিত করবো।’
শনিবার (১ মার্চ) রমজানের প্রথম দিনে ইস্তানবুলে শহিদ পরিবারের সাথে এক ইফতার অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান বলেন, নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া যদি ব্যর্থ হয়, তাহলে পিকেকের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পুনরায় শুরু করা হবে।
তিনি বলেন, ‘যদি প্রতিশ্রুতি বারবার ভঙ্গ করা হয়, নাম পরিবর্তন করে ছলচাতুরি করা হয়, তাহলে দায় আমাদের নয়। যদি প্রয়োজন হয়, আমরা আমাদের সামরিক অভিযান অব্যাহত রাখবো, যেখানে প্রয়োজন সেখানে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং প্রতিটি সন্ত্রাসীকে নির্মূল করা হবে।’
বিশ্লেষকদের মতে, প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান এর আগেও শান্তি প্রক্রিয়া এগিয়ে নেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। তবে ২০০৯-২০১১ এবং ২০১৩-২০১৫ সালে হওয়া আলোচনাগুলো ব্যর্থ হয় এবং সংঘর্ষ আরও বেড়ে যায়।
তুরস্কের প্রতিবেশী ইরাক ও ইরান, সেইসঙ্গে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ওজালানের নিরস্ত্রীকরণ আহ্বানকে স্বাগত জানিয়েছে।