স্বল্প মেয়াদে শ্রমিক অসন্তোষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য অন্যতম ঝুঁকি: অর্থ বিভাগ
২ মার্চ ২০২৫ ১৬:১০ | আপডেট: ২ মার্চ ২০২৫ ১৯:৪৪
ঢাকা: স্বল্প মেয়াদে শ্রমিক অসন্তোষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের জন্য অন্যতম ঝুঁকির উৎস বলে মনে করছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ। এ প্রেক্ষিতে ঘনীভূত হওয়ার আগেই শ্রমিক অসন্তোষ প্রশমিত করা অন্তর্বর্তী সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার হিসেবে বিবেচনার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে শ্রমিক অসন্তোষের ছিঁটকে পড়া প্রভাব প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার যথাযথ মনিটরিং প্রয়োজন বলে মনে করছে অর্থ বিভাগ।
অর্থ বিভাগের এক প্রতিবেদনে এসব বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বেক্সিমকো’র শ্রমিক অসন্তোষ নিরসনে কারখানা বন্ধ করে সম্পদ বিক্রয়পূর্বক সকল শ্রমিকের পাওনা পরিশোধের উদ্যোগ গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে ইতোমধ্যেই বেক্সিমকো গ্রুপের ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন আনার পাশাপাশি উচ্চ আদালতের নির্দেশে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক রিসিভার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে শিল্প খাতের একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে শ্রমিক অসন্তোষকে চিহ্নিত করে বলা হয়েছে, বেক্সিমকো গ্রুপের টেক্সটাইলসহ অন্যান্য কারখানার প্রায় ৪০ হাজার কর্মচারীর সংহিস আন্দোলনে রাস্তা অবরোধসহ আশেপাশের অন্যান্য শিল্প কারখানায় ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করায় সেগুলো ঝুঁকির মুখে রয়েছে। যেসব কারখানা মালিক পলাতক রয়েছে বা দুর্নীতি/অর্থ পাচারের অভিযোগে বিদেশে চলে গিয়েছে, তাদের মালিকানাধীন কারখানাগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বা নিয়মিত বেতন-ভাতা দিতে না পারায় শ্রমিক অসন্তোষের সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া স্বার্থান্বেষী মহলের প্ররোচনায় শিল্পাঞ্চলে প্রায়শ:ই শ্রমিক অসন্তোষ এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র আন্দোলনের মত ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ও জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, শ্রমিক অসন্তোষ মোকাবেলায় সরকার ইতোমধ্যে কিছু কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। এগুলো হচ্ছে- রফতানিমুখী শিল্প প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক কর্মচারীদের গত আগস্টের বেতন-ভাতা প্রদান নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে চলতি মূলধন ঋণসীমার বাইরে মেয়াদি ঋণ সুবিধা প্রদানের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
তৈরি পোশাক খাতের শ্রমিক কর্মচারীদের অসন্তোষ নিরসনসহ স্থিতাবস্থার স্বার্থে চলতি অর্থবছরের পরিচালনা বাজেট থেকে বেক্সিমকো গ্রুপকে ৫০ কোটি টাকাসহ আরও ৩টি প্রতিষ্ঠানকে সর্বমোট ৮৭ কোটি টাকা সুদমুক্ত ঋণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে এবং আরও একটি প্রতিষ্ঠানকে ঋণ প্রদান প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
এ বিষয়ে অর্থ বিভাগ বলেছে, এ সুবিধা বর্ধিত করা বা অন্য নতুন কোনো প্রতিষ্ঠানকে এ ধরনের আর্থিক সহায়তা প্রদান করা অনুচিত হবে। কারণ, অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এর সুযোগ নিতে পারে, যা এক ধরনের নৈতিক বিপদ ডেকে আনতে পারে।
সারাবাংলা/আরএস