‘খালেদা জিয়া আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক ভালো আছেন’

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। ফাইল ছবি

ঢাকা: বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক ভালো আছেন বলে জানিয়েছেন তার ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।

সোমবার (৩ মার্চ) সন্ধ্যায় পূর্ব লন্ডনের একটি হলে জিয়া পরিষদ আয়োজিত ইফতার মাহফিল শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ তথ্য জানান।

ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘‘খালেদা জিয়া আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক ভালো আছেন। তাকে চিকিৎসকেরা বাসায় গিয়ে নিয়মিত চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন। তিনি দেশবাসীকে পবিত্র রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।’’

এর আগে, ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘‘ভবিষ্যৎ সুন্দর করতে চাইলে বইয়ে-কিতাবে (সংবিধানে) যা লেখা আছে, সেটি বাস্তবায়ন করতে হবে। অমুককে আসতে দেবেন না, তমুককে দেখলে দৌড়ে গলা চেপে ধরবেন— এভাবে দেশ চলে না। দেশ চলতে হবে আইনানুগ সুশাসনের মাধ্যমে। কোনো অবস্থাতেই ভাববেন না আপনার ইচ্ছার প্রতিফলনেই বাংলাদেশ চলবে। বাংলাদেশ চলবে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন আর সংবিধান আলোকে।’’

জিয়া পরিষদ আয়োজিত ইফতার মাহফিল শেষে সাংবাদিকদের বিএনপি চেয়ারপারসনের ব্যক্তিগত চিকিৎসক ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন।

ডা. জাহিদ বলেন, ‘‘১৯৭১ সালে শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়ে রণাঙ্গনে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছেন। কিন্তু তিনি তো ১৬ ডিসেম্বর বলেননি, আমরা যেভাবে বলব সেটাই সরকার। তিনি ডিসিপ্লিন মানুষ ছিলেন, ব্যারাকে ফেরত গিয়েছিলেন। ৭০-এর গণপরিষদের নির্বাচিত সদস্য যারা ছিলেন তারাই গণপরিষদ গঠন করেছিলেন। ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনে যখন এরশাদের পতন হল, তখন তো ছাত্রনেতারা বলেননি, আন্দোলন করে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছি, সুতরাং আমরা যা বলব তাই হবে। তখন যেই সংবিধান ছিল, সেই সংবিধানের আলোকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার শাহাবাউদ্দিন আহমেদ দায়িত্বগ্রহণ করেছিলেন।’’

তিনি বলেন, ‘‘৫২-কে যেমন অস্বীকার করা যাবে না, ৬২-কে অস্বীকার করতে পারবেন না, ৬৯-এর গণঅভ্যুত্থানকে ভুলতে পারবেন না, ৭১-এর মহান মুক্তিযুদ্ধকে অবমুল্যায়ন করতে পারবেন না, ৭৫-এর ৭ নভেম্বরকে অস্বীকার করতে পারবেন না, ৯০-এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনকে অপমান করতে পারবেন না, ঠিক তেমনিভাবে ২৪-এর আন্দোলনকেও অসম্মান করতে পারবেন না।’’

ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বলেন, ‘‘দেশ একটি ধারাবাহিক কার্যক্রম। যদি এই ধারাবাহিকতা ধরে রাখতে পারেন তাহলে আগামীর ভবিষ্যৎ আপনাকে সম্মান করবে। কাজেই অতীত থেকে শিক্ষা নিন, বর্তমানে ভালো আচরণ করুণ। আগামীর ভবিষ্যৎ সুন্দর হবে।’’

তিনি বলেন, ‘‘অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থই হচ্ছে তারা নির্ধারিত কিছু সময় নিয়ে, নির্ধারিত কিছু দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে। মনে রাখতে হবে, স্বৈরাচার, স্বৈরাচারের দোসররা যে নিষ্ঠুরতা ও হত্যাকাণ্ড চালিয়েছে, লুণ্ঠন করেছে তাদের বিচার যাতে এই বাংলার মাটিতে করা যায় এবং তাদের লুষ্ঠিত সম্পদ যাতে বাংলাদেশে ফেরত আনা যায় সেই ব্যবস্থা নিশ্চিত করার জন্য দরকার একটি শক্তিশালী সরকার।’’

সংগঠনের যুক্তরাজ্য শাখা সভাপতি প্রফেসর ড. সাইফুল আলম চৌধুরীর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক, যুক্তরাজ্য বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কয়ছর এম আহমেদ, বিশিষ্ট চলচ্চিত্র নির্মাতা জোবায়ের বাবু, জিয়া পরিষদ ইউকের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম প্রমুখ।

সারাবাংলা/এজেড/ইআ

খালেদা জিয়া ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন বিএনপি