Tuesday 04 Mar 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৪ মার্চ ১৯৭১
রেডিও পাকিস্তানের নামকরণ হয় ‘ঢাকা বেতার কেন্দ্র’

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
৪ মার্চ ২০২৫ ০৮:০০ | আপডেট: ৪ মার্চ ২০২৫ ০৩:৩৩

৪ মার্চ ১৯৭১: রেডিও পাকিস্তানের নামকরণ হয় ‘ঢাকা বেতার কেন্দ্র’। ছবি কোলাজ: সারাবাংলা

ঢাকা: গণবিক্ষোভে টালমাটাল ছিল ৪ মার্চ ১৯৭১। দিন যতই যাচ্ছিল এক দফার দাবি অর্থাৎ স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষার তীব্রতা ততই বৃদ্ধি পাচ্ছিল। এ দিন সামরিক জান্তার সান্ধ্য আইন ভঙ্গ করে রাজপথে নেমে আসে হাজারো মানুষ।

এ দিন ছিল দেশব্যাপী লাগাতার হরতালের তৃতীয় দিন। তবে এই দিন হরতাল ছিল আট ঘণ্টার। বঞ্চিত-শোষিত বাঙালি তখন ক্ষোভে ক্রমেই ফুঁসে উঠছিল ঔপনিবেশিক পাকিস্তানি শাসক-শোষকদের বিরুদ্ধে।

বিজ্ঞাপন

আন্দোলনের পাশাপাশি তৎকালীন আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা দফায় দফায় বৈঠকে বসেন ৭ মার্চের জনসভা সফল করার জন্য। তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমানে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) চলতে থাকে জনসভার প্রস্তুতি। পাশাপাশি ঢাকাসহ সারাদেশেই গঠন হতে থাকে সংগ্রাম কমিটি। অন্যদিকে ছাত্র নেতারা গোপনে নানা স্থান থেকে অস্ত্র সংগ্রহ অভিযান চালাতে থাকেন বেশ জোরেশোরেই।

একাত্তরের এই দিনে অর্থাৎ ৪ মার্চ, ১৯৭১ বিক্ষুব্ধ বাঙালির মিছিলে মিছিলে ঝাঁঝাল স্লোগানে উচ্চকিত ছিল সারাদেশ। প্রধান স্লোগান ছিল- ‘বীর বাঙালি অস্ত্র ধরো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো’, ‘তোমার আমার ঠিকানা, পদ্মা-মেঘনা-যমুনা’, ‘তোমার দেশ আমার দেশ, বাংলাদেশ বাংলাদেশ’।

একাত্তরের উত্তাল এই দিনটিতে সারাদেশের সকল পাড়া, গ্রাম, মহল্লায় সংগ্রাম কমিটির পাশাপাশি শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি এবং স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠনের আহ্বান জানানো হয়। এর উদ্যোক্তা ছিল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) । এ ছাড়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তৎকালীন ইকবাল হলের (বর্তমান সার্জেন্ট জহুরুল হক হল) ক্যান্টিনে স্থাপন করা হয় ছাত্রদের যোগাযোগ কেন্দ্র।

বিজ্ঞাপন

এইদিন খুলনায় বাঙালি-অবাঙালিদের মাঝে সংঘর্ষ হয়। হরতাল চলাকালে খুলনায় সেনাবাহিনীর গুলিতে ছয় জন শহিদ হন।

পূর্ব পাকিস্তান মহিলা পরিষদের নেত্রী কবি সুফিয়া কামাল ও মালেকা বেগম যৌথ বিবৃতিতে ৬ মার্চ বায়তুল মোকাররম এলাকায় প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনের আহবান জানান।

এই দিনে ‘রেডিও পাকিস্তান ঢাকা’র নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় ‘ঢাকা বেতার কেন্দ্র’। সে দিনের সেই ঘটনা চলমান আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ করে। বেতার-টেলিভিশন শিল্পীরা ঘোষণা করেন, যতদিন পর্যন্ত দেশের জনগণ ও ছাত্রসমাজ সংগ্রামে লিপ্ত থাকবেন ততদিন ‘বেতার ও টেলিভিশন অনুষ্ঠানে তারা অংশ নেবেন না’।

সবার অপেক্ষা ছিল, ৭ মার্চ কী ঘোষণা আসতে পারে। পাকস্তানি সামরিক জান্তারাও অপেক্ষায়- কী ঘটতে পারে ৭ মার্চ?

[তথ্য সংগ্রহ: মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর, স্বাধীনতার দলিল, “১৯৭১ ও মুক্তিযুদ্ধ” এবং “মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস” বইয়ের পাতা থেকে]

সারাবাংলা/এফএন/পিটিএম

৪ মার্চ ১৯৭১ ঢাকা বেতার কেন্দ্র রেডিও পাকিস্তান ঢাকা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর